গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী— খালেদা জিয়ার একজীবন

বিশেষ প্রতিনিধি, রাজনীতি ডটকম
আপডেট : ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২: ৪৭
খালেদা জিয়া [১৫ আগস্ট ১৯৪৫ - ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫]

ইতিহাস সবসময় মসৃণ পথে চলে না; ইতিহাস তৈরি হয় রক্ত, অশ্রু, ত্যাগ ও ইস্পাতকঠিন সংকল্প দিয়ে। বাংলাদেশের রাজনীতির মানচিত্রে খালেদা জিয়া এমনই এক নাম, যিনি কেবল একজন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নন, বরং তিনি একটি ‘মাইলফলক’। একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে বিশ্বমঞ্চে ‘আপসহীন নেত্রী’ হয়ে ওঠার গল্পটি কোনো সাধারণ জীবনী নয়, এটি শেক্সপিয়রীয় নাটকের মতো নাটকীয়তা, ট্র্যাজেডি ও অবিশ্বাস্য পুনরুত্থানের এক জীবন্ত দলিল।

মার্কিন প্রভাবশালী সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন ২০০৬ সালে খালেদা জিয়াকে নিয়ে লিখেছিল, ‘তিনি এমন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে টিকে আছেন যেখানে সহিংসতাই নিয়ম, সেখানে তিনি এক লৌহমানবী হিসেবে নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন।’

স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সেই ‘আপসহীন নেত্রী’, টাইম ম্যাগাজিনের খেতাব অনুযায়ী ‘লৌহমানবী’র জীবনাবসান ঘটেছে। রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রামের পাশাপাশি বার্ধক্য আর শারীরিক জটিলতার সঙ্গেও তার লড়াই-সংগ্রামের ইতি ঘটেছে। দীর্ঘ সময় চিকিৎসাধীন থাকার পর মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন খালেদা জিয়া।

জন্ম, শৈশব, বিয়ে (১৯৪৫ -১৯৭০)

১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা থামছে, আর ভারতীয় উপমহাদেশে তখন দেশভাগের প্রস্তুতি। ঠিক এমন এক সন্ধিক্ষণে ব্রিটিশ ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্ম নেন খালেদা খানম, ভালোবেসে নাম রাখা হয় ‘পুতুল’। বাবা ইস্কান্দার মজুমদার ছিলেন একজন চা ব্যবসায়ী, আদি নিবাস ফেনীর ফুলগাজীতে হলেও ব্যবসার সুবাদে তারা ছিলেন উত্তরবঙ্গে। মা তৈয়বা মজুমদার ছিলেন এক মহীয়সী নারী।

খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

দিনাজপুরের শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশে বেড়ে ওঠা পুতুল ছিলেন অত্যন্ত অন্তর্মুখী। গান শোনা, হারমোনিয়াম বাজানো আর ছবি আঁকাই ছিল তার জগৎ। শৈশবের সেই লাজুক মেয়েটি যে একদিন কোটি মানুষের স্লোগানের কেন্দ্রবিন্দু হবেন, তা তখন কল্পনাতীত ছিল।

স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

১৯৬০ সালে খালেদা খানম যখন সুরেন্দ্রনাথ কলেজের ছাত্রী, তখন তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তরুণ ও চৌকস ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। হয়ে যান খালেদা জিয়া। বিয়ের বেনারসি শাড়ি পরা সেই লাজুক বধূটি জানতেন না, তিনি এক আগ্নেয়গিরির সঙ্গে জীবন বাঁধতে যাচ্ছেন।

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ের পর পশ্চিম পাকিস্তানে (করাচি) চলে যান খালেদা জিয়া। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় স্বামীর সঙ্গেই ছিলেন। একজন সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী হিসেবে তিনি ছিলেন আদর্শ গৃহিণী। সন্তানদের লালন-পালন, স্বামীর তদারকি আর সংসারের খুঁটিনাটি নিয়েই ছিল তার জগত। ১৯৬৫ সালে তারেক রহমান ও ১৯৬৯ সালে আরাফাত রহমান কোকোর জন্ম তার মাতৃত্বের জগতকে পূর্ণতা দেয়।

