শাসন পদ্ধতি হাসিনাকে দানব বানিয়েছে: জিএম কাদের

দেশের শাসন পদ্ধতিই পতন হওয়া সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের শাসন পদ্ধতি শেখ হাসিনাকে দানব বানিয়েছে।
আমাদের সংবিধান সরকারকে অসীম ক্ষমতা দেয়। এ কারণেই ভালো নির্বাচনে জনগণের নিরঙ্কুশ সমর্থন পেয়েও একটি রাজনৈতিক দল দানবে পরিণত হতে পারে। দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইনসভা, বিচার বিভাগের প্রায় শতভাগই সরকারপ্রধানের হাতে থাকে। কারও কাছেই সরকারের জবাবদিহি নেই। এ কারণেই বাংলাদেশের যে কোনো সরকারই দানবে পরিণত হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টির বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় পেশাজীবী পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিএম কাদের এ কথা বলেন। পরিষদের আহ্বায়ক ডা. মোস্তাফিজুর রহমান আকাশের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রাকিবুল হাসানের সঞ্চালনায় এ সভা হয়।
জিএম কাদের বলেন, আমাদের সন্তানরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে। তারা গুলির সামনে বুক পেতে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। এত হত্যা ও নির্যাতনের পরও আমাদের সন্তানরা আন্দোলন থেকে সরে যায়নি। আমাদের সন্তানদের আত্মত্যাগ বিফল হতে দেবো না। যে লক্ষ্য অর্জনে ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, সেই লক্ষ্য অর্জনে সবাইকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ আশা করছে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেবে। আমরা এই ভালো নির্বাচনের আগেই সংবিধানসহ সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কার চাই।
জাতীয় পার্টি শুরু থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিল দাবি করে জিএম কাদের বলেন, আন্দোলনের শুরুতেই ৩ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পক্ষে আমি জাতীয় সংসদে বক্তৃতা করেছি। সংসদে ও রাজপথে আমরা বলেছি, ছাত্রদের আন্দোলন অত্যন্ত যৌক্তিক। যখন সরকারের নির্দেশে ছাত্রদের ওপর গুলি চালানো হলো, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি। জীবন দেওয়া ছাত্রদের আমরা জাতির বীরমুক্তিসেনা বলে অভিহিত করেছি। সমন্বয়কদের যখন ডিবি অফিসে আটক করা হলো, আমরা তাদের মুক্তি দাবি করেছি। ছাত্রদের ওপর অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ করেছি। জাতীয় পার্টির যৌথসভা করে আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার নির্দেশে জাতীয় ছাত্রসমাজ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে রাজপথে ছিল। রংপুরে আমাদের ছেলেরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে মামলায় হয়রানি হয়েছে। রংপুরে আমাদের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে। রাজনীতিবিদ হিসেবে সর্বপ্রথম রংপুরে শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছি আমি। আবু সাঈদের পরিবারকে বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানিয়েছি। জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা সব সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে ছিল। জাতীয় পার্টি সবসময় জনগণের পক্ষের দল। ভবিষ্যতেও জনগণের পক্ষে জাতীয় পার্টির অবস্থান অব্যাহত থাকবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রফিকুল আলম সেলিম, জাহিদ হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ হান্নান।