মাহমুদুল হাসান উৎস
নৌযানের ইতিহাস আদ্যকালের। যুগ বদলেছে, প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। এসেছে কতশত যানবাহন, কিন্তু আজও নৌকা বা নৌযানের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। তাই জানতে ইচ্ছে করে ঠিক কোন সময়ে নোযানের ব্যবহার শুরু হয়েছিল?
সেই প্রাচীনকাল থেকে মানব ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে গেছে নৌকার ইতিহাস। নৌকার উৎপত্তি কোথায় এবং কীভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে নানা মত আছে। যাতায়াতের প্রয়োজনে মূলত স্থলপথের চেয়ে জলপথকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল আদিম মানুষরা। স্থলপথে নানান বাধা-বিপত্তি থাকায় জলপথে চলাচল করাটা ছিল বেশ সহজ। যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা এবং মালামাল বহনের সহজ উপায় খুঁজতে গিয়েই নৌকা তৈরি করেছিল আমাদের পূর্বপুরুষরা।
ধারণা করা হয়, প্রায় ৪০ হাজার বছর পূর্বে অস্ট্রেলিয়ার মানুষেরা নৌকার ব্যবহার শুরু করেছিল। তবে বিশ্বের প্রাচীনতম পুনরুদ্ধারকৃত নৌকা পাওয়া যায় নেদারল্যান্ডস, যার নাম পেস ক্যানো। খ্রিষ্টপূর্ব ৮,২০০ থেকে ৭,৬০০ সালের মধ্যে এই নৌকাটি তৈরি করা হয়েছিল।
এটি তৈরি পিনাস সিলেভেস্ট্রিসের ফাঁকা গাছের কাণ্ড দিয়ে। বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের অ্যাসেনের ড্রেন্টস জাদুঘরে এই ক্যানো রাখা আছে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকার ইতিহাসও অনেক প্রাচীন। বর্তমানে আমাদের নদ-নদী, খাল-বিলের নাব্যতার সঙ্গে বিলুপ্ত হচ্ছে নৌকাও।
পাল তোলা সারি সারি নৌকার নৈসর্গিক দৃশ্য যেন আজ স্বপ্নের মতো।
এখন আর পাল তোলা নৌকার তেমন দেখা মেলে না। বর্ষাকাল এলে নদীতে যেটুকু সময়ে পানি থাকে, বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে, তখন কিছু নৌকা দেখা যায়। হাতেগোনা দু-একটা চোখে পড়লেও তাদের নৌকায় আগের মতো আর মানুষ ওঠে না। কিন্তু নৌকার ইতিহাস কিংবা ঐতিহ্য ম্লান হয়নি।
নৌকা নিয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে প্রচলিত আছে অনেক গান। যেমন—‘পাল তোলা ওই নায়ের মাঝি। ভাটিয়ালি গায়/ ঘোমটা পরা গায়ের বধূ। শ্বশুরবাড়ি যায়। ও মাঝি ভাই ও মাঝি ভাই/ কোন সে গাঁয়ে যাও/রূপগঞ্জে মামার বাড়ি আমায় নিয়ে যাও/আষাঢ় মাসে ভাসা পানি/পুবালি বাতাসে বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি/আমারনি কেউ আসে…।
প্রাচীন বাংলার অন্যতম কেন্দ্র চন্দ্রকেতু গড়। এই চন্দ্রকেতু গড়ে বেশ কিছু পোড়ামাটির সিলে নৌকার ছবি আছে। সেখানে পাওয়া গেছে দুই ধরনের নৌকা। একটা হলো ‘এপ্য’ বা ‘এপগ্গ’, অন্যটি ‘জলধিসক্ল’ (জলধিশত্রু)। জলধিশত্রু ছিল যুদ্ধজাহাজ।
