top ad image
top ad image
home iconarrow iconখবরাখবর

সরিয়ে দেওয়া হলো ডিবিপ্রধান রেজাউলকে

সরিয়ে দেওয়া হলো ডিবিপ্রধান রেজাউলকে

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিককে। ‘প্রশাসনিক প্রয়োজনে’ তাকে এ পদ থেকে সরিয়ে সদর দপ্তরে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। গত বছর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার পতনের পর সেপ্টেম্বরে তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

গত সপ্তাহে ডিবি মডেল মেঘনা আলমকে আটক করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কারাগারে পাঠালে সে ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও জানিয়েছেন, মেঘনা আলমের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল না।

এর মধ্যেই শনিবার (১২ এপ্রিল) ডিএমপি কমিশনারের দপ্তর রেজাউলকে ডিবি থেকে সরিয়ে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্তির আদেশ জারি করেছে। তবে এ আদেশের তথ্য জানাজানি হয়েছে আজ রোববার (১৩ এপ্রিল)।

ডিএমপি কমিশনার শেখ মোহাম্মদ সাজ্জাত আলীর সই করা আদেশে বলা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রশাসনিক প্রয়োজনে অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) রেজাউল করিম মল্লিককে ডিএমপি সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

১৭তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগ দেন রেজাউল করিম মল্লিক। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগসহ (সিআইডি) বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ডিবিপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।

এদিকে মডেল মেঘনা আলমকে গত বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় তাকে। সেখানে ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহ তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাকে ৩০ দিন কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেন।

মেঘনাকে আটকের কোনো কারণ জানায়নি ডিবি। আদালতের সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২ (এফ) ধারায় জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত করার জন্য এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ৩(১) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে মেঘনাকে ৩০ দিনের জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখার আদেশ দেওয়া হয়।

Meghna

মডেল-অভিনেত্রী মেঘনা আলম। ছবি: সংগৃহীত

এভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ না জানিয়ে মেঘনাকে আটকের ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। এ বিষয়ে পুলিশ কিছু না জানালেও রোববার সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ রয়েছে। তবে তাকে ডিবি যে প্রক্রিয়ায় আটক করেছে, তা যথাযথ হয়নি।

মডেল ও মিস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেঘনা আলম ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর মিস আর্থ বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যের বরাতে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক ফজলুল বারী জানান, সদ্য সাবেক ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দুহাইলানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেঘনার। স্ত্রী-সন্তানদের কথা গোপন রেখে রাষ্ট্রদূত মেঘনার সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। মেঘনা গত ২৫ মার্চ ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঈসার সঙ্গে তার বাগদান, বিয়ের তথ্যও জানান। এর পরপরই মেঘনা জানতে পারেন, রাষ্ট্রদূত ঈসা বিবাহিত, স্ত্রী-সন্তানের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। মেঘনা আলম পরে ঈসার স্ত্রীকেও বিষয়টি জানান।

এদিকে ‘সুন্দরী নারী’কে ব্যবহার করে ঈসা বিন ইউসুফ বিন ঈসা আল দুহাইলানের কাছ থেকে বড় অঙ্কের ‘অর্থ দাবির প্রতারণা’র এক মামলায় শনিবার মো. দেওয়ান সমির নামে এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন ঢাকা মহানগর হাকিম সারাহ্ ফারজানা হক। পুলিশ জানিয়েছে, ভাটারা থানার মামলার এই আসামি মেঘনা আলমের সহযোগী।

রিমান্ডের আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, গত ১০ এপ্রিল বসুন্ধরা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সুন্দরী মেয়েদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ‘ব্ল‍্যাকমেইল’ করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করার তথ্য জানা যায়। ওই দিন রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আসামি দেওয়ান সমিরকে সেখানে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, দেওয়ান সমির প্রতারক দলের সদস্য। চক্রটি সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে ‘প্রেমের ফাঁদে ফেলে’ ও অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে’ অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে।

রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে প্রতারক দলের সদস্যরা ঈসার সঙ্গে সখ্য তৈরি করে। একপর্যায়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করে ফাঁদে ফেলে তার কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করা হয়। দেওয়ান সমির এ টাকার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে ভয়ভীতি দেখান ও হুমকি দেন। ১০ এপ্রিল রাতে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনার ‘সত্যতা’ পাওয়া যায়।

r1 ad
top ad image