top ad image
top ad image
home iconarrow iconখবরাখবর

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের আহ্বান

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের আহ্বান
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফ্লিপ্পো গ্র‍্যান্ডি বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন। ছবু: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

মিয়ানমার থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

তিনি বলেন, আমরা যদি অনবরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে থাকি, সে ক্ষেত্রে মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ সরকার তাদের ফেরত নাও নিতে পারে। কিন্তু রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। তাই তাদের প্রত্যাবাসনের মূল দায়িত্বও তাদের। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তাই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারকে চাপ দেওয়া উচিত।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফ্লিপ্পো গ্র‍্যান্ডি বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করলে তিনি এ কথা বলেন।

সাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, রোহিঙ্গাদের কারণে সৃষ্ট নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমস্যা, বিভিন্ন দেশে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন কার্যক্রম, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএইডের আর্থিক সহায়তা বন্ধের ফলে উদ্ভূত সমস্যা মোকাবিলা, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পুনর্বাসনসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

হাইকমিশনারকে স্বাগত জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে ১৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে দীর্ঘদিন ধরে আশ্রয় দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ ঘনবসতিপূর্ণ দেশ হওয়ার কারণে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত অঞ্চলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা বেড়ে গেছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তার পাশাপাশি আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশ মানবিক ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি দেখানোয় উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, নিজ দেশ মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার ও বাস্তুচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। বর্তমানে মিয়ানমারের পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। তাছাড়া বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এখন আরাকান আর্মির দখলে রয়েছে। তাই এ মুহূর্তে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিরাপদ নয়। তবে এ বিষয়ে হাইকমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউএসএইডের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সহায়তা করা বন্ধ করে দেয়, সে ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের জন্য দাতা সংস্থা ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদের মাধ্যমে তহবিল জোগানের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনারকে অনুরোধ করছি।

এদিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন বিষয়ে জাতিসংঘের হাইকমিশনার বলেন, ভাসানচর পুনর্বাসনের জন্য অনুপযুক্ত নয়। তবে সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ কম। মাটি লবণাক্ত হওয়ায় সেখানে কৃষিকাজের সুযোগ সীমিত।

এ সময় উপদেষ্টা বলেন, দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীরা এগিয়ে এলে সেখানে অর্থনৈতিক কর্মচাঞ্চল্য তৈরি করা যাবে। তাছাড়া সেখানে গবাদিপশু লালন-পালন ও সংশ্লিষ্ট শিল্প বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাক্ষাতে ইউএনএইচসিআরের এশিয়া-প্যাসিফিক রিজিয়নাল ব্যুরোর পরিচালক হাই কিউং জুন, কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ সাম্বাল রিজভী, ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশ কার্যালয়ের সিনিয়র এক্সটার্নাল রিলেশনস অফিসার রোমেইল ডেসক্লোজসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

r1 ad
r1 ad
top ad image