স্টারমারের সাক্ষাৎ না পাওয়া নিয়ে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ফাইল ছবি

সদ্যই যুক্তরাজ্যে সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার এই সফরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমারের সাক্ষাৎ না পাওয়ার বিষয়টি ছিল অন্যতম আলোচিত ইস্যু।

বিবিসির ‘দ্য ওয়ার্ল্ড টুনাইট’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হয়ে অধ্যাপক ইউনূস এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। বলেছেন, কোন কারণে স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ শেষ পর্যন্ত হয়নি, সেটি তিনি বুঝতে পারেননি। তবে এখন তিনি স্টারমারকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন।

ওই সফরকালেই বিবিসির সাংবাদিক রাজিনি বৈদ্যনাথকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিয়ের স্টারমারের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া প্রসঙ্গে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার (স্টারমার) সঙ্গে বৈঠক হলে আমরা খুব খুশি হতাম। সম্ভবত তিনি ব্যস্ত আছেন বা অন্য কিছু হতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু এটি আমার জন্য একটি দারুণ সুযোগ এনে দিয়েছে। আমি তাকে বাংলাদেশে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। তখন আমাদের হাতে সময় থাকবে এবং আমরা এখানে (বাংলাদেশে) কী ঘটেছিল, আমরা কী করতে চাইছি তা দেখাতে পারব এবং তিনি পরিস্থিতি বুঝতে পারবেন।

রাজিনি বৈদ্যনাথ জানতে চান, প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সমান পদমর্যাদার হলেও তার সাক্ষাৎ না পাওয়াটা প্রধান উপদেষ্টার জন্য কতটা হতাশার? চার দিন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করলেও এর মধ্যে স্টারমার সাক্ষাতের সময় বের করতে পারেননি— এ বিষয়েও জানতে চান বিবিসির সাংবাদিক।

জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি জানি না আমার হতাশ হওয়া উচিত, নাকি তার হতাশ হওয়া উচিত। সুযোগটা কোন কারণে হাতছাড়া হয়ে গেছে আমি জানি না। সে জন্যই আমি বলছি, বাংলাদেশে তার আসাটা একটা দারুণ সুযোগ হতে পারে, ধীরে-সুস্থে বাংলাদেশকে দেখার, অনুভব করার। এবং তা উপলব্ধি করার জন্য ভালো সুযোগ তৈরি হতে পারে যে বাংলাদেশ কীসের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

ডাউনিং স্ট্রিট কেন এ বৈঠকের আয়োজন করল না, তা নিয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিয়েছে কি না— এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমার মনে হয় না যে আমরা এ ধরনের কোনো ব্যাখ্যা পেয়েছি। সম্ভবত তিনি (স্টারমার) অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যস্ত।’

বিবিসিকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি ও ব্রিটিশ সংসদ সদস্য টিউলিপ সিদ্দিকের প্রসঙ্গও উঠে আসে। প্রধান উপদেষ্টার এ সফর সামনে রেখে টিউলিপ তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য চিঠি দিয়েও সাড়া পাননি।

এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘না, দেখা করব না। কারণ এটি একটি আইনি প্রক্রিয়া। আমি আইনি প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে চাই না। প্রক্রিয়াটি চলতে থাকুক।’

যুক্তরাজ্য সরকারের মন্ত্রীদের মানবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে তদন্ত করে তাকে খালাস দিয়েছে। টিউলিপ সিদ্দিকও দাবি করেছেন, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। এরপরও কেন দুদক এখনো তার বিরুদ্ধে তদন্ত করছে— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আদালতের বিষয়। আদালতের বিষয়ে আদলতই সিদ্ধান্ত নেবেন যে মামলাটির জন্য পর্যাপ্ত তথ্য উপাত্ত আছে কি না, নাকি এর প্রক্রিয়া চালু থাকবে, নাকি বাতিল করা হবে।’