খ্রিষ্টাব্দের প্রথম শতকের পেরি প্লাসের বিবরণীতেও এপ্পগ নামের জলযানের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। মনসামঙ্গল ও চণ্ডিমঙ্গলেও বাংলা অঞ্চলে নদীপথ ও সমুদ্রপথে চলাচলে উপযোগী দাড়-টানা পণ্যবাহী জলযান নৌকা বা ডিঙ্গার কথা জানা যায়।
কবি মুকুন্দ রায় আর চণ্ডিমঙ্গলে ‘জঙ্গ’ নামের এক ধরনের বাণিজ্যিক জাহাজের কথা লিখেছিলেন। এখনো বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জামালপুর শেরপুর এলাকায় ‘ঝঙ্গ’ নামের এক ধরনের নৌকা দেখা যায়, যা এই প্রাচীন জঙ্গেরই উত্তরসূরি। ১৫ শতকের শেষের দিকের কবি বিপ্রদাস পিপলয় এবং মুকুন্দ রায়ের বর্ণনায় ওঠে এসেছে নানান নৌকা।
সেসবের নাম ছিল— নরেশ্বর, সর্বজয়া, সুমঙ্গল, নবরত্ন, চিত্ররেখা, শশীমঙ্গল, মধুকর, দুর্গাবর, গুয়ারেখি, শঙ্খচূড়। তবে এসব নৌকা কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে।
নৌযানের ইতিহাস আদ্যকালের। যুগ বদলেছে, প্রযুক্তি উন্নত হয়েছে। এসেছে কতশত যানবাহন, কিন্তু আজও নৌকা বা নৌযানের প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়নি। তাই জানতে ইচ্ছে করে ঠিক কোন সময়ে নোযানের ব্যবহার শুরু হয়েছিল?
সেই প্রাচীনকাল থেকে মানব ইতিহাসের সঙ্গে জুড়ে গেছে নৌকার ইতিহাস। নৌকার উৎপত্তি কোথায় এবং কীভাবে হয়েছিল, তা নিয়ে নানা মত আছে। যাতায়াতের প্রয়োজনে মূলত স্থলপথের চেয়ে জলপথকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল আদিম মানুষরা। স্থলপথে নানান বাধা-বিপত্তি থাকায় জলপথে চলাচল করাটা ছিল বেশ সহজ। যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তা এবং মালামাল বহনের সহজ উপায় খুঁজতে গিয়েই নৌকা তৈরি করেছিল আমাদের পূর্বপুরুষরা।
ধারণা করা হয়, প্রায় ৪০ হাজার বছর পূর্বে অস্ট্রেলিয়ার মানুষেরা নৌকার ব্যবহার শুরু করেছিল। তবে বিশ্বের প্রাচীনতম পুনরুদ্ধারকৃত নৌকা পাওয়া যায় নেদারল্যান্ডস, যার নাম পেস ক্যানো। খ্রিষ্টপূর্ব ৮,২০০ থেকে ৭,৬০০ সালের মধ্যে এই নৌকাটি তৈরি করা হয়েছিল।
এটি তৈরি পিনাস সিলেভেস্ট্রিসের ফাঁকা গাছের কাণ্ড দিয়ে। বর্তমানে নেদারল্যান্ডসের অ্যাসেনের ড্রেন্টস জাদুঘরে এই ক্যানো রাখা আছে।
নদীমাতৃক বাংলাদেশে নৌকার ইতিহাসও অনেক প্রাচীন। বর্তমানে আমাদের নদ-নদী, খাল-বিলের নাব্যতার সঙ্গে বিলুপ্ত হচ্ছে নৌকাও।
পাল তোলা সারি সারি নৌকার নৈসর্গিক দৃশ্য যেন আজ স্বপ্নের মতো।
এখন আর পাল তোলা নৌকার তেমন দেখা মেলে না। বর্ষাকাল এলে নদীতে যেটুকু সময়ে পানি থাকে, বিশেষ করে আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে, তখন কিছু নৌকা দেখা যায়। হাতেগোনা দু-একটা চোখে পড়লেও তাদের নৌকায় আগের মতো আর মানুষ ওঠে না। কিন্তু নৌকার ইতিহাস কিংবা ঐতিহ্য ম্লান হয়নি।
