ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১৯: ৩২
ছবি : সংগৃহীত

জনগণের রায় বাস্তবায়ন করতে হলে নির্বাচিত সরকার দরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, যেকোনো দল তাদের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হলে দরকার একটি জবাবদিহিমূলক সরকার, দরকার একটি নির্বাচিত সরকার। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে মনে হয় এরই মধ্যে টালবাহানা শুরু হয়েছে বা চলছে। কথিত অল্প সংস্কার আর বেশি সংস্কারের অভিনব আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের ভবিষ্যৎ।

বুধবার (২৮ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আবারও আমরা বলতে চাই, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তরুণ প্রজন্মের ভাইয়েরা ও দেশবাসী, আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করুন। কারা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে, কারা প্রতিনিধি হবে, সেটা জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে আপনারা নির্বাচিত করুন।

তারেক রহমান বলেন, এরই মধ্যে জনগণ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে সংস্কার নিয়ে সময় ক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্ভুক্তি সরকারের ভেতরে এবং বাইরে কারো কোনো ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের সময় আমরা দেখেছি তারা কীভাবে আদালতকে অবজ্ঞা করেছে এবং আদালতের রায়কে অবজ্ঞা করেছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, পলাতক স্বৈরাচারের পর এই সরকারের কাছে দেশের মানুষ আশা করেছিল আইনের প্রতি সম্মান থাকবে। আমরা দেখেছি, আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান না দেখিয়ে যারা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করেছে, সেই স্বৈরাচারের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা দেখছি।

সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না, যারা আদালতের নির্দেশকে অবজ্ঞা করে, তাদের কাছ থেকে আমরা কতটুকু সংস্কার আশা করতে পারি? পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে ব্যক্তির মানসিকতার সংস্কার অনেক বেশি জরুরি। নর্থ কোরিয়ার সংবিধানে লেখা রয়েছে ডেমোক্রেটিক পিপলস রিপাবলিক অব নর্থ কোরিয়া। সুতরাং কী লেখা আছে তার চেয়ে বেশি জরুরি, মেনে চলা। ইশরাকের ক্ষমতা গ্রহণ বা শপথ গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে আমরা আবারও স্বৈরাচারী মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পাচ্ছি।

নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান পুঁজি, এমনটি জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তাই তাদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে, জনগণের বিশ্বাস ও ভালোবাসা নষ্ট হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না। গণতন্ত্রের পক্ষের জনগণকে দয়া করে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। যদি আপনাদের কেউ রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকতে চান, তাহলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে জনগণের কাতারে আসুন। নির্বাচন করুন। ভবিষ্যতে যদি জনগণের সরকারের রায় পান, তাহলে সরকারের সঙ্গে যোগদান করুন।

গত দেড় দশকে ভোটার তালিকায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি নতুন ভোটার সংযুক্ত হয়েছেন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই নতুন ভোটাররা আজ পর্যন্ত একটি জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিয়ে পছন্দমত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করার সুযোগ পাননি। কথিত পলাতক স্বৈরাচারের কাছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা নির্বাচন কোনোটাই গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল না। সুতরাং সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের দৃশ্যমান প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

অতীতে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি তত্ত্বাবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। কিন্তু আজ আমরা দেখেছি ১০ মাস পার হয়ে গেল, অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করছে না। ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশের জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক-দায়বদ্ধমূলক একটি সরকার দ্রুত দেখতে চায়।

বিএনপি কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা জনগণের কাছে যান। তাদের প্রত্যাশা জানার চেষ্টা করুন। তাদের প্রত্যাশা বোঝার চেষ্টা করুন। জনগণের মন জয় করুন। কারণ জনগণই বিএনপির সব রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস।

বক্তব্য শেষে তিনি দেশবাসীর জন্য একটি স্লোগান তুলে ধরেন। স্লোগানটি হচ্ছে— ‘দিল্লি নয়, দিল্লি না; নয় অন্য কোনো দেশ; সবার আগে বাংলাদেশ’।

জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান এবং ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় তারুণ্যের সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বিএনপিকে যমুনায় আমন্ত্রণ প্রধান উপদেষ্টার

আলোচনার জন্য আগামী ২ জুন বিএনপিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীতে কৃষকদলের আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ এ তথ্য জানিয়েছেন।

৩ ঘণ্টা আগে

বিএনপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে যা বললেন হাসনাত

বিএনপি বা অন্য কোনো দলের সাথে আসন ভাগাভাগির সমঝোতার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

৫ ঘণ্টা আগে

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির বিবৃতি— ‘আজহারের খালাস ন্যায়বিচার নয়’

গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আপিল বিভাগের পুনর্বিবেচনার শুনানিতে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারকে সম্পূর্ণ নির্দোষ ঘোষণা দিয়ে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।’

৯ ঘণ্টা আগে

জাপান থেকে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা

চার দিনের জাপান সফর শেষে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (৩১ মে) জাপানের স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি রওনা হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার।

১০ ঘণ্টা আগে