সংবিধানে সমাধান খুঁজছেন নেপালের রাষ্ট্রপতি, অন্তর্বর্তী নেতা বাছতে সেনাবাহিনীর বৈঠক

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
তরুণদের চলমান বিক্ষোভের একপর্যায়ে আগুন দেওয়া হয় নেপালের সংসদ ভবনে। ছবি: দ্য হিমালয়ান টাইমস

চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে বিদ্যমান ‘সাংবিধানিক কাঠামো’র মধ্যেই সমাধান খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন নেপালের রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পৌডেল। বলেছেন, আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার চেষ্টাও করছেন তিনি।

এদিকে সহিংস বিক্ষোভের মুখে ক্ষমতাসীন সরকারের পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বেছে নিতে ‘জেন জি’ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সেনাবাহিনী।

বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে নেপালের রাষ্ট্রপতি দেশে শান্তিশৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে তার প্রচেষ্টার কথা জানান।

বিবৃতিতে নেপালের রাষ্ট্রপতি পৌডেল বলেচন, আমি সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে দেশের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এবং দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আলোচনা করছি এবং সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।

এর মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানকে বেছে নিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠকের তথ্য জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজা রাম বাসনেত। রয়টার্সকে তিনি বলেন, প্রাথমিক আলোচনা চলমান আছে। আজও আলোচনা চলবে। আমরা ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।

প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মার ওলির পদত্যাগের কারণে নেতৃত্বশূন্য হয়ে যাওয়া নেপালে আপাতত সেনাবাহিনীই অস্থির পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

Nepal GenZ Protest Clash Fire Photo 11-09-2025 (3)

বিক্ষোভের মধ্যে সরকারি বিভিন্ন ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ছবি: দ্য হিমালয়ান টাইমস

এদিকে নেপালের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, আদালতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ফলে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নথি ও দলিলপত্র প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।

এক বিবৃতিতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ মান সিং রাউত বলেন, আন্দোলন-বিক্ষোভে আদালতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং আদালতের সরঞ্জামের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। নেপালের বিচারিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

চলমান পরিস্থিতিতেও সুপ্রিম কোর্টের কার্যক্রম যত দ্রুতসম্ভব পুনরায় চালু করার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রোববার থেকে সুপ্রিম কোর্ট হেবিয়াস কর্পাস আবেদন নিবন্ধন ও নিয়মিত শুনানি শুরু করবে।

নেপাল সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে প্রতিবাদে নেপালের তরুণরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ওই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ সরকারের দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বন্ধের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ শুরু করেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের ‘জেন-জি’দের এই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। সহিংসতায় ১৯ জন নিহত হলে প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পরে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগে বাধ্য হন। এরপর থেমে থেমে এখনো চলছে সংষর্ঘ-সংঘাত। নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৩৩ জন।

কাঠমান্ডু পোস্টের এক খবরে বলা হয়েছে, পরিস্থিতি আপাতত কিছুটা শান্ত রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী কাঠমান্ডুর জনশূন্য রাস্তাগুলোতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রায় সারা দিনের জন্য কাঠমান্ডু ও আশপাশের এলাকায় নিষেধাজ্ঞামূলক আদেশ বহাল থাকবে।

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন