টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষায় আদেশ জারি

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
টাঙ্গুয়ার হাওর। ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স

অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন ও নৌ চলাচলের পাশাপাশি অবৈধ বালু উত্তোলন, নিষিদ্ধ চায়না জালের ব্যবহার, জলজ বন ধ্বংস, অতিরিক্ত বালাইনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যবহার এবং বর্জ্য নিঃসরণ মোকাবিলাসহ পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় ‘টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওর সুরক্ষা আদেশ’ জারি করেছে সরকার।

পাখি শিকার, গাছ কাটা ও ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনে নিষেধাজ্ঞাসহ আরও নানা বিধিনিষেধ যুক্ত করা হয়েছে এ আদেশে। নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে হাওরে পর্যটক নিয়ে ভ্রমণ করা হাউজবোটের আকার ও যাত্রীর সংখ্যা। শিক্ষা সফর বা বিদেশি পর্যটকের ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ পানি আইন, ২০১৩-এর ধারা ২২ ও ২৭ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে এই সুরক্ষা আদেশ জারি করা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, এ আদেশ প্রতিপালন করা বাধ্যতামূলক এবং এর লঙ্ঘন দণ্ডনীয় অপরাধ।

আদেশে টাঙ্গুয়ার ও হাকালুকি হাওরের জন্য প্রতিপালনীয় নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে— হাওর অঞ্চলের পাখি, পরিযায়ী পাখি শিকার, পরিযায়ী পাখি সমৃদ্ধ অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে হাঁস পালন, গাছ কাটা ও হাওরের জলজ বনের কোনো ধরনের ক্ষতিসাধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। হাওরের জলজ গাছের (হিজল, করচ ইত্যাদি) ডাল কেটে ঘের নির্মাণ বা মাছের আশ্রয়ের কাঁটা হিসেবে ব্যবহারও নিষিদ্ধ।

আদেশে বলা হয়েছে, পর্যটক ও হাউজবোট অভয়াশ্রম বা সংরক্ষিতঘোষিত এলাকাসহ জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর বা হাওর অধিদপ্তরের চিহ্নিত হাওরের সংবেদনশীল এলাকায় (যেমন— পাখি বা মাছসহ জলজ প্রাণীর আবাসস্থল, প্রজনন কেন্দ্র বা বন্য প্রাণীর চলাচলের স্থান) প্রবেশ করতে পারবে না।

সরকারের অনুমতি ছাড়া হাওর দুটি ও এদের ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন কর যাবে না এবং পরিবশগত ও সামাজিক প্রভাব নিরূপণ সাপেক্ষে সরকারের অনুমতি ছাড়া হাওরের জলস্রোতের স্বাভবিক প্রবাহ বিঘ্নিত করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে আদেশে। বলা হয়েছে, হাওর এলাকায় ভূমি ও পানির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নষ্ট অথবা পরিবর্তন করতে পারে— এমন কাজ করা যাবে না, শিক্ষা সফর ও বিদেশি পর্যটক পরিবহনের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে।

অনুমোদনের শর্তের মধ্যে রয়েছে— যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত থাকতে হবে; কোনো হাউজবোট বা নৌ যান যাত্রী সংখ্যার বেশি যাত্রী পরিবহন করতে পারবে না, মাছ ধরার কোনো যন্ত্রও বহন করতে পারবে না। নির্ধারিত রুট ছাড়া নৌ যান চলাচল ও নোঙর করতে পারবে না।

শর্তের মধ্যে আরও বলা হয়েছে— দুযোগপূর্ণ আবহাওয়ায় পর্যটক পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। ঝড়, প্রবল বৃষ্টিপাত বা বজ্রপাতের আশঙ্কা থাকলে পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ট্যুর অপারেটর ও পর্যটকদের স্থানীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে, হাউজবোট ও নৌ যানে উচ্চস্বরে গান-বাজনা ও কোনো পার্টি আয়োজন করা যাবে না।

সুরক্ষা আদেশ বলছে, হাউজবোট ও নৌ যানের মালিক ও ট্যুর অপারেটররা তাদের পরিচালিত ট্যুরে শব্দ দূষণকরী অর্থাৎ উচ্চ আওয়াজ সৃষ্টিকারী ইঞ্জিন বা জেনারেটর ব্যবহারকে নিশ্চিতভাবে পরিহার করবে। হাউজবোট ও নৌ যানে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বহন করতে পারবে না।

এদিকে নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বা বৈদ্যুতিক শকের মাধ্যমে হাওরে মাছ শিকার; যথাযথ কর্তৃপক্ষে অনুমতি না নিয়েই হাওরে বালু, পাথর বা মাটি ইজারা প্রদান ও উত্তোলন; এবং শুষ্ক মৌসুমে হাওরের কোনো জলাধারের পানি সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করা যাবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে দুই হাওরের সুরক্ষা আদেশে।

আরও বা হয়েছে, ট্যুর অপারেটররা ১০০ ফুটের চেয়ে বেশি দৈর্ঘ্যের নৌ যান ও হাউজবোট পরিচালনা করতে পারবে না, হাওর এলাকা সংশ্লিষ্ট বসতবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তরল ও কঠিন বর্জ্য হাওরে নির্গমন করা যাবে না।

হাওর অঞ্চলে পাকা সড়ক নির্মাণ যথাসম্ভব পরিহার করতে বলা হয়েছে সুরক্ষা আদেশে। বলা হয়েছে, কেবল জরুরি বা বিশেষ প্রয়োজনে সড়ক নির্মাণের প্রয়োজন হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে এবং সরকার অনুমোদিত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরুর আগে অবশ্যই পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন এবং সামাজিক প্রভাব মূল্যায়ন সম্পাদন করতে হবে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা, আগুন

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রথমে শাহবাগ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে ছাত্র-জনতা। সেখান থেকে মিছিল নিয়ে রাত ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ একটি দল কারওয়ান বাজারে পৌঁছায়। তারা প্রথমে প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে প্রথম আলো কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। পরে গেট ভেঙে ভে

৯ ঘণ্টা আগে

হাদি হাদি স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ

এর কিছুক্ষণ পরই শাহবাগ মোড়ের দিকে জড়ো হতে থাকে ছাত্র-জনতা। সেখানে ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, ‘আমরা সবাই হাদি হব, গুলির মুখে কথা কব’, ‘জাহাঙ্গীরের গদিতে, আগুন জ্বালাও একসাথে’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা।

৯ ঘণ্টা আগে

হাদির হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ বিষয়ে কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখানো হবে না।

১১ ঘণ্টা আগে

ওসমান হাদির স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্ব নেবে সরকার

ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহিদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।

১১ ঘণ্টা আগে