গাজায় ভয়াবহ সহিংসতা: একদিনে ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত, খাদ্য সংকটে বাড়ছে মৃত্যু

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ছেলের কবরে কাঁদছেন এক ফিলিস্তিনি মা। ফাইল ছবি

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ৬১ জন গাজা সিটির বাসিন্দা। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মানবিক সহায়তা নিতে গিয়েও অন্তত ৩৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি অবরোধের কারণে ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৩টি শিশু। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার প্রধান এই মৃত্যুকে 'শিশু ও শৈশবের ওপর যুদ্ধের সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় বুধবার ভোর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে চিকিৎসা সূত্র জানিয়েছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবরুদ্ধ উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে হামলা আরও তীব্র হয়েছে, যেখানে শুধু গাজা সিটিতেই ৬১ জন নিহত হয়েছেন।

গাজা সিটির উত্তরে ত্রাণ বিতরণ নিশ্চিত করতে চেষ্টা চালানো লোকজনের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলায় বুধবার অন্তত ১২ জন নিহত হন।

দক্ষিণ গাজার নাসের হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, রাফাহের উত্তরে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরায়েলি গুলিতে অন্তত ১৬ জন নিহত হন। গাজার জরুরি ও অ্যাম্বুলেন্স সেবার হিসাবে, উত্তরে ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা মানুষের ওপর গুলিতে আরও ১৪ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হন। সব মিলিয়ে খাদ্যের সন্ধানে থাকা অন্তত ৩৭ জন এদিন নিহত হন।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি অবরোধজনিত ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিন শিশু রয়েছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ক্ষুধা-সংক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩৫ জনে, যার মধ্যে ১০৬ শিশু।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তা সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি এসব মৃত্যুকে গাজায় “শিশু ও শৈশবের ওপর যুদ্ধের সাম্প্রতিকতম দৃষ্টান্ত” বলে বর্ণনা করেছেন।

তিনি এক্স-এ লিখেছেন, “এগুলোর পাশাপাশি বোমা হামলায় নিহত বা আহত ৪০ হাজারের বেশি শিশুও রয়েছে। আরও রয়েছে অন্তত ১৭ হাজার এতিম বা পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন শিশু এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ও গভীর মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত ১০ লাখ শিশু।”

তিনি আরও লিখেছেন, “শিশু মানে শিশু। তারা যেখানেই থাকুক, গাজাসহ, শিশুদের মৃত্যু বা ভবিষ্যৎ কেড়ে নেওয়ার ঘটনায় কারও নীরব থাকা উচিত নয়।”

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন