top ad image
top ad image
home iconarrow iconফিচার

শিল্প-সাহিত্য

লুপ্ত পেশা ডাকহরকরা

লুপ্ত পেশা ডাকহরকরা
এভাবে আর ডাকহরকরা ডাক বহন করেন না

ঝুমঝুম ঘণ্টা বাজিয়ে ডাকহরকরা ছুটত গ্রাম থেকে গ্রামে। চিঠি নিয়ে, টাকা নিয়ে। এখনো ডাকঘর আছে। চিঠি কেউ লেখে না। ডাকঘর যেহেতু আছে, ডাকহরকরাও তাই আছে, তবে না থাকার মতো করে। এখনকার ছেয়েমেয়েরা এদেডাক পরিবহনের পদ্ধতি বদলে গেছে। ডাক হরকরা আগে পায়ে হেঁটে ডাক বইত। পরে আসে সাইকেল।র দেখে না, গাঁয়ের লোকেরাও দেখে কী? কিন্তু এখন কতরকমের গাড়ি। রাতে অন্ধকারে ছুটতে হয় না এঁদের। অথচ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গানে গানে বলেছেন, ‘রানার গ্রামের ডাকহরকরা। রাতের পর রাত ক্লান্তিহীন, মানুষের সুখ-দুঃখের খবরের বোঝা বয়ে পৌঁছে মানুষের দোরে, দোরে। কিন্তু তার খবর কে রাখে?’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তার বিখ্যাত গানটির শুরুতেই রানারকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন এভাবে, বিনা সুরে। এরপর নানা তাল-লয়ে তিনি গানটি গেয়েছেন, যে গানে উঠে এসেছে একসময় গাঁয়ের পথে পথে ঘুরে বেড়ানো ডাকহরকরা নামের পেশাজীবী সংক্ষিপ্ত জীবন।ঝুমঝুম ঘণ্টা বাজিয়ে ডাকহরকরা ছুটত গ্রাম থেকে গ্রামে। চিঠি নিয়ে, টাকা নিয়ে। এখনো ডাকঘর আছে। চিঠি কেউ লেখে না। ডাকঘর যেহেতু আছে, ডাকহরকরাও তাই আছে, তবে না থাকার মতো করে। এখনকার ছেয়েমেয়েরা এদেডাক পরিবহনের পদ্ধতি বদলে গেছে। ডাক হরকরা আগে পায়ে হেঁটে ডাক বইত। পরে আসে সাইকেল।র দেখে না, গাঁয়ের লোকেরাও দেখে কী? কিন্তু এখন কতরকমের গাড়ি। রাতে অন্ধকারে ছুটতে হয় না এঁদের। অথচ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গানে গানে বলেছেন, ‘রানার গ্রামের ডাকহরকরা। রাতের পর রাত ক্লান্তিহীন, মানুষের সুখ-দুঃখের খবরের বোঝা বয়ে পৌঁছে মানুষের দোরে, দোরে। কিন্তু তার খবর কে রাখে?’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তার বিখ্যাত গানটির শুরুতেই রানারকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন এভাবে, বিনা সুরে। এরপর নানা তাল-লয়ে তিনি গানটি গেয়েছেন, যে গানে উঠে এসেছে একসময় গাঁয়ের পথে পথে ঘুরে বেড়ানো ডাকহরকরা নামের পেশাজীবী সংক্ষিপ্ত জীবন।

আসলে এটা গান নয়, কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের বিখ্যাত কবিতা ‘রানার’-এর সংগীত ভার্সন, যে কবিতায় সুকান্ত লিখেছেন–
রানার ছুটেছে তাই ঝুম্‌ঝুম্ ঘণ্টা বাজছে রাতে/ রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে, ‘রানার চলেছে, রানার!.../ কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।…তার জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে সরে যায় বন,/ আরো পথ, আরো পথ– বুঝি লাল হয় ও পূর্ব কোণ…হাতে লণ্ঠন করে ঠন্‌ঠন্, জোনাকিরা দেয় আলো/ মাভৈঃ রানার! এখনো রাতের কালো।/ …অনেক দুঃখে, বহু বেদনায়, অভিমানে, আনুরাগে,/ ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।/ …ঘরেতে অভাব; পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালো ধোঁয়া,/ পিঠেতে টাকার বোঝা,/ তবু এই টাকাকে যাবে না ছোঁয়া,/ …দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।

…’

রানার পেশাটা এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। এখন ডাক বওয়ার জন্য গাড়ি আছে। আগে রানার হাতে একটা একটা লণ্ঠন আর বল্লম নিয়ে রাত-বিরাতে ডাক বয়ে নিয়ে যেত দূরদূরান্তে। বল্লমের মাথায় বাঁধা থাকত ঘণ্টা, যতে সেই ঘণ্টাধ্বনি শুনে মানুষ বুঝতে পারে রানার চলেছে।কেউ যেন তাকে দেখে চোর-ডাকাত মনে না করে।

রানার রাতের আঁধারে একা চলত। পথে কত ডাকাতি হতো। বিখ্যাত লেখক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় রানারের এই জীবন নিয়ে লেখেন কালজয়ী গল্প ‘ডাকহরকরা’।আমাদের জাতীয় সংগীতের সুরকার গগন হরকরাও ছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের পোস্ট অফিসের একজন ডাকহরকরা।

তিনি আবার লোকসংগীতশিল্পীও ছিলেন। একদিন মাঝরাতে, ‘আমি কোথায় পাব তারে/ আমার মনের মানুষ যে রে…’ গানটা গাইতে গাইতে ডাক নিয়ে ফিরছিলেন। রবীন্দ্রনাথ তখন কুঠিবাড়ি থেকে সেই গান শুনতে পান। একদিন ডেকে পাঠান গগনকে, শোনেন ওই গানটা । সেই গানের সুরই পরে ‘আমার সোনার বাংলা’ গানে ব্যবহার করেন কবিগুরু।

r1 ad
r1 ad