একাত্তরের রণাঙ্গন ও বন্দিদশা (১৯৭১)

১৯৭১ সাল। বাঙালির অস্তিত্ব রক্ষার বছর। ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে, চট্টগ্রামে মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে ইতিহাসে নিজের নাম খোদাই করেন। কিন্তু এর চড়া মূল্য দিতে হয় পরিবারকে।

খালেদা জিয়া তখন দুই শিশুপুত্রকে নিয়ে ঢাকায় আত্মগোপন করেন। কিন্তু ২ জুলাই পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাকে গ্রেপ্তার করে। ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে তাকে বন্দি করা হয়। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নথিপত্রে এ সময়টিকে ‘চরম মানসিক নির্যাতনের সময়’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বামীর কোনো খবর নেই, সন্তানদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত— এমন পরিস্থিতিতেও তিনি ছিলেন অবিচল।

দুই ছেলে তারেক ও কোকোর সাথে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
দুই ছেলে তারেক ও কোকোর সাথে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

প্রয়াত সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ তার ‘বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ, হার স্টোরি’ গ্রন্থে সেই সময়ের এক রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বন্দিজীবন ছিল এক মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। একদিকে স্বামীর কোনো খবর নেই, অন্যদিকে পাকিস্তানি জেনারেলদের মানসিক নির্যাতন। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। তিনি ছিলেন এক নিঃশব্দ যোদ্ধা, যিনি নীরবে সব সহ্য করেছেন দেশের স্বাধীনতার জন্য।’

লেফট্যানেন্ট জেনারেল মীর শওকত আলী পরে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছেন অস্ত্র হাতে, আর বেগম জিয়া যুদ্ধ করেছেন ক্যান্টনমেন্টের বদ্ধ ঘরে, মনস্তাত্ত্বিক চাপ সহ্য করে। তিনিও একজন মুক্তিযোদ্ধা।’

খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও মুক্তি পাননি খালেদা জিয়া। ১৭ ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর মেজর অশোক তারার নেতৃত্বে তিনি উদ্ধার পান। এই ৯ মাসের বন্দিজীবন তাকে এক ইস্পাতকঠিন নারীতে রূপান্তর করে, যা পরের জীবনে তার রাজনৈতিক ডিএনএতে মিশে যায়।

ক্ষমতার ছায়ায় থেকেও নির্লিপ্ত (১৯৭২-১৯৮১)

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। সাড়ে তিন বছরের বেশি সময় পাননি তিনি। পঁচাত্তরে সপরিবার হত্যা করা হয় তাকে। হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।

রাজনৈতিক এই টালমাটাল সময়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর যোদ্ধা জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান ও পরে রাষ্ট্রপতি হন। খালেদা জিয়া হন ফার্স্ট লেডি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, তিনি ছিলেন চরম প্রচারবিমুখ। তিনি স্বামীর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সফরে নেদারল্যান্ডস, যুক্তরাজ্য বা সৌদি আরবে গেছেন, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ বা মার্গারেট থ্যাচারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, কিন্তু কখনোই রাজনীতির মঞ্চে কথা বলেননি।

স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
স্বামী প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়া ছিলেন যেন এক নীরব পর্যবেক্ষক। জিয়াউর রহমান যখন গ্রাম-গঞ্জে খাল খনন করতেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যেতেন, খালেদা জিয়া তখন তা দেখতেন। জিয়ার সততা, কর্মস্পৃহা ও দেশপ্রেম তিনি নিজের অজান্তেই আত্মস্থ করছিলেন। তিনি ছিলেন সেই চিরায়ত বাঙালি নারী, যিনি স্বামীর সাফল্যের পেছনে নীরবে শক্তি জুগিয়ে যান।

বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী এমাজউদ্দীন আহমদ তার বিশ্লেষণে উল্লেখ করেছেন, ফার্স্ট লেডি থাকাকালে খালেদা জিয়া রাজনীতির ক্লাসরুমে এক ‘মনোযোগী ছাত্রে’র মতো ছিলেন। তিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন জিয়াউর রহমান কীভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। জিয়ার এই দেশপ্রেম ও কর্মতৎপরতা খালেদা জিয়ার অবচেতনে রাজনীতির বীজ বুনে দিয়েছিল, যা তাকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করছিল।