নৌকা নিয়ে বাংলা সাহিত্য-সংস্কৃতিতে প্রচলিত আছে অনেক গান। যেমন—‘পাল তোলা ওই নায়ের মাঝি। ভাটিয়ালি গায়/ ঘোমটা পরা গায়ের বধূ। শ্বশুরবাড়ি যায়। ও মাঝি ভাই ও মাঝি ভাই/ কোন সে গাঁয়ে যাও/রূপগঞ্জে মামার বাড়ি আমায় নিয়ে যাও/আষাঢ় মাসে ভাসা পানি/পুবালি বাতাসে বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি/আমারনি কেউ আসে…।
প্রাচীন বাংলার অন্যতম কেন্দ্র চন্দ্রকেতু গড়। এই চন্দ্রকেতু গড়ে বেশ কিছু পোড়ামাটির সিলে নৌকার ছবি আছে। সেখানে পাওয়া গেছে দুই ধরনের নৌকা। একটা হলো ‘এপ্য’ বা ‘এপগ্গ’, অন্যটি ‘জলধিসক্ল’ (জলধিশত্রু)। জলধিশত্রু ছিল যুদ্ধজাহাজ।
খ্রিষ্টাব্দের প্রথম শতকের পেরি প্লাসের বিবরণীতেও এপ্পগ নামের জলযানের কথা উল্লেখ পাওয়া যায়। মনসামঙ্গল ও চণ্ডিমঙ্গলেও বাংলা অঞ্চলে নদীপথ ও সমুদ্রপথে চলাচলে উপযোগী দাড়-টানা পণ্যবাহী জলযান নৌকা বা ডিঙ্গার কথা জানা যায়।
কবি মুকুন্দ রায় আর চণ্ডিমঙ্গলে ‘জঙ্গ’ নামের এক ধরনের বাণিজ্যিক জাহাজের কথা লিখেছিলেন। এখনো বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জামালপুর শেরপুর এলাকায় ‘ঝঙ্গ’ নামের এক ধরনের নৌকা দেখা যায়, যা এই প্রাচীন জঙ্গেরই উত্তরসূরি। ১৫ শতকের শেষের দিকের কবি বিপ্রদাস পিপলয় এবং মুকুন্দ রায়ের বর্ণনায় ওঠে এসেছে নানান নৌকা।
সেসবের নাম ছিল— নরেশ্বর, সর্বজয়া, সুমঙ্গল, নবরত্ন, চিত্ররেখা, শশীমঙ্গল, মধুকর, দুর্গাবর, গুয়ারেখি, শঙ্খচূড়। তবে এসব নৌকা কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে।
প্রাচীন কবি-গান থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, অতুল প্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে আধুনিক যুগের সলিল চৌধুরী, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, রুনা লায়লা কিংবা বর্তমান প্রজন্মের অনুপম রায়, শিলাজিৎ—সবাই বর্ষার রোমান্টিকতায় মজেছেন।
১ দিন আগেবর্ষায় চারদিকে জমে থাকে পানি। খোলা ড্রেন, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, ফুলদানি, এমনকি এসির নিচে রাখা কনডেনসড পানির বাটি—সবখানেই জন্ম নিতে পারে এডিস ইজিপটাই ও এডিস অ্যালবোপিক্টাস নামের মশা, যারা ডেঙ্গু ভাইরাস বহন করে।
১ দিন আগেদেশে এমন অব্যাহত বর্ষণের মধ্যেই পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশেও বন্যা হবে কি না। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এখনই বন্যার ঝুঁকি নেই।
১ দিন আগেরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর উপন্যাসে বর্ষাকে কখনো কাব্যিক আবহে তুলে ধরেছেন, কখনোবা ব্যবহার করেছেন মনোজাগতিক উত্তরণের প্রতীক হিসেবে।
২ দিন আগে