শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনা-ইমরানসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

২০১৩ সালের ৫ মে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ‘গণহত্যা’ চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গঠিত গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকারসহ ৯ জনকে এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
গণহত্যার এই মামলার ৯ আসামির মধ্যে চারজন বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোসহ বাকি পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছিল প্রসিকিউশন।
বুধবার (১২ মার্চ) শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনাল দুটি আবেদনই মঞ্জুর করেছেন। পাশাপাশি আগামী ১২ মে এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় শেখ হাসিনা ও ইমরান এইচ সরকার ছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা হলেন— ঘটনার সময়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, ওই সময় পুলিশ প্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার ও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার বেনজীর আহমেদ।
এই মামলার বাকি যে চার আসামি কারাগারে রয়েছেন তারা হলেন— সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, সাবেক পুলিশ প্রধান এ কে এম শহিদুল হক, সাবেক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান ও পুলিশের সাবেক ডিআইজি মোল্যা নজরুল ইসলাম।
চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এ দিন ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন। পরে মিজানুল বলেন, শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনায় আরও অনেকের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা এখনই তাদের নাম প্রকাশ করছি না। তাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি।
ইমরান এইচ সরকারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়ে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল বলেন, শাপলা চত্বরে অভিযানের বিষয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান অংশ নিয়েছিলেন। গণহত্যায় তার সম্পৃক্ততার ব্যাপারে আমরা ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
তাজুল আরও বলেন, আমরা আদালতে বলেছি, শাপলা চত্বরে গণহত্যার পটভূমি তৈরি করেছিল গণজাগরণ মঞ্চ। শুধু তাই নয়, এই গণজাগরণ মঞ্চ বাংলাদেশের সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায়ের কৃষ্টি-কালচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। একই সঙ্গে হেফাজতের কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের সময় এই গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা সশরীরে অংশগ্রহণ করেছে বলে আমাদের তদন্ত সংস্থা তথ্য-প্রমাণ পেয়েছে।