জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিও না, এনসিপিকে গোলাম পরওয়ার

খুলনা ব্যুরো

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘তোমরা ছাত্রদের নতুন দল। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে পাল্লা দিতে গেলে তোমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে। জন্ম নিয়েই বাপের সঙ্গে পাল্লা দিও না।’

সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় সাতক্ষীরার তালায় ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠিত ছাত্র-যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রবিবার জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম যে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন, তার সমালোচনায় এসব কথা বলেন পরওয়ার।

ছাত্রদের দলের নেতা দুঃখজনক পোস্ট দিয়েছেন উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘তিনি বলেছেন জামায়াতে ইসলামী নাকি সংস্কার চায় না, জামায়াতে ইসলামী সংস্কার ও নতুন সংবিধান সংলাপে ভূমিকা রাখেনি। অথচ ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে ছয়টি সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে আমরাই প্রথম পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিয়েছি। তারা চাচ্ছেন আমরা যেন তাদের সমালোচনা করি—কিন্তু কেউ তো তাদের নামই নিচ্ছে না।’

সারা দেশের মানুষ এবার দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিতে প্রস্তুত আছে জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে যে ঢেউ শুরু হয়েছে, তা সারা বাংলাদেশে পৌঁছে দিতে হবে। জামায়াতে ইসলামী গুম, খুন, লুটপাট ও দুর্নীতিমুক্ত একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চায়।’

একটি পক্ষ জামায়াতের গণজোয়ার রুখে দিতে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘জামায়াত ঘের দখল করে না, জমি দখল করে না, বালু উত্তোলন করে না। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে দেশে বেকার থাকবে না। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দেশের বেকারত্ব দূর করা হবে। সৃষ্টিকর্তার বিধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হলে হিন্দু ও মুসলিম সবাই ভালো থাকবেন।’

বিএনপির সঙ্গে ২০ বছর সংসার করেছেন উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘এখন আলাদাভাবে ভোট করছে জামায়াতে ইসলামী। তাই বলে জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে ছিঁড়ে ফেলা কিংবা পোস্টারের ওপর পোস্টার মারা, এটা তো বন্ধুসুলভ কাজ হয় না। দেশের চারটি শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের মেধাবী ছেলেরা পরিবর্তন চায়, সেই বার্তা দিয়েছে। অথচ বিএনপি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুরে কথা বলছে।’

স্বাধীনতার ৫৪ বছরে তিনটি দল আওয়ামী লীগ ২১ বছর, বিএনপি ১৫ বছর আর জাতীয় পার্টি ৯ বছর ক্ষমতায় ছিল জানিয়ে গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘তারা দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারেনি। করেছে নিজেদের পরিবর্তন। ক্ষমতায় যায়নি শুধু জামায়াতে ইসলামী। এবার জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিয়ে পরীক্ষা করুন। এ কথা বলতে পারি, জামায়াত ঘুষ, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস করে না। দেশে দুর্নীতি ও লুটপাট থাকবে না। দেশের মানুষকে ভালো রাখবে।’

সমাবেশে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, ‘চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের ওপর আস্থা রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। অতীতে দেখা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা জয়লাভ করে, জাতীয় নির্বাচনেও তারা সফল হয়।’

তালা উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মফিদুল্লার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির শহিদুল ইসলাম, সেক্রেটারি আজিজুর রহমান, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সুজায়েত আলী, সাতক্ষীরা শহর শিবিরের সভাপতি আল মামুন, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি জুবায়ের হোসেন প্রমুখ।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

গোলাম পরওয়ারের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া এনসিপিতে

এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ফেসবুক স্ট্যাটাসে জামায়াতের তীব্র সমালোচনা করেছেন ‘তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও অতীত আচরণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মানচিত্র ও জাতীয় চেতনার পরিপন্থি’ হিসেবে। বলেছেন, জামায়াতের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।

১৭ ঘণ্টা আগে

জামায়াতের ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না: নাসীর

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জামায়াতের রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাদের রাজনৈতিক দর্শন ও অতীত আচরণ বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মানচিত্র ও জাতীয় চেতনার পরিপন্থি। তারা যতবার ইতিহাসের মঞ্চে ফিরে আসতে চেয়েছে, ততবারই জনগণের অন্তর থেকে প্রতিধ্বনি উঠেছে। এই দেশকে আর অন্ধকারে ফেরানো যাবে না।

১৯ ঘণ্টা আগে

জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি জরুরি : গোলাম পরওয়ার

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ইতিবাচক পরিবর্তনের দিকে এগোচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ছয়টি রাষ্ট্রীয় অঙ্গ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে আগামী সরকার স্বৈরতান্ত্রিক বা ফ্যাসিবাদী না হয়ে জনগণের জন্য কাজ করবে।’

১৯ ঘণ্টা আগে

নির্বাচন নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা করব: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ থাকা। নির্বাচন একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এখানে যিনি শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারবেন, সে রকম যোদ্ধাকেই আমরা বেছে নেব। এটা আমার হাতে থাকবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ করার জন্য যা কিছু প্রয়োজন আমরা করব।

১৯ ঘণ্টা আগে