জুলাই-আগস্টে ১৪ শতাধিক মানুষ নিহত হতে পারে: জাতিসংঘ

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪: ৩২
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভিন্ন ঘটনা খতিয়ে দেখতে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আন্দোলন চলাকালে এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। একই সময়ে আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচএসিএইচআর) এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে হতাহতের তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে, হতাহতদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ ছিল শিশু। বাংলাদেশ পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ৪৪ জন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সহিংসতা করেছে। তারা ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলনে পদ্ধতিগতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ছিল।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার আন্দোলন চলাকালে এমন একটি নীতি গ্রহণ করেছিল যার মাধ্যমে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী ও তাদের সমর্থকদের আক্রমণ করা হয়েছে, সহিংসভাবে দমন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এগুলোকে মানবতাবিরোধী অপরাধ অভিহিত করে জাতিসংঘ বলছে, এসব অভিযোগের অধিকতর ফৌজদারি তদন্ত প্রয়োজন।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, এই নৃশংস প্রতিক্রিয়া ছিল সাবেক সরকারের একটি পরিকল্পিত ও সমন্বিত কৌশল, যা জনতার বিরোধিতার মুখে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে চেয়েছিল।

তিনি বলেন, বিক্ষোভ দমন করার কৌশলের অংশ হিসেবে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে এবং তাদের সমন্বয় ও নির্দেশনায় শত শত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক পরিসরে নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক এবং নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে।

ভলকার তুর্ক আরও বলেন, আমরা যে সাক্ষ্য ও প্রমাণ সংগ্রহ করেছি তা ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সহিংসতা এবং লক্ষ্যভিত্তিক হত্যাকাণ্ডের (টার্গেটেড কিলিং) এক উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং যা আন্তর্জাতিক অপরাধের আওতায় পড়তে পারে। এ পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ও ভবিষ্যতের জন্য দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচার অপরিহার্য।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে একটি দল পাঠায়। ওই দলে ছিলেন মানবাধিকার অনুসন্ধানকারী, একজন ফরেনসিক চিকিৎসক ও একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞ।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় বলছে, মরণঘাতী ঘটনাগুলোর বিষয়ে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তথ্য অনুসন্ধান পরিচালনা করে দলটি। অন্তর্বর্তী সরকার এই তদন্তে ব্যাপক সহযোগিতা করেছে। তদন্ত দলকে বিভিন্ন স্থানে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া ছাড়াও সরকার প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করেছে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

অসৎ মোতাওয়াল্লীদের ভালো হতে বললেন ধর্ম উপদেষ্টা

ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন আরও বলেন, ওয়াকফ যারা করে গেছেন তাদের উদ্দেশ্য ছিল অত্যন্ত মহৎ। কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, মানুষের সেবা, জনকল্যাণ ও পারলৌকিক মুক্তির জন্যই ওয়াকিফরা তাদের মূল্যবান সম্পত্তি ওয়াকফ করে গেছেন।

২ ঘণ্টা আগে

নির্বাচনের আগে সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের সাহায্য সহযোগিতা চাই। আপনারা সত্য সংবাদ প্রকাশ করলে কেউ কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারবে না। আজকাল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে যে চলে গেছে (মৃত ব্যক্তি), তারও ছবি দিয়ে জীবিত বানিয়ে ফেলছে। আপনাদের প্রতি অনুরোধ সত্য সংবাদটা প্রকাশ করবেন।

৪ ঘণ্টা আগে

ট্রমা কাটেনি মাইলস্টোন শিক্ষার্থীদের, চলতি সপ্তাহেও ক্লাস বন্ধ

দিয়াবাড়ির ইংলিশ শাখার অধ্যক্ষ ক্যাপ্টেন (অব.) জাহাঙ্গীর আলম খান জানান, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্ত কমিটি কাজ করছে। শিক্ষার্থীদের ট্রমা এখনো কাটেনি। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় রেখে আপাতত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। ক্যাম্পাসে তিনজন পেশাদার কাউন্সেলর নিয়োজিত রয়েছেন। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা ত

৫ ঘণ্টা আগে

আমরা থাকতে অভ্যুত্থানের খুনিদের এ দেশে ঠাঁই নেই: প্রেস সচিব

জুলাই বিপ্লবের শহীদ ফারহান ফাইয়াজসহ সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আমরা থাকতে অভ্যুত্থানের খুনিদের এ দেশে জায়গা নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই এই হত্যার বিচার হবে বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

৫ ঘণ্টা আগে