এ বিষয়ে আরও প্রশ্ন করেছিলেন বিবিসির সাংবাদিক। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা গোটা বিষয়টিকেই আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাওয়ার পক্ষে অভিমত দিয়ে নিজের মতামত খুব একটা প্রকাশ করেননি। যথেষ্ট প্রমাণ থাকলে আইন অনুযায়ী প্রয়োজন হলে দুদক টিউলিপকে প্রত্যর্পণের জন্য আবেদন করতে পারে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টা।

বাংলাদেশ যুক্তরাজ্যের সাহায্যের শীর্ষ ১০টি সহায়তাপ্রাপ্ত দেশের একটি হলেও সম্প্রতি যুক্তরাজ্য বৈদেশিক সহায়তা নাটকীয়ভাবে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে বাংলাদেশের ওপর কী প্রভাব পড়তে পারে— এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের এই সংকটকালে কিছু সাহায্য পেলে খুব খুশি হব। কিন্তু তা না পেলেও আমরা আমাদের নিজস্ব আয় বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাব। এটা ধাক্কা হলেও জীবনের অংশ, যেখানে উত্থান-পতন চলতে থাকে। আজ সহায়তা কমেছে, পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে কাল বাড়বে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, পরিস্থিতি যাচাই করে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। যেমন— হঠাৎ আমরা শুনতে পেলাম, ইউএসএআইডি সহায়তা ১০০ শতাংশ বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দেখতে পাই, আমাদের দেশে অনেক বড় বড় ঘটনা ঘটছে, এর মধ্যে আছে আমাদের রোহিঙ্গা সমস্যা। অথচ তাদের জন্য বরাদ্দ সব অর্থ কেটে ফেলা হয়েছে। একেবারে শূন্য!

‘পুরো রোহিঙ্গা সমস্যা হঠাৎ আমাদের জন্য আরও প্রকট হয়ে উঠল। এত মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে, কিন্তু আমাদের এটি মোকাবিলা করতে হবে। সহয়তার অর্থ উধাও হয়ে যেতে পারে, কিন্তু রোহিঙ্গারা তো উধাও হয়নি,’— বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

'গণভোটে' দেশ গড়ার বিল্ডিং কোড তৈরি হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ বছরের নির্বাচন সেটা হলো সনাতন নির্বাচন। তার সঙ্গে আছে শতবর্ষের নির্বাচন (গণভোট), ওই যে বিল্ডিং কোডের কথা বললাম। এই দুই একত্রে, এটা মাহাত্ম্য, এটার গুরুত্ব অনেক অনেক বেশি। নতুন বাংলাদেশ জন্ম লাভ করবে এই নির্বাচনের মাধ্যমে। এই নির্বাচন আমাদের নতুন বাংলাদেশের দরজা খুলে দিবে।

৩ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়া হবে শুক্রবার

উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামীকাল শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা করতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এ উদ্দেশ্যে কাতার সরকারের আনুষ্ঠানিক অনুরোধে রয়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর সম্মতি দিয়েছে দেশটি। বৃহস্পতিবার বিএনপি সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

৩ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত: রিজভী

রিজভী বলেন, অসংখ্য নির্যাতনের মধ্যেও যার অটল মনোভাবকে দমানো যায়নি, তার নাম খালেদা জিয়া। তাকে নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে। দেশবাসী দোয়া করছেন, তিনি যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে মানুষের মাঝে ফিরে আসতে পারেন।

৪ ঘণ্টা আগে

সুখবর পেলেন বিএনপির আরও ২৪ নেতা

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতাদের মধ্যে রয়েছেন সাতক্ষীরা জেলাধীন ইশ্বরদীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল-ই-মোস্তফা টুটুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাধীন সরাইল উপজেলার অন্তর্গত অরুয়াইল ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. বাদল আহমেদ, পাবনা জেলাধীন আটঘরিয়া উপজেলার অন্তর্গত মাঝপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির

২০ ঘণ্টা আগে