হাইকোর্টে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার শুনানি নিয়ে প্রশ্ন

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত বিচারাধীন বিষয় আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্টে বিষয়টির শুনানি বা নিষ্পত্তি হতে পারে কিনা, সে প্রশ্ন উঠেছে।

রবিবার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিতে এই প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্নটি তোলেন রুল সমর্থনকারী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।

২০১১ সালের ১০ মে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষণা করে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাদ দিয়ে বেশ কিছু বিষয়ে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আনে আওয়ামী লীগ সরকার। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। আগামী ১৭ নভেম্বর এর ওপর শুনানির তারিখ রয়েছে। অন্যদিকে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নে জারি করা রুলের শুনানি চলছে হাইকোর্টে।

রবিবার রুলে চতুর্থ দিনের শুনানি চলছিল। রুলের সমর্থনে শুনানি করছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এক পর‌্যায়ে রুল শুনানির যথার্থতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন এই আইনজীবী। এরপরই হাইকোর্ট আগামী বুধবার (১৩ নভেম্বর) পর্যন্ত রুল শুনানি মুলতুবি করেন। এ সময়ের মধ্যে রুলের সব পক্ষকে আলোচনা করে শুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।

শুনানি মুলতবি হওয়ার পর আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের যেসব বিধান বাতিল করা হয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা। এই ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছিল আপিল বিভাগের একটি রায়ের মাধ্যমে। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দিয়েছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) তিনটি আবেদন আপিল বিভাগের বিচারাধীন। আগামী ১৭ নভেম্বর শুনানির তারিখ রয়েছে। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল প্রশ্নের রুল শুনানিতে বারবারই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের প্রসঙ্গ আসছিল। যে কারণে প্রশ্ন উঠেছে, আপিল বিভাগে বিষয়টি নিষ্পত্তির আগে হাইকোর্ট সে বিষয়ে শুনানি বা নিষ্পত্তি করতে পারে কিনা। সুপ্রিম কোর্টের রীতি-নীতি অনুযায়ী তা (শুনানি বা নিষ্পত্তি) করাটা সমীচীন হবে না, যথাযথ হবে না।’

এই আইনজীবী বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয়, তা অ্যাটর্নি জেনারেলের কার‌্যালয়সহ বিবদমান পক্ষগুলোকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছেন আদালত।’

২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং রাষ্ট্রপতি ২০১১ সালের ৩ জুলাই তাতে অনুমোদন দেন। ওই সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া জাতীয় সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসনসংখ্যা ৪৫ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়; সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পুনর্বহাল এবং রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি সংযোজন করা হয়। এই সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ বিশিষ্ট ব্যক্তি।

গত ১৯ আগস্ট হাইকোর্ট রুল জারি করেন। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আইন কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে। পরে এই রুল সমর্থন করে সহায়তাকারী (ইন্টারভেনার) হিসেবে যুক্ত হন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সর্বশেষ এতে যুক্ত হন ইনসানিয়াত বিপ্লব নামের একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারম্যান আল্লামা ইমাম হায়াত।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

'নতুন বন্দোবস্ত বলতে শুধু পদ-পদবির রদবদল নয়, বরং সিস্টেমের বদল'

উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ‘এক-এগারো আবার ফিরে আসার মতো পরিবেশ তৈরি হতে পারে। রাজনৈতিক সংঘাত হবে—এমন এক জায়গায় আমরা দেশকে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা সংলাপ বা আলোচনার দিকে যাচ্ছি না।’

৭ ঘণ্টা আগে

‘সংসদ ২৭০ দিনে ব্যর্থ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন’

কমিশন বলছে, গণভোট জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে এলে আগামী জাতীয় সংসদই হবে সংবিধান সংস্কার পরিষদ, যার গাঠনিক ক্ষমতা বা কনস্টিটিউয়েন্ট পাওয়ার থাকবে। সংবিধান সংস্কার পরিষদ যদি ২৭০ দিনের মধ্যে এগুলো বাস্তবায়ন না-ও করতে পারে, তবু স্বয়ংক্রিভাবে এসব প্রস্তাব সংবিধানে যুক্ত হয়ে যাবে।

৮ ঘণ্টা আগে

নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে দ্রুত বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনার নির্দেশ

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই এ ক্যামেরা কেনার প্রক্রিয়া ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করতে হবে, যেন নির্বাচনকালীন সহিংসতা বা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা যায়।

৮ ঘণ্টা আগে

বিদেশি পর্যবেক্ষকদের বিষয়টি দেখবে ইসি : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

নির্বাচনকালীন সময়ে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণের বিষয়টি দেখভাল করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ড. তৌহিদ হোসেন বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমন কাউকে পর্যবেক্ষক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হবে না, যিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে পারেন।

৮ ঘণ্টা আগে