আবিষ্কারের গল্প
কফি এলো যেভাবে
শহরকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই।
কফি এলো যেভাবেশহরকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই। মাজব্যবস্থায় জনপ্রিয় এক পানীয় কফি। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে জুড়ে আছে এই পানীয়। ডায়েট থেকে শুরু করে ক্লান্তি দূর করতে কফির তুলনা নেই।
পরিমাণের দিক থেকে ইউরোপ- আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি কফি পান করা হলেও বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ঢাকা শহরের প্রায় প্রতিটি মোড়েই কফি শপ দেখতে পাওয়া যায়। ঢাকার পাশাপাশি গ্রামগঞ্জেও ছড়িয়ে পড়েছে এই পানীয়।
কফির এতটা জনপ্রিয়তার কারণইবা কী কিংবা কখন আবিষ্কার হয়েছিল কফি?
কফির আবিষ্কার নিয়ে কয়েকটি গল্প প্রচলিত। নবম শতকে আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ ইথিওপিয়ায় কাফা অঞ্চলে খালেদ কালদি নামে এক আরব রাখাল বালক ছিল।
একদিন ছাগল চরানোর সময় সে দেখতে পেল, তার ছাগলগুলো বেরি-জাতীয় এক প্রকার ফল খাচ্ছে। এমনকি সেদিন রাতে ছাগলগুলো সারা রাত না ঘুমিয়েই পার করে দিল। এই ব্যাপার নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিল কালদি। পরদিনও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তির পর সে বুঝতে পারল সবকিছুর মূলে এই বেরি- জাতীয় ফল।
এই বেরি-জাতীয় ফল সংগ্রহ করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যায় কালদি। পরদিনই সেই ফল নিয়ে স্থানীয় মসজিদের ইমামের কাছে হাজির সে। ফলগুলো কাঁচা খাওয়া সম্ভব ছিল না, তাই
ইমাম সেই ফলগুলোকে আগুনে পোড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। কিছুক্ষণ পর দেখা যায় যে এই ফলগুলো থেকে বেরোচ্ছে দারুণ সুগন্ধ। পরে ইমাম এবং তার ছাত্ররা এ ফল সেদ্ধ করে দেখার চিন্তা করেন। তারা এই ফল সেদ্ধ করে তৈরি করেছিলেন পানীয়।
ধারণা করা হয়, এভাবেই প্রথম কফি আবিষ্কার হয়েছিল। সে সময়ের অনেক পর ইয়েমেনসহ স্থানীয় কয়েকটি দেশে ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল কফি।
কফির উৎপত্তির ইতিহাসের অন্য প্রচলিত কাহিনিটি হচ্ছে ইয়েমেনের একজন সুফির নামে। অনেকে বলেন, ইয়েমেনের ঘোতুল আবদুল নুরুদ্দীন আবুল আল হাসান আল সাদিলি নামের এক সুফিসাধকই প্রথম কফি আবিষ্কার করেছিলেন। এই সুফিসাধক একবার বেড়াতে গিয়েছিইলেন ইথিওপিয়ায়। তখন । একটি পাখিকে নাম না জানা লাল রঙের একটি ফল খেতে দেখেন। ফলটি দেখে তিনি কৌতূহল প্রকাশ করেন এবং নিজে সেটা খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর অনেক চাঙা এবং সতেজ অনুভব করার পর পুড়িয়ে এবং পানিতে সেদ্ধ করে কফি বানানের চিন্তা করেন তিনি।
কফি নিয়ে আরও একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। অনেকের মতে, ওমর নামে ইয়েমেনে একজন শেখ ছিলেন। তিনি অসুস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ করতেন এবং এ জন্য পুরো দেশেই খ্যাতি ছিল তার। একবার তাকে মোকা থেকে ওসাবের মরুভূমিতে নির্বাসন দেয়া হয়েছিল। তার নির্বাসনের সময়ে একদিন ক্ষুধার জ্বালায় ঘুরতে ঘুরতে তিনি কফিগাছের পাশে বসেন। সে সময় লাল রঙের কিছু ফল পড়ে ছিল তার চারপাশে। সেই ফলগুলো মুখে দেয়ার পর তিতা অনুভব হওয়ায় তিনি সেগুলোকে পুড়িয়ে ফেলেন।
এরপর কোনোভাবে তা পানিতে মিশে গেলে দারুণ সুগন্ধ ছড়ায় এবং তা পান করার পর তিনি অনেক সতেজ অনুভব করেন। এরপর তিনি যখন এ আবিষ্কারের কথা প্রচার করেন, তখন তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং তার এই উদ্ভাবিত পানীয় সাদরে গ্রহণ করেন সবাই। এভাবেই কফির প্রচলন ঘটে।