top ad image
top ad image
home iconarrow iconফিচার

বিজ্ঞান

মানকচুর কথা

মানকচুর কথা
মানকচু

বাংলাদেশের কচুগুলোর ভেতর এর আলাদা একটা কদর আছে, সেটা এর বিশাল আকারের জন্য।

আর কোনো কচুগাছ এতো বড় আর এত মোটা হয় বলে আমার জানা নেই। আর অন্য জাতের কচুর সাথে এর তুলনা করতে গেলে লিলিপুট আর গালিভারের কথা মনে পড়ে যাবে আগে।

মানকচু সকলসহা, তাই সবকালে সবখানে বেড়ে উঠতে পারে। মানে বারোমাসি উদ্ভিদ আর কি। শুকনো খটখটে মাটিতে যেমন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, তেমনি ভেজা কিংবা ছায়াযুক্ত মাটিতে এদের অবাধ বংশবিস্তারেও বাধা নেই। তবে স্থানভেদে এদের স্বাদের তারতম্য হয়। ছায়াযুক্ত কিংবা ভেজা মাটিতে যেসব কচু বেড়ে ওঠে সেগুলো খেলে গালচুলকানো সম্ভবনা অনেক বেশি। অন্যদিকে শুকনো-উর্বর মাটির কচুতে গাল ধরার সম্ভবনা খুবই কম।

মানকচু গাছ স্থানভেদে ০.৫ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। ছায়াযুক্ত, অনুর্বর ও আর্দ্র মাটির কচুগাছ খুব বেশি লম্বা লম্বা হয় না। শুকনো-উর্বর মাটির গাছ বেশ লম্বা হয়। তাছাড়া কাল ভেদেও মানকচুর উচ্চতা ভিন্ন হয়। সাধারণত বর্ষাকালে মানকচুর উচ্চতা সর্বোচ্চ হয়। গ্রীষ্ম ও শীতকালে মানকচুর উচ্চতা সবচেয়ে কম হয়। মানকচু বহুবর্ষজীবি উদ্ভিদ।

মানকচু ঘাসজাতীয় উদ্ভিদ। এর আলাদা কোনো কাণ্ড নেই--মূলের যে অংশটুকু মাটির ওপরে থাকে সেই অংশটাকে এর কাণ্ড বললে বোধকরি খুব বেশি ভুল হবে না।

কাণ্ডসহ এর পুরো মূল ২-৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। মূলের বেড় ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে। মূলের মাটির ভেতরকার অংশের রং ধূসর, তবে কাতলে ভেতরটা সাদা। মাটির উপরকার অংশের রং সবুজ।

মানকচুর শাখা-প্রশাখা থাকে না, সরাসরি মূল বা কাণ্ড থেকে প্রথম পাতাটা বের হয়। প্রতিটা পাতার গোড়ার দিকটা বেশ ফোলা থাকে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে পাতার সেই ফোলা অংশ ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে জড়ানো নতুন পাতা।

মানকচুর পাতা বেশ বড়। বাংলাদেশে মানকচু পাতার চেয়ে বড় পাতা কেবল কলাগাছের। মানকচুর পাত উপবৃত্তাকার। গাছের উচ্চতানুযায়ী পাতা ৪ ইঞ্চি থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। প্রস্থ সর্বোচ্চ ২ ফুট পর্যন্ত হতে পারে।

পাতার বোঁটা ৪ ফুট পর্যন্ত লম্বা আর ৬ ইঞ্চি মোটা হতে পারে। পাতা সরল। পাতার বোঁটার দিকটা দুই ভাগে বিভক্ত। পাতা বোঁত বেশ নরম এবং একেবারে মসৃণ। পাতার রং গাঢ় সবুজ, কচিপাতার রং হালকা সবুজ।

পাতা শুকিয়ে ঝরে যায় না, বরং পাতায় প্রচুর পানি থাকে বলে বয়স্ক পাতা পচে-গলে কাণ্ড থেকে খসে পড়ে।

মানকচুর ফুল-ফল হয় না। সাধারণত অঙ্গজ প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটে। কচুর মূল থেকে সরাসরি নতুন চারা জন্মে। তাই একটা গাছ কোথাও জন্মলে কয়েক মাসের মধ্যে সেখানে বহু নতুন চারা জন্মে মানকচুর ঘন ঝাড় তৈরি করে ফেলে।

মানকচুর ইংরেজি নাম Giant Taro. বৈজ্ঞানিক নাম: Alocasia macrorrhiza.

r1 ad
r1 ad