বিজ্ঞান

শৈশবের ধূসর স্মৃতি

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

শৈশবের মস্তিষ্ক পূর্ণাঙ্গভাবে বিকাশিত হয় না। এটা হতে হতে সময় লাগে। স্মৃতিগুলো তৈরি ও সংরক্ষণ করার জন্য মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশ যেমন হিপোক্যাম্পাস এবং প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের ভূমিকা থাকে। কিন্তু শৈশবে এই অংশগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করে না। ফলে অনেক স্মৃতি ঠিকমতো সংরক্ষিত হয় না এবং সময়ের সাথে সাথে বিবর্ণ হয়ে যায়।

মস্তিষ্কে নিউরনের মধ্যে সংযোগ তৈরি হয় স্মৃতি গঠনের জন্য। শিশুদের মস্তিষ্কে নিউরনের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে, কিন্তু এই সংযোগগুলো ততটা মজবুত হয় না। যখন আমরা বড় হই, এই সংযোগগুলো আরও মজবুত হয় এবং স্মৃতিগুলো আরও স্থায়ী হয়। শৈশবের স্মৃতিগুলো স্থায়ী না হওয়ার একটি কারণ এটি।

শিশুদের ভাষাগত দক্ষতা তুলনামূলকভাবে কম থাকে। অনেক স্মৃতি ভাষার মাধ্যমে গঠিত হয় এবং সংরক্ষিত হয়। যেহেতু শৈশবে ভাষাগত দক্ষতা কম থাকে, অনেক স্মৃতি ভাষার মাধ্যমে গঠিত না হওয়ায় সেই স্মৃতিগুলো স্থায়ী হয় না।

আবেগের সঙ্গে জড়িত স্মৃতিগুলো সাধারণত বেশি স্থায়ী হয়। শৈশবে আবেগের অভিব্যক্তি ও সংবেদনশীলতা কম থাকে, ফলে সেই সময়ের স্মৃতিগুলো অতটা স্থায়ী হয় না।

বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবেগনির্ভর স্মৃতিগুলো বেশি জোরালো হয় এবং সংরক্ষিত থাকে।

পুনরাবৃত্তি ও পুনরাবৃত্তিমূলক অভিজ্ঞতা স্মৃতিকে শক্তিশালী করে। শিশুরা সাধারণত নতুন নতুন অভিজ্ঞতা লাভ করে এবং সেই অভিজ্ঞতাগুলো খুব বেশি পুনরাবৃত্তি হয় না। ফলে সেই স্মৃতিগুলো ধীরে ধীরে বিবর্ণ হয়ে যায়।

মোদ্দা কথা, শৈশবের স্মৃতি বিবর্ণ হয়ে যাওয়ারপেছনে মস্তিষ্কের বিকাশ, নিউরনের সংযোগ, ভাষার বিকাশ, আবেগ ও পুনরাবৃত্তিমূলক অভিজ্ঞতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। যদিও শৈশবের অনেক স্মৃতি ধীরে ধীরে মুছে যায়, তবুও কিছু বিশেষ মুহূর্ত ও অনুভূতি আজীবন আমাদের সঙ্গে থেকে যায়, যা আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস

ad
ad

সাত-পাঁচ থেকে আরও পড়ুন

আকাশ থেকে নামল ‘উড়ন্ত যম’— পালিয়েও শেষ রক্ষা হলো না পাকিস্তানি বাহিনীর

পাকিস্তানি জেনারেলরা তাদের তথাকথিত ‘ফোর্ট্রেস ডিফেন্স’ বা দুর্গ রক্ষা কৌশলের ওপর যে অন্ধ বিশ্বাস রেখেছিল, তা তখন অন্ধের মতোই তাদের হোঁচট খাওয়াচ্ছিল। একদিকে বিশ্বরাজনীতির দাবার বোর্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সপ্তম নৌ বহর পাঠানোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধের উত্তাপ ছড়াচ্ছিল, অন্যদিকে বাংলার

৫ দিন আগে

বিনয়-বাদল-দীনেশ— অগ্নিযুগের ৩ বিপ্লবী

তিন যুবকের হাতে মোটেও সময় নেই। বেচারা সিম্পসন! আজীবন নিরীহ-নিরপরাধ ভারতীয়দের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে এসেছেন। এ জন্য কতকিছু চিন্তা করে নির্যাতনের উপায় বের করতে হয়েছে। সেই মানুষটি নিজের শেষ সময়ে বিন্দুমাত্র ভাবনার সময়ও পেলেন না। তার দিকে তাক করা তিনটি রিভলবার থেকে ছয়টি বুলেট সিম্পসনের শরীর ভেদ করে

৬ দিন আগে

মেঘনা পাড়ে মৃত্যুফাঁদ— রাও ফরমান আলীর পালানোর আকুতি

তবে এ দিনের সবচেয়ে বড় ‘নাটক’ মঞ্চস্থ হয়েছিল যুদ্ধের ময়দানে নয়, বরং ঢাকার শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে এবং নিউইয়র্কের জাতিসংঘের সদর দপ্তরে। খোদ পাকিস্তানি জেনারেল রাও ফরমান আলী রাওয়ালপিন্ডির অনুমতি ছাড়াই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে, ‘খেলা শেষ’।

৬ দিন আগে

‘বাঘ’ এখন বিড়াল: ৭ ডিসেম্বরেই কান্নায় ভেঙে পড়েন জেনারেল নিয়াজি!

ঢাকায় তখন এক ভিন্ন দৃশ্য। যে জেনারেল নিয়াজি দম্ভভরে বলতেন ‘বাংলার মানুষ আমাকে বাঘের মতো ভয় পায়’, সেই নিয়াজি এ দিনেই গভর্নর হাউজে বসে প্রথমবারের মতো কান্নায় ভেঙে পড়েন। ৭ ডিসেম্বর কেবল ভূখণ্ড জয়ের দিন ছিল না, এটি ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর অহংকারের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেওয়ার দিন।

৭ দিন আগে