রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি: ১২ বছরেও বিচার হয়নি দোষীদের

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

সাভারের রানা প্লাজা ধসের একযুগ হলো আজ। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল একটি আটতলা ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে, যেখানে কয়েকটি পোশাক কারখানা ছিল। এই দুর্ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জন শ্রমিক প্রাণ হারান এবং আহত হন কয়েক হাজার মানুষ। আহত ও নিখোঁজ বহু মানুষের পরিবার এখনো মানবেতর জীবন যাপন করছে। চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ কিংবা পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ তারা। দীর্ঘ ১২ বছরেও বিচার হয়নি দোষীদের।

এই মর্মান্তিক ঘটনা শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং গোটা বিশ্বের পোশাকশিল্পের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম পরিবেশকে উন্মোচন করে দেয়। এটি বৈশ্বিকভাবে শ্রম অধিকারের পক্ষে এবং করপোরেট দায়বদ্ধতার দাবিতে এক আন্দোলনের সূচনা করে।

২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল রানা প্লাজায় ফাটল দেখা দেওয়ার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি তো বটেই, সাভারের পুলিশ কর্মকর্তা, সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সেখানে অনেকেই উপস্থিত হয়েছিলেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখে গেছেন ভবনের পরিস্থিতি। কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার যখন নিজে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে পারছিলেন না, তখন ভবন মালিক সোহেল রানা ‘সামান্য প্লাস্টার খসে পড়েছে’, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কিছু না’ বলে ঘোষণা দেন।

রানা প্লাজা ধসের আগের দিন থেকে এই সংবাদ প্রচার করার চেষ্টা করা সাংবাদিক নাজমুল হুদা বলেন, ‘দায়িত্বশীল মানুষেরা ভবন পরিদর্শন করে গেছেন, এত সাংবাদিক সেখানে ছিলেন। একটু সচেতন হলেই হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচানো যেত।’

আহত ও নিখোঁজ বহু মানুষের পরিবার এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। তবে ঘটনার একযুগ পার হলেও মৃত বা আহত কেউ পায়নি কোনো ক্ষতিপূরণ, উন্নত চিকিৎসা কিংবা পুনর্বাসন।

বরিশালের শীলা বেগম মেয়েকে নিয়ে সাভারে এসেছিলেন ভালো জীবনের আশায়। কিন্তু রানা প্লাজার ইথার টেক্স কারখানায় কাজ করতে গিয়ে ভবনের নিচে চাপা পড়েন। ১৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার হলেও শারীরিক জটিলতা এখনো কাটেনি। বর্তমানে তিনি টিউমারে আক্রান্ত, অপারেশনের প্রয়োজন হলেও টাকার অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না। মেয়ের লেখাপড়াও বন্ধ। আজিরন বেগম চিকিৎসা নিয়ে সিআরপিতে দেড় বছর ছিলেন, এখনো চলাফেরা করতে পারেন না।

শীলা বেগমের মতো ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিত ফিরে আসা শ্রমিকরা এখনো নানা শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে বেঁচে আছেন। কেউ লাঠিতে ভর দিয়ে হাঁটেন, কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আবার কেউ আর্থিক অনটনে সন্তানদের পড়ালেখাও চালাতে পারছেন না।

সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. ইকবাল হোসেন বলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ সবসময় তৎপর। হতাহতের সংখ্যা বেশি হওয়ায় মামলার অভিযোগ প্রমাণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের আদালতে হাজির করা হবে।

মামলার নথিপত্রের তথ্য বলছে, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় ১ হাজার ১৩৫ জন নিহত এবং ১ হাজার ১৬৯ জন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু হন।

ওই ঘটনায় মোট মামলা হয়েছিল ২০টি। এরমধ্যে ১১টি শ্রম মামলা এখনো ঢাকার দ্বিতীয় শ্রম আদালতে বিচারাধীন এবং দায়রা আদালতে আরও তিনটি মামলার মধ্যে একটির কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত। বাকিগুলোতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।

সাক্ষ্য গ্রহণে দেরি হওয়ার বিষয়ে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি আবুল কালাম খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের পিপি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার পর মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত, ঘুরলো মেট্রোরেলের চাকা

আন্দোলনে অংশ নেওয়া ডিএমটিসিএলরর কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি স্থগিত করেছি। ১৮ তারিখে বোর্ড মিটিংয়ে আমাদের দাবি মেনে নেবেন বলে এমডি স্যার অঙ্গীকার করেছেন। তাই আমরা আন্দোলন ১৮ তারিখ পর্যন্ত সাময়িক স্থগিত করেছি।

১৩ ঘণ্টা আগে

হাদির ভাইয়ের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ, সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা

সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার নিশ্চয়তা দিয়ে ওসমান হাদির ভাইকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি কয়েকজন উপদেষ্টাসহ পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করেছি। হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুততম সময়ে গ্রেপ্তার করতে বৈঠক থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

১৩ ঘণ্টা আগে

নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতে ইসিকে কঠোর হওয়ার তাগিদ

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে যে আশঙ্কা, তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে সেটা অনেকাংশে কেটে গেছে। তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনের পর এবারের নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। তবে, নির্বাচন কমিশনের যদি সদিচ্ছা থাকে তাহলে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেয়া সম্ভব।’

১৪ ঘণ্টা আগে

ঢামেক থেকে এভারকেয়ারে ওসমান হাদি

চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে সাঈদ হাসান জানান, ওসমানের মাথার ভেতরে গুলি পাওয়া যায়নি। গুলি এক পাশে ঢুকে আরেক পাশ থেকে বের হয়ে গেছে। মস্তিষ্কে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং খুলির ছোট ছোট টুকরা মস্তিষ্কের ভেতরে রয়ে গেছে। চিকিৎসকরা খুলি সরিয়ে রক্ত বের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আঘাতটা মস্তিষ্কের স্পর্শকাতর জায়গায়, তাই

১৫ ঘণ্টা আগে