ঘরে বসেই জ্বর কমানোর ১০ পদ্ধতি
জ্বর পাইরোক্সিয়া নামেও পরিচিত। সাধারণত মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৭-৯৯ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা যখন এর উপরে চলে যায় তখনই সেটাকে জ্বর বলে গণ্য করা হয়।
চিকিৎসকