top ad image
top ad image
home iconarrow iconফিচার

সাহিত্য

রবীন্দ্রনাথ ও পচা ডিম!

রবীন্দ্রনাথ  ও পচা ডিম!
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

পচা ডিম জেনেশুনে কেউ খায় না। কিন্তু এমন কোথাও খেতে বসলেন, যেখানে ভদ্রতার খাতিরে বলতেও পারছেন, ডিমটা পচা, এটা খেতে পারছি না। তখন আপনি কী করবেন?পচা ডিম জেনেশুনে কেউ খায় না। কিন্তু এমন কোথাও খেতে বসলেন, যেখানে ভদ্রতার খাতিরে বলতেও পারছেন, ডিমটা পচা, এটা খেতে পারছি না। তখন আপনি কী করবেন?

বাদ দিন, রবীন্দ্রনাথ কী করেছিল, সেটাই শুনুন।

রবীন্দ্রনাথের তখন জগৎজোড়া খ্যাতি। দেশে তো আরও বেশি। সুতরাং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তাঁর ডাক পড়ে, এমনকী ঘরোয়া নিমন্ত্রণেও রবীন্দ্রনাথকে প্রায়ই হাজিরা দিতে হয়। তবে নেহাৎ পরিচিত মানুষ ছাড়া রবীন্দ্রনাথ তো নিমন্ত্রণ রক্ষা করবেন না। একবার এক পরিচিত ভদ্রলোকের বাড়িতে দাওয়াত পড়েছিল রবীন্দ্রনাথের। সঙ্গে ছিলেন ক্ষিতিমোহন সেন। ক্ষিতিমোহন সেন কে তো চেনেন? পৌরণিক সাহিত্য গবেষণার জন্য তিনি বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিলেন। কিন্তু তাঁর আরও একটা বড় পরিচয় আছে। তিনি বিখ্যাত নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের নানা।

ক্ষিতিমোহন ছিলেন রবীন্দ্রনাথের বিশেষ স্নেহভাজন ছিলেন। সুতরাং কবিগুরুর সঙ্গে অনেক জায়গাতেই যেত হত ক্ষিতিমোহনকে। একবার কোলাতার কাছেই এক গ্রামে দাওয়াত পড়ল রবিঠাকুরের। কবিগুরু দাওয়াত নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেলেন, সঙ্গে ছিলেন ক্ষিতিমোহনও।

আমন্ত্রণকারী ভদ্রলোক হরেক পদের খাবার খেতে দিলেন তাঁদের। ছিল ডিমের কালিয়াও। ক্ষিতিমোহন কালিয়াটা খেতে গিয়েও খেলেন না। কারণ পচা গন্ধ বেরুচ্ছিল ওটা থেকে। কিন্তু অন্যের বাড়িতে মেহমান হওয়ার কিছু ঝামেলা আছে। বিশেষ করে বাঙালি সমাজে। ভদ্রতার ঝামেলা। খাবার খেতে যত খারাপই হোক, ভদ্রতা করে বলতে হয়, খাবার খুব সুস্বাদু, চমৎকার রান্না–ইত্যাদি।

ক্ষিতিমোহন পড়লেন বিপদে। ডিমটা যদি না খান, তাহলে অভদ্রতা হয়। যিঁনি নিমন্ত্রণ করছেন তিনি হয়তো অপমান বোধ করতে পারেন। তাই তিনি ব্যাপারটা ছেড়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথের ওপর। যদি দেখেন, রবীন্দ্রনাথ খাচ্ছেন না, তাহলে তিনিও খাবেন। কবিগুরু যদি না খান, তিনিও খাবেন না।

কিছুক্ষণ পর ক্ষিতিমোহন দেখলেন অবাক কাণ্ড। রবীন্দ্রনাথ সুড়ুৎ করে একটা পচা ডিমি মুখে চালান করে সুড়ুৎ করে গিলে ফেলেছেন! কী আর করা, দেখাদেখি ক্ষিতিমোহনও চোখকান বুজে একটা ডিম কোনোমতে খেয়ে ফেললেন। সঙ্গে সঙ্গে পেটর মোচড় দিয়ে শুরু করল।

ফেরার পেথ ক্ষিতিমোহন রবীন্দ্রনাথেক জিজ্ঞেস করলেন, ‘গুরুদেব, পচা ডিম কী করে খেলেন? আমার তো খাওয়ামাত্র বমি পেয়ে গেছিল।’

‘আমি তো ও ডিম খাইনি?’ বললেন রবীন্দ্রনাথ।

ক্ষিতিমোহন বললেন, ‘সেকি! আমি যে দেখলাম আপনি ডিমটা মুখে তুলেছেন?’

রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘ওই ডিম আমি খেয়েছি নাকি! আমার দাড়ির ফাঁক দিয়ে একেবারে আমার জামার ভেতর চালান করে দিয়েছি। এখন এটা বার করতে পারলে বাঁচি!’

r1 ad
r1 ad
top ad image