ঐতিহ্য
গৃহস্থের গোয়াল ঘর
গৃহস্থ বাড়ি মানেই এলাহি কারবার। বিরাট একটা উঠোন। একপাশে শোবার ঘর। সেগুলো কাঁচা কিংবা পাকা দুধরনেরই হতো। আরেক পাশে রান্না ঘর। এক কোণায় গবাদিপশুর জন্য বড়সড় একটা কাঁচা ঘর। এটাকেই গোয়াল বলে। আরেক এক কোণায় হয়তো ধান রাখার জন্য এক বা একাধিক গোলা ঘর।
গোলা ভরা ধান যার থাকে, তার গোয়াল ভরা গরুও থাকে। গো থেকেই গোয়াল। একজন গৃহস্থের অর্থনৈতিক অবস্থা কতটা শক্তিশালী, তা পরিমাপের জন্য তুলনা করা হতো তার গোলার সংখ্যা আর গোয়ালের আকার দিয়ে।
উঠানের এক পাশে বিশাল এক খোলা ঘর হলো এই গোয়াল। এর এক পাশে দেয়াল বা বেড়া, বাকি তিন পাশ খোলা। বাড়ির সীমানাপ্রাচীরের এই ঘরে চাল স্থাপন করা হতো। তাই এক পাশে দেয়াল দেখা যেত।
বাকি তিন পাশ খোলাও থাকতে পারে, আবার না-ও পারে। তবে গরু-মহিষের গরমের কথা ভেবে তিন পাশ খোলাই রাখা হতো। গৃহস্থের অবস্থা কত ভালো তার ওপর নির্ভর করে গোয়ালে খড় বা টালি দিয়ে ছাউনি দেওয়া হতো। দোচালা ঘর।
আড়মাচার ওপর দুই চালের মাঝখানের ফাঁকা জায়গায় রাখা হতো জ্বালানি, কিংবা ধানের খড়।
গোয়ালের মেঝেতে গরুর খাবার পাত্র, গরু বাঁধার জন্য খুঁটি বসানো হতো। গরুর প্রস্রাবে গোয়ালের মেঝে কাদা হয়, রোগজীবাণু বাসা বাঁধে, তাই মেঝেতে ইট বিছিয়ে দেওয়ার চল যেমন ছিল, তেমনি মেঝেতে ছিটিয়ে দেওয়া হতো ছাই ও কয়লা। এ দুটি জিনিস ভালো জীবাণু ও ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে।