top ad image
top ad image
home iconarrow iconঘরের রাজনীতি

আল্লাহ-রসুলের কটূক্তিকারীদের ‘কল্লা কাটা’র স্বাধীনতা চান এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী

আল্লাহ-রসুলের কটূক্তিকারীদের ‘কল্লা কাটা’র স্বাধীনতা চান এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী
শুক্রবার জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে তাওহিদি ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী। ছবি: ভিডিও থেকে

বাকস্বাধীনতার নামে যদি কেউ কোরআন-সুন্নাহর বিরোধী কথা বলে, আল্লাহ ও মহানবি মুহাম্মদ (সা.)-এর মর্যাদার বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদের শরিয়া আদালতে ফাঁসি দিয়ে সাজা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন মুফতি এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী।

তিনি বলেন, ‘আর মিছিল নয়, এবার শরিয়া আদালতে মুরতাদের শাস্তি ফাঁসি আমরা নিজ হাতে কার্যকর করব। আল্লাহ ও তার হাবিব (সা.)-এর বিরুদ্ধে বেয়াদবি করে যারা, নাস্তিকদের মধ্যে সেটা যদি বাকস্বাধীনতা হয়, তাদের কল্লা কেটে দেবো— এটা আমাদের হাতের স্বাধীনতা।’

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গোটে তাওহিদি ছাত্র-জনতার ব্যানারে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এ সময় এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী আরও বলেন, ‘কুখ্যাত রাখাল রাহা-গালিবকে (রাখাল রাহা ও সোহেল গালিব) গ্রেপ্তার করে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলাতে হবে। তাসলিমার (নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিন) কোনো বই বাংলাদেশে চলবে না। কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী, আল্লাহ ও তার আখেরি নবি মুহাম্মত (সা.)-এর আরশচুম্বি সম্মান-মর্যাদার বিরুদ্ধে যে কথা বলবে বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে, আমরা আমাদের হাতের স্বাধীনতা চালু করে দেবো। তখন আবার চরমপন্থা বলবেন না।’

ব্লাসফেমি আইনের দাবি জানিয়ে এনায়েতুল্লাহ বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির অন্যতম ছিল আল্লাহ ও শেষ নবি মুহাম্মদ (সা.)-এর সম্মান-মর্যাদার বিরুদ্ধে যারা কটূক্তি করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্লাসফেমি আইন করতে হবে। কিন্তু ভারত ও ইসরায়েলের দালাল শেখ হাসিনা সে দাবি মেনে নেননি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। স্বাধীন হয়েছে সলিমুল্লাহ খানদের মতো নাস্তিকের জন্য। স্বাধীন হয়েছে তসলিমা নাসরিনের উত্তরসূরীদের জন্য। আমরা স্বাধীনতা পাইনি। যে বাংলাদেশে আল্লাহ ও তার হাবিব মুহাম্মদ (সা.)-এর সম্মান-মর্যাদার বিরুদ্ধে বাকস্বাধীনতার দোহাই দিয়ে নাস্তিকরা যখন-তখন বেয়াদবি করে, তাদের শাস্তি যদি না হয়, আমরা মনে করি মুসলমানরা বাংলাদেশে এখনো পরাধীন।

আলেম-ওলামাদের নেতৃত্বে আরেকটি বিপ্লবের ডাক দিয়ে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন, সাতচল্লিশে (১৯৪৭ সাল) আমরা স্বাধীন হই নাই। একাত্তরে (১৯৭১ সাল) স্বাধীন হই নাই। ৫ আগস্ট স্বাধীন হই নাই। আরেকটা বিপ্লব হবে। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে হলেও বাংলাদেশের মুসলমান, আলেম-ওলামার নেতৃত্বে জাতীয় সংসদকে দখল করে নাস্তিকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করব ইনশাল্লাহ।

লেখক, গবেষক শাহরিয়ার কবির ও মুনতাসির মামুনকে নাস্তিক আখ্যা দিয়ে এনায়েতুল্লাহ বলেন, তারাসহ নাস্তিকদের প্রশ্রয় দেওয়ার কারণেই শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। এখন ইউনূস সরকার রাখাল রাহা, গালিব, ফরহাদ মাজহারকে প্রশ্রয় দিলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকেও বাংলাদেশ ছাড়তে হবে।

৫ আগস্ট গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে ক্ষমতার হস্তান্তর হয়নি উল্লেখ করে মুফতি এনায়েতুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্ট আপনারা দেশ দখল করেছেন গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে না, চরমপন্থায়। মুসলমানও চরমপন্থায় নামতে বাধ্য হবে। আমাদের কলিজায় রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রাখাল রাহা ও কুখ্যাত সোহেল গালিবের খুঁটির জোর কোথায়, জানতে চাই। সরকারের কাছে আমরা দাবি জানাই, রাখাল রাহা-গালিবকে গ্রেপ্তার করতে হবে, ফাঁসি দিতে হবে। এরপর আর দাবি নয়, অ্যাকশন হবে।

বায়তুল মোকাররমে বক্তব্যের পর সেখান থেকে একটি মিছিল পুরানা পল্টন, প্রেসক্লাব ঘুরে বায়তুল মোকাররমের পাশ দিয়ে শাপলা চত্বরে যায়। সেখানে আরেকটি সমাবেশ হয়। সমাবেশে ২০১৩ সালে দেওয়া হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবি মেনে নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেন, ‘সরকারকে বলছি, হেফাজতের ১৩ দফা মেনে নিতে হবে। নতুবা আরেকটা বিপ্লব হবে এবং সেটা হবে সশস্ত্র বিপ্লব।’

ইসলামি দলগুলোর উদ্দেশে এনায়েতুল্লাহ বলেন, ‘আমরা শুনতে চাই, ক্ষমতায় গেলে হেফাজতের ১৩ দফার অন্তত তিনটি দফা আপনারা পূরণ করবেন, তার ওয়াদা দিতে হবে। প্রথমে কুখ্যাত কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। নাস্তিকদের শায়েস্তা করতে ব্লাসফেমি আইন করতে হবে। ভারতের তাঁবেদারি চলবে না, যুক্তরাষ্ট্রের তাঁবেদারি করা যাবে না।’

সমাবেশে রাখাল রাহা ও সোহেল গালিবের শাস্তির দাবিসহ ‘তাওহিদি ছাত্র-জনতা’র পক্ষে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন ইসলামি লেখক ও গবেষক আহমদ রফিক। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— রাজনৈতিক মামলায় আটক ইসলামপন্থিদের নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে মিথ্যা মামলা বাতিল করতে হবে; বিভিন্ন বাহিনীর গুম-খুন-নির্যাতনের দায় স্বীকার করে সরকারকে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে; রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে ভুক্তভোগীদের পরিবার ও জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে; এ ছাড়া র‍্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন ও মুহিউদ্দিন ফারুকীসহ গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের শিকার সব পরিবারকে সরকারি তহবিল থেকে যথাযথ পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

r1 ad
r1 ad
top ad image