সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটা সংরক্ষণে সহযোগিতার প্রস্তাব ভারতের

কূটনৈতিক প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০১: ০২
(বাঁয়ে) ময়মনসিংহ শহরে হরিকিশোর রায় রোডে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি। (ডানে) বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ চলছে। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক সত্যজিৎ রায়ের ময়মনসিংহের পৈতৃক বাড়ি ভাঙার খবরে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। ওই বাড়ি সংরক্ষণে ভারত সহযোগিতার প্রস্তাবও দিয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের দাদা খ্যাতিমান সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর এই বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের মালিকানাধীন। দীর্ঘদিনের অবহেলায় বাড়িটি জীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

ভারত সরকার বলছে, বাংলা সংস্কৃতির জাগরণের প্রতীক এই ভবনটি ভেঙে ফেলার পরিবর্তে তা মেরামত ও পুনর্নির্মাণ করে সাহিত্য জাদুঘর হিসেবে রক্ষা করা উচিত। এটি ভারত-বাংলাদেশের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে থাকবে।

এ উদ্দেশ্যে ভবনটি পুনর্নির্মাণ ও সংরক্ষণে বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করতে ভারত সরকার প্রস্তুত রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহে রায় পরিবারের স্মৃতিবিজড়িত ওই বাড়ি ভেঙে ফেলার খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।

এক্স হ্যান্ডলে তিনি লিখেছেন, ‘এ সংবাদ অত্যন্ত দুঃখের। রায় পরিবার বাংলার সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক। উপেন্দ্রকিশোর বাংলার নবজাগরণের একজন স্তম্ভ। তাই আমি মনে করি, এই বাড়ি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’

বাড়িটি রক্ষা করতে পদক্ষেপ নিতে জন্য বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মমতা লিখেছেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিন।’

ময়মনসিংহ শহরে হরিকিশোর রায় রোডের বাড়িটি মূলত হরিকিশোর রায় চৌধুরীর। তিনি ছিলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মসূয়ার জমিদার। বাংলা শিশুসাহিত্যের অন্যতম পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী, সুকুমার রায় ও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষ তিনি।

শতাব্দী প্রাচীন ওই বাড়িটি ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ব্যবহার করতে শুরু করে। গত প্রায় দেড় দশক ধরে জরাজীর্ণ ভবনটিতে কোনো কার্যক্রম চালানো যায়নি। এটি পরিত্যক্ত ছিল। শিশু একাডেমির কার্যক্রম চালাতে একটি আধাপাকা ঘর নির্মাণের জন্য কয়েকদিন আগে বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হয়।

ময়মনসিংহ শিশু একাডেমি বলছে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বাড়িটি ভাঙা হচ্ছে। মূল বাড়ি অক্ষত রাখলে শিশুদের চলাচলে ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েই এটি ভেঙে আধাপাকা একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বলছে, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত না হলেও ঐতিহাসিক মূল্য বিবেচনায় স্থাপনাটি সংরক্ষণ করা যেতে পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

গোপালগঞ্জের সহিংসতায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি সরকারের

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলা, সহিংসতা এবং মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।

১৭ ঘণ্টা আগে

গোপালগঞ্জের ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

গোপালগঞ্জের ঘটনায় যারা অন্যায় করেছে তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে, কাউকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

১৮ ঘণ্টা আগে

প্রশাসনের অনুষ্ঠানে উপেক্ষিত ‘জুলাই শহীদ’ হৃদয়ের পরিবার

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ‘জুলাই বিপ্লবে’ পুলিশের গুলিতে নিহত কলেজছাত্র হৃদয়ের পরিবার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত শহীদ দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না পাওয়ায় জেলাজুড়ে ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।

১৯ ঘণ্টা আগে

সুপার মার্কেটের আগুনে ইরাকে ৫০ জনের মৃত্যু

ইরাকের একটি শপিংমলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

২০ ঘণ্টা আগে