বিধবার বেশে রাজনীতিতে পদার্পণ (১৯৮১-১৯৯০)

১৯৮১ সালের ৩০ মে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নির্মমভাবে নিহত হন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই মৃত্যু খালেদা জিয়ার সাজানো বাগান তছনছ করে দেয়। তিনি তখন ৩৬ বছরের এক বিধবা, হাতে দুটি এতিম সন্তান।

বিএনপি তখন অস্তিত্ব সংকটে। দলের অনেক জাঁদরেল নেতা সামরিক শাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রলোভনে দল ছাড়ছেন। ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন। দলের কর্মীরা তখন দিশেহারা হয়ে ছুটে যান খালেদা জিয়ার কাছে। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি বিএনপির প্রাথমিক সদস্য হন এবং ১৯৮৩ সালে দলের হাল ধরেন।

অধ্যাপক কাজী কাইউম শিশির তার ‘খালেদা জিয়া: আ বায়োগ্রাফি অব ডেমোক্রেসি’ বইতে এই মুহূর্তটিকে ‘ডেমোক্রেসির পুনর্জন্ম’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তার মতে, খালেদা জিয়া রাজনীতিতে এসেছিলেন ক্ষমতার লোভে নয়, বরং দলের অস্তিত্ব রক্ষা এবং স্বামীর আদর্শকে বাঁচিয়ে রাখার ঐতিহাসিক দায়বদ্ধতা থেকে।

মাটির থালায় খাচ্ছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
মাটির থালায় খাচ্ছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

গৃহবধূ থেকে রাজপথের নেতা হওয়ার এই রূপান্তর ছিল বিস্ময়কর। ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৯ বছর তিনি এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। তাকে বারবার গ্রেপ্তার করা হয়, গৃহবন্দি করা হয়। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে যখন অন্য অনেক দল এরশাদের সঙ্গে আপস করে নির্বাচনে যায়, খালেদা জিয়া তখন বলেছিলেন ‘স্বৈরাচারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়।’

তার এই একটি সিদ্ধান্ত তাঁকে জনগণের কাছে ‘আপসহীন নেত্রী’ (Uncompromising Leader) হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’-এর ১৯৮৭ সালের এক প্রতিবেদনে লেখা হয়েছিল— ‘জেনারেল জিয়ার বিধবা স্ত্রী সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন, প্রমাণ করেছেন তিনি কেবল একটি প্রতীক নন, তিনি এক মহাশক্তি।’

কেবল সেই ছিয়াশির নির্বাচন নয়, পরে এক-এগারোর ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলার সময় এবং শেখ হাসিনার কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনামলেও মামলা-হামলা, জেল-জুলুমের ভয় উপেক্ষা করে রাজনীতি করে গেছেন, থেকে গেছেন দেশের মাটিতে। তার ‘আপসহীন নেত্রী’র ভাবমূর্তিতে একটুও চিড় ধরতে দেননি।

১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতন ঘটে। এটি ছিল রাজনৈতিকভাবে খালেদা জিয়ার প্রথম বড় বিজয়।

প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী (১৯৯১-১৯৯৬)

১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সব জরিপ ভুল প্রমাণ করে বিএনপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। ২০ মার্চ খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী (পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টো প্রথম) হিসেবে শপথ নেন।

খালেদা জিয়ার আমলেই দীর্ঘ ১৬ বছর পর বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনর্প্রবর্তিত হয়। তিনি স্বেচ্ছায় রাষ্ট্রপতির হাতে থাকা একচ্ছত্র ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে দেন। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনী ছিল তার রাজনৈতিক উদারতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বক্তব্য দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বক্তব্য দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়ার প্রথম মেয়াদের সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল নারী শিক্ষার প্রসার। তিনি দশম শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা অবৈতনিক করেন এবং উপবৃত্তি চালু করেন। বিশ্বব্যাংক ও ইউনেস্কো তার এই উদ্যোগকে ‘উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য রোল মডেল’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের সামাজিক অগ্রগতির প্রশংসা করতে গিয়ে নারী শিক্ষার এই উল্লম্ফনের কথা উল্লেখ করেছেন, যার ভিত্তিপ্রস্তর এই সময়েই স্থাপিত হয়েছিল।

