ডাকসু প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণে’র হুমকিদাতার শাস্তি দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

ঢাবি প্রতিনিধি
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। ছবি: ফোকাস বাংলা

ডাকসু নির্বাচনের এক প্রার্থীকে ‘গণধর্ষণে’র হুমকি দেওয়া শিক্ষার্থীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। এ সময় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে একগুচ্ছ প্রস্তাব ও দাবি তুলে ধরেন শিক্ষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাহমিনা আক্তার ও মোশাহিদা সুলতানা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাইকোর্টে এক নারী প্রার্থীর রিট ঘিরে সেই প্রার্থীকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে গণধর্ষণের হুমকি দিয়েছে বলে জানা গেছে। হুমকিদাতা আলী হুসেনকে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।

এর আগে, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী এস এম ফরহাদের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করেছিলেন ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম।

ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ডাকসু নির্বাচনে দুই মাসের স্থগিতাদেশ দেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে চেম্বার আদালত সে স্থগিতাদেশকে স্থগিত করে দেন। এতে ডাকসু নির্বাচন আয়োজনে কোনো বাধা থাকে না।

ডাকসু নিয়ে হাইকোর্টের ওই আদেশের পর ফাহমিদাকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেন। তিনি শহিদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ফেসবুক পোস্টে আলী হুসেন লিখেছেন, ‘হাইকোর্টের বিপক্ষে এখন আন্দোলন না করে আগে একে গণধর্ষণের পদযাত্রা করা উচিত। কেউ এসব শব্দচয়ন দেখে সুশীল হইয়েন না। যে একে সাপোর্ট করবে ওপরের কথাটা তার জন্যও প্রযোজ্য।’

তার এ পোস্টের মাধ্যমে সরাসরি এক নারী শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় সোমবার রাতেই ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। অনলাইন-অফলাইনে ব্যাপক সমালোচনা হয়। আলী হুসেনকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কও তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করল।

এদিকে ডাকসু নির্বাচনের প্রচারে প্রার্থীরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন অভিযোগ করে শিক্ষক নেটওয়ার্কের লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, কোন বিধি লঙ্ঘনের জন্য নির্ধারিত শাস্তি কী, তা কোথাও উল্লেখ না থাকায় ঢালাওভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ সংক্রান্ত তথ্য জানানো হলেও কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

ডাকসু নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • ডাকসু নির্বাচনের জন্য মোট ভোটারের অনুপাতে যথেষ্টসংখ্যক বুথ নিশ্চিত করা;
  • ভোটদানের সময়সীমা বিকেল ৫টা পর্যন্ত বর্ধিত করা;
  • ভোট গণনার প্রক্রিয়াকে কার্যকর ও স্বচ্ছ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করা;
  • নির্বাচনি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি হিসেবে আচরণবিধি ও এর লঙ্ঘনসংক্রান্ত সব কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রহণ করা। সেগুলো যেন কোনো পক্ষের প্রতি বৈষম্যমূলক না হয়, তা নিশ্চিত করা;
  • নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় দায়িত্ব পালনের জন্য শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিযুক্ত করার ক্ষেত্রে যেন কোনো বৈষম্য না হয়, তা নিশ্চিত করা;
  • সাইবার বুলিং বন্ধ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া, বিশেষত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক সম্পর্কে অরুচিকর পোস্ট ও মন্তব্যসহকারে আক্রমণ করা হয়— এমন গ্রুপ বা পেজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া;
  • অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ভোটদানের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে নিরাপদে আগমন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী বাস ও ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানো;
  • সংবাদমাধ্যমকর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সংবাদ সংগ্রাহকদের আচরণবিধি মেনে চলার ব্যবস্থা নেওয়া; এবং
  • যৌন হয়রানিবিষয়ক যেকোনো ঘটনা সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা।
ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

৩ বাহিনীকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ

তিনি বলেন, গত ১৫ মাসে সেনাবাহিনীসহ সব বাহিনীর সদস্যরা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অত্যন্ত কঠোর পরিশ্রম করেছে। আসন্ন নির্বাচন যেন নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকে সেজন্যও তিন বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

১৭ ঘণ্টা আগে

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করতে যমুনায় ৩ বাহিনীর প্রধান

জানা যায়, এটি প্রধান উপদেষ্টার কল অন কোনো বৈঠক নয়। তিন বাহিনীর প্রধানরা নিজেরা আলোচনা করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যাচ্ছেন।

১৮ ঘণ্টা আগে

আমার লোক, তোমার লোক সংস্কৃতি থেকে দলগুলোকে বেরিয়ে আসার আহ্বান আইন উপদেষ্টার

আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমার লোক, তোমার লোক’- এই কালচার থেকে বিএনপি, জামায়াতসহ সব দলকেই বের হয়ে আসতে হবে। এনসিপি ও অন্যান্য ছোট দলগুলোও এই ব্যাধি থেকে মুক্ত নয়।’

১৯ ঘণ্টা আগে

'গত ১৬ বছরে দেশে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে'

শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, বিগত ১৫/১৬ বছর যাবৎ ইসলামের কথা বলার মতো কঠিন আরেকটি কাজ এই মাটিতে ছিল না। এজন্য জুলাই আন্দোলন আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে সেই দমন পীড়ন, বিশেষ করে আমাদের সমাজের তরুণদের মধ্যে দ্বীনের প্রতি আগ্রহকে আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং তাদের মধ্যে যে দ্বীনি আগ্রহ দ্বীনি চেতনা এটা আজ সৃষ্

১ দিন আগে