ভারতে ইলিশ পাঠানোর কারণ জানালেন উপদেষ্টা

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আগে দেশের মানুষ ইলিশ খাবে তারপর রপ্তানি— এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন ফরিদা আখতার। কিন্তু ২১ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায় ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে তারা।

আর এই সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশের সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে কি বাংলাদেশের মানুষ আগে ইলিশ খাবে তারপর রপ্তানি হবে— এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো সরকার?

এ বিষয়ে উপদেষ্টা ফরিদা আফতার বলেন, যদি এমন হতো... আমরা বলতাম যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এখন যথেষ্ট উৎপাদন করছে বিধায় আমরা এখন রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, এরকম কি কোনো ঘোষণা আমরা দিয়েছি? এরকম ঘোষণা তো আমরা দেইনি। কাজেই আমাদের এটা সরে আসার বিষয় না। এটা হলো যে, বিশেষ অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেখানে আমরা কিভাবে বাধা দেবো? সরে আসা বললে এটা ভুল হবে। প্রথমত দেশের মানুষ খাবে, সে খাওয়ার পর্যায়ে আমরা এখনও কাজ করে যাচ্ছি। ওরা হয়তো একটু বেশি রিকোয়েস্ট করছে, সে কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হয়তো এটা করছে, সেটার সাথে আমাদের সম্পৃক্ততা নেই।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে— পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি কলকাতার মাছ আমদানিকারকদের চিঠি এবং বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো।

দুর্গাপূজায় পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশে চাহিদা থাকায় প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে কিছু ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। বিশেষ করে সেপ্টেম্বর অক্টোবরের মাঝামিাঝি সময়ে এ রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে যে পরিমাণ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয় প্রতিবছর সে পরিমাণ ইলিশ সরবরাহ হয় না বলে জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা।

ফরিদা আখতার বলেন, যেটা অনুমতি দিয়েছে আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত ততটুকু দিতে পারবে কি না.. গতবারের তথ্য থেকে দেখা যায় যে, গতবার ৩ হাজার ৯শ ৫০ মেট্রিক টন অনুমোদন দেওয়া হলেও ভারতে ইলিশ গেছে ৬৬৫ টন। মানে অনুমোদন দেওয়া আর অ্যাকচুয়্যাল দিতে পারা সেটার সাথে নাও মিলতে পারে।

এদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হবে এমন বিজ্ঞপ্তির পর চাঁদপুরের আড়তগুলোতে বেড়ে যায় ইলিশের দাম। পাশাপাশি কমে স্থানীয় পর্যায়ে ইলিশের সরবরাহ।

চাঁদপুরের খান এন্টারপ্রাইজের গিয়াস উদ্দিন খান বিপ্লব বলেন, ঘোষণা আসার পর সকালে যে ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬২-৬৩ হাজার টাকা মণ, ওই মাছটা এই ঘোষণা মৌখিকভাবে আসার সাথে সাথে আমাদের বাজারে একটা আওয়াজ হয়ে গেছে। যেখানে যার সম্পৃক্ততা থাকে আর কী। এটা আসার পর ১২-১টার পর ওই একই সাইজের মাছের রেট হয়ে গেল ৭০-৭২ হাজার টাকা। মানে কেজি প্রতি ২৫০ টাকা, মণ প্রতি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেড়ে গেল। এখন আমি গতকাল যে মাছের অর্ডারগুলো নিলাম আজকে ডেলিভারি দেওয়ার কথা, ২শ কেজি মাছ ডেলিভারি করার কথা, ৫০ কেজি মাছও ডেলিভারি করতে পারলাম না। আজকেই মনে করেন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লস হয়ে গেল।

হঠাৎ এমন দাম বেড়ে যাওয়ার সমলোচনা করে উপদেষ্টা বলেছেন, এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে মন্ত্রণালয়।

এদিকে এ বছর ইলিশ কম ধরা পড়ায় মৌসুমের শুরু থেকেই দাম বেশি ছিল ইলিশের। যেখানে ২০২৩ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ইলিশ আহরণ হয়েছে ৮১ হাজার ৮৭৬ মেট্রিক টন, একই সময়ে ২০২৪ সালে ইলিশ আহরণ হয়েছে ৫৬ হাজার ২৭৩ মেট্রিক টন।

ফরিদা আখতার বলেন, এটার একটা কারণ ওরা বলছে যে সময়ে মাছের পেটে ডিম আসে সেই সময়ে নাকি বৃষ্টি কম হয়েছে। এবং অনেক সময় নিম্নচাপ ছিল। এগুলো কিন্তু সব এফেক্ট ফেলে। প্রাকৃতিকভাবে হয়। এখানে কোনো কারিগরি চলে না। সেই জন্য এবার একটু প্রাকৃতিক কারণে আহরণ কম।

একদিকে এবার আহরণ কম আবার অল্প সময়ে নোটিশ বাংলাদেশ থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন। দুই মিলিয়ে এই মৌসুমেও ইলিশের দাম বাড়তি থাকবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

সূত্র:বিবিসি বাংলা।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

খালেদা জিয়ার হাতে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন। আগামীকাল শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।

১৪ ঘণ্টা আগে

রাকসুতে ভোট পড়েছে ৭০%, জালিয়াতির অভিযোগ ছাত্রদলের

ছাত্রশিবিরের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছে ছাত্রদল। এদিকে ক্যাম্পাস ঘিরে বিভিন্ন পয়েন্টে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দিনভর দেখা গেছে। তবে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

১৪ ঘণ্টা আগে

জুলাই সনদে বিএনপি সই করবে কি না— ফখরুল বললেন অপেক্ষা করুন

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে কি না, তা জানার জন্য অপেক্ষা করুন। বিএনপি যেগুলো বলেছে, বিএনপি যেসব নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেগুলো সনদে লিপিবদ্ধ করা হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

১৫ ঘণ্টা আগে

পিআর বাদ দিয়ে আসেন সঠিকভাবে নির্বাচনটা করি: মির্জা ফখরুল

তিনি বলেন, 'আমরা চাই আগামী নির্বাচনটা হোক, জনগণের ভোটে হোক। সবাই মিলে নির্বাচন করি, যারাই জিতবে তারা সরকার গঠন করুক। এরপর আলোচনা হোক দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমরা আর মারামারি চাই না, আর প্রাণ দিতে চাই না। বাচ্চাদেরও যেন প্রাণ দিতে না হয়।'

২০ ঘণ্টা আগে