ডিজিটাল বাংলাদেশের সূচনা

খালেদা জিয়ার শাসনামলের বিশেষ করে ২০০১-২০০৬ মেয়াদে একটি কম আলোচিত কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ভিত্তি স্থাপন। আজকের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে’র অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোর শুরু হয় তার হাতে ধরেই।

কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ও ডিজিটাল উদ্যোক্তা রাজীব হাসান তার গবেষণাধর্মী বই ‘তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রদূত বেগম খালেদা জিয়া’তে দালিলিক প্রমাণসহ দেখিয়েছেন, আজকের ডিজিটাল বিপ্লবের বীজ রোপিত হয়েছিল খালেদা জিয়ার হাতেই। বইটির ভূমিকায় ড. আবদুল মঈন খান লিখেছেন, ‘খালেদা জিয়া কেবল বর্তমানের কথা ভাবেননি, তিনি সুদূর ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে প্রযুক্তির দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন।’

১৯৯১ সালে নির্বাচনি প্রচারণায় একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
১৯৯১ সালে নির্বাচনি প্রচারণায় একটি সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

রাজীব হাসানের বই ও সমসাময়িক রেকর্ড থেকে জানা যায়, একটা সময় বাংলাদেশ ছিল তথ্যপ্রযুক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন। খালেদা জিয়ার সরাসরি নির্দেশনায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সাবমেরিন ক্যাবল কনসোর্টিয়ামে (SEA-ME-WE 4) যুক্ত হয়। এটিই আজকের উচ্চগতির ইন্টারনেটের লাইফলাইন।

১৯৯১-৯৬ মেয়াদে ও পরে ২০০১ সালে কম্পিউটারের ওপর থেকে আমদানি শুল্ক ও ভ্যাট সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেন খালেদা জিয়া। তার দর্শন ছিল, ‘কম্পিউটার বিলাসিতা নয়, এটি শিক্ষার উপকরণ।’ এর ফলেই প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসে।

একটি মাত্র মোবাইল কোম্পানির মনোপলিতে যখন মোবাইল ফোনের দাম ছিল লক্ষ টাকা, তখন খালেদা জিয়ার সরকারই এই মনোপলি ভেঙে একাধিক অপারেটরকে লাইসেন্স দেয়। খালেদা জিয়া সরকারের আমলেই অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ ও অনলাইন ব্যাংকিংয়ের অবকাঠামো তৈরির কাজ শুরু হয়, যা আধুনিক অর্থনীতির চাকা সচল করেছে।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া কেবল দেশের ভেতরেই নন, আন্তর্জাতিক মহলেও ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী। তার পররাষ্ট্রনীতি বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল।

ফোর্বস (Forbes): ২০০৫ সালে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিন তাকে বিশ্বের ২৯তম ক্ষমতাধর নারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। ম্যাগাজিনটি উল্লেখ করে, ‘তিনি এমন একটি দেশ শাসন করছেন যেখানে রাজনৈতিক সংঘাত নিত্যদিনের ঘটনা, তবুও তিনি নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এনেছেন।’

নিউ জার্সি স্টেট সিনেট: ২০১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের সিনেট তাকে ‘ফাইটার ফর ডেমোক্রেসি’ (Fighter for Democracy) সম্মানে ভূষিত করে।

জাতিসংঘ ও শান্তিরক্ষা: খালেদা জিয়ার আমলেই বাংলাদেশ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বোচ্চ সেনা প্রেরণকারী দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে। কুয়েত যুদ্ধে বাংলাদেশি সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

ওয়ান-ইলেভেন ও ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা (২০০৭-২০০৮)

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে, যা ওয়ান-ইলেভেন নামে পরিচিত। শুরু হয় রাজনীতি থেকে দুই নেত্রীকেই সরানোর প্রক্রিয়া ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’।

৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ ভোরে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাগারে তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়, তিনি যদি দেশ ছেড়ে সৌদি আরবে চলে যান, তবে তাকে মুক্তি দেওয়া হবে। তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন।

২০০৭ সালে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত
২০০৭ সালে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত

