বিজয় দিবসে প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ

মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেরণায় নবযাত্রা এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসের ৫৪তম বর্ষপূর্তিতে নতুন করে জাতীয় জীবনে সবাইকে ঐকবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের অনুপ্রেরণা ধারণ করে জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে নবযাত্রাকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মহান বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ উদ্বেগের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টা। ভাষণের শুরুতেই মহান মুক্তিযুদ্ধসহ স্বাধীনতার জন্য যুগ যুগ ধরে লড়াই-সংগ্রামে আত্মত্যাগ করা বীর যোদ্ধা ও শহিদদের স্মরণ করেন তিনি।

বিজয় দিবসে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানান প্রধান উপদেষ্টা। তাকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঘোষণা করা থেকে শুরু করে চিকিৎসাসহ তার সব প্রয়োজনে সরকারের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের তফসিল ঘোষণার পরদিনই ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানান অধ্যাপক ইউনূস। এ হামলাকে দেশের ওপরে হামলা ও গণতন্ত্রের অভিযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি দেশের অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার প্রত্যয়ও জানান তিনি।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট দেশের ভবিষ্যৎ পথরেখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। জনগণকেও ভোটে অংশ নিয়ে দেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান। কেউ ভোট ডাকাতি করতে চাইলে প্রতিহতও করতে বলেন।

ভাষণে প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের সুযোগ করে দিতে সরকারের সফল প্রয়াসের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাসহ নানা ধরনের অপরাধের বিচারকাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র সচিবালয় স্থাপনের কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, এখন থেকে আর রাজনৈতিক কোনো চাপ বা প্রভাবের মাধ্যমে বিচারিক স্বাধীনতা যাতে ব্যাহত না হয়, সে নিশ্চয়তাও আরও জোরদার হবে।

এবারের বিজয় দিবসকে জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হিসেবে নিতে চান উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক অনুপ্রেরণা ধারণ করে জনগণের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে, তা এগিয়ে নেওয়াই আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব।

‘আসুন, শতবর্ষের সংগ্রাম ও বহু কষ্টে অর্জিত স্বাধীনতাকে পূর্ণতা দিতে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলি। ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী ও লিঙ্গ পরিচয় নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাই শান্তি, সমৃদ্ধি ও গণতন্ত্রের পথে। আসুন, ন্যায়বিচার, গণতন্ত্র, মানবিকতা ও উন্নয়নের পথে একসঙ্গে এগিয়ে যাই,’— ভাষণে বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টার পূর্ণাঙ্গ ভাষণ পড়ুন এখানে—

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত, লাখো মানুষের অশ্রুসিক্ত বিদায়

জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং বিএনপি-জামায়াতসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা ও বিশিষ্টজনেরা।

৩ ঘণ্টা আগে

না ফেরার দেশে মুক্তিযুদ্ধের উপসেনাপতি এ কে খন্দকার

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মারা গেছেন এ কে খন্দকার। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর।

৩ ঘণ্টা আগে

হাদির জানাজায় অংশ নিতে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা জনসমুদ্র

প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসে জড়ো হচ্ছেন। দেশে আজ একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে, যার অংশ হিসেবে সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।

৪ ঘণ্টা আগে

ওসমান হাদির মরদেহ সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়, লাখো মানুষের ঢল

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গোসল শেষে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পৌঁছেছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির লাশ। এলাকায় লাখো মানুষের ঢল নেমেছে। জানাজার সময় যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষের উপস্থিতি ততই বাড়ছে।

৪ ঘণ্টা আগে