কিন্তু খালেদা জিয়া ছিলেন পাহাড়ের মতো অবিচল। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ‘বিদেশে আমার কোনো ঠিকানা নেই। এই দেশেই আমার জন্ম, এই দেশেই আমার মৃত্যু। আমি আমার জনগণকে ছেড়ে কোথাও যাব না।’

ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান সে সময় এক বিশ্লেষণে লিখেছিলেন, খালেদা জিয়ার এই অনড় অবস্থানই মূলত সামরিক সমর্থিত সরকারের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছিল।

সেনানিবাস থেকে উচ্ছেদ (২০১০)

২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর। দিনটি ছিল খালেদা জিয়ার জীবনের অন্যতম বেদনাবিধুর দিন। আদালতের রায়ে তাকে ৪০ বছরের স্মৃতিবিজড়িত ঢাকা সেনানিবাসের মইনুল রোডের বাড়িটি ছেড়ে দিতে হয়। এই বাড়িতেই তিনি বধূ হয়ে এসেছিলেন, এখানেই তার সন্তানদের বেড়ে ওঠা, এখানেই স্বামী জিয়াউর রহমানের সঙ্গে কাটিয়েছেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়গুলো।

বাড়িটি থেকে উচ্ছেদের সময় খালেদা জিয়ার চোখের জল বাংলাদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ে আঘাত করে। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী ও লেখক ফরহাদ মজহার এই ঘটনাকে ‘রাষ্ট্রের অমানবিক ও প্রতিহিংসাপরায়ণ আচরণ’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। মহিউদ্দিন আহমদ তার বইয়ে এই ঘটনাকে বর্ণনা করেছেন একজন নারীর প্রতি রাষ্ট্রের চরম নিষ্ঠুরতা হিসেবে।

খালেদা জিয়া গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসভবনে উঠলেন, কিন্তু মন পড়ে রইল সেই স্মৃতিঘেরা আঙিনায়। এরপর নিষ্ঠুরতম আঘাত আসে ২০১৫ সালে। তখন তিনি সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুলশানের কার্যালয়ে অবরুদ্ধ। মালয়েশিয়া থেকে খবর আসে তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অকালমৃত্যুর।

ছেলে কোকোর মৃতদেহের দিকে নির্বাক তাকিয়ে আছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ছেলে কোকোর মৃতদেহের দিকে নির্বাক তাকিয়ে আছেন খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

যে মা মাসের পর মাস সন্তানকে দেখতে পাননি, তার কোলে ফিরে এলো সন্তানের নিথর দেহ। ছেলের লাশ সামনে নিয়ে তার সেই নির্বাক চাহনি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত তৈরি করে। তিনি কাঁদলেন, কিন্তু রাজনীতি ছাড়লেন না। শোককে তিনি শক্তিতে রূপান্তর করলেন। একজন মায়ের এই ত্যাগ তাকে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে আরও শ্রদ্ধার আসনে বসাল।

নির্জন কারাবাস (২০১৮-২০২৪)

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে রাখা হয় পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের এক পরিত্যক্ত ও নির্জন কারাগারে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের ২০১৯ সালের রিপোর্টে উল্লেখ করে, ‘খালেদা জিয়ার বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং কারাগারে তার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য বিচার বিভাগকে ব্যবহারের অভিযোগ প্রবল।’

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০২০ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদনেও তার মামলার রাজনৈতিক প্রকৃতি এবং জামিন না পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়।

আদালত চত্বরে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
আদালত চত্বরে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

কারাগারে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার চরম অবনতি ঘটে। তিনি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকরা বারবার বলছিলেন তাকে বিদেশে নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তৎকালীন সরকার তাতে সায় দেয়নি। ২০২০ সালে করোনাভাইরাস মহামারির সময় তাকে শর্তসাপেক্ষে বাসায় থাকার অনুমতি দেওয়া হলেও তিনি ছিলেন কার্যত গৃহবন্দি।

৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাস। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার এক অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থান। ৫ আগস্ট প্রবল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেন। এর পরপরই রাষ্ট্রপতি খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তির নির্দেশ দেন। ৬ আগস্ট তিনি পুরোপুরি মুক্ত হন।

৭ আগস্ট, ২০২৪। নয়াপল্টনে বিএনপির ঐতিহাসিক সমাবেশ। খালেদা জিয়া হাসপাতাল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন। দীর্ঘ ৬ বছর পর জাতি তার কণ্ঠস্বর শোনে। তিনি কোনো ক্ষোভ বা ঘৃণার কথা বললেন না। তিনি বললেন সেই ঐতিহাসিক উক্তি, ‘প্রতিশোধ নয়, আসুন ভালোবাসার বাংলাদেশ গড়ি। ধ্বংস নয়, শান্তি চাই। তরুণরাই আমাদের ভবিষ্যৎ, তাঁদের স্বপ্নই আমাদের স্বপ্ন।’

গত অক্টোবরে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
গত অক্টোবরে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সুর প্রতিধ্বনিত হয়। ম্যান্ডেলা যেমন জেল থেকে বেরিয়ে শ্বেতাঙ্গদের প্রতি প্রতিশোধ না নেওয়ার কথা বলেছিলেন, খালেদা জিয়াও তেমনি এক নতুন, অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের ডাক দিলেন।

ইতিহাসের পাতায় খালেদা জিয়া

খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত
খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

আজ ২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া। প্রেম, বিরহ, যুদ্ধ, রাজপ্রাসাদ থেকে শুরু করে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠ মিলিয়ে তার জীবনের ‘রোলার কোস্টার রাইডে’র অবসান ঘটল। দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি থেকে যাবেন ইতিহাসের পাতায়। দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামে নিজেকে যেভাবে তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই তকমাটিও ইতিহাসের পাতায় তার নামের পাশে রয়ে যাবে।

তথ্যসূত্র

  • খালেদা জিয়া: তৃতীয় বিশ্বের কণ্ঠস্বর — এমাজউদ্দীন আহমদ (প্রকাশক: মহিউদ্দিন আহমদ)
  • খালেদা জিয়া: এ বায়োগ্রাফি অব ডেমোক্রেসি — অধ্যাপক কাজী কাইউম শিশির
  • বেগম খালেদা জিয়া: হার লাইফ, হার স্টোরি (Begum Khaleda Zia: Her Life, Her Story) — মাহফুজউল্লাহ
  • তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রদূত বেগম খালেদা জিয়া — রাজীব হাসান (ভূমিকা: ড. আবদুল মঈন খান)
  • খালেদা — মহিউদ্দিন আহমদ (প্রথমা প্রকাশন)
  • Time Magazine: ‘The Iron Lady of Bangladesh’ (Article, 2006).
  • Forbes Magazine: ‘The 100 Most Powerful Women’ (Ranked 29th, 2005).
  • Amnesty International: Report on Human Rights in Bangladesh (2019, 2020).
  • US State Department: 2020 Country Reports on Human Rights Practices: Bangladesh.
  • New York Times: Articles covering the 1991 Election and Anti-Ershad Movement (1987, 1991).

ভাষণ ও অন্যান্য

  • বেগম খালেদা জিয়ার ভাষণ, নয়াপল্টন সমাবেশ (৭ আগস্ট, ২০২৪)
  • উইকিপিডিয়া ও বিএনপির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট
  • নিউ জার্সি স্টেট সিনেট রেজুলেশন (২০১১) - ‘Fighter for Democracy’ সম্মাননা
ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়ার অবদান অপরিসীম: শেখ হাসিনা

এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ও পরিবারের অন‍্যান‍্য শোকাহত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান শেখ হাসিনা।

৩ ঘণ্টা আগে

৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে আপসহীন ভূমিকার জন্য খালেদা জিয়া চিরস্মরণীয়: জাসদ

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক শোকবার্তায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।

৩ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়ার প্রতি সমবেদনা জানাতে শোক বই, স্বাক্ষর ৩ দিন

গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই শোক বই থাকবে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে বৃহস্পতিবার (১ জানুয়ারি) পর্যন্ত এতে শোক প্রকাশ করে সমবেদনা জানানো যাবে।

৪ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়া আমার কাছে মমতাময়ী মা— দোয়া চাইলেন তারেক রহমান

৫ ঘণ্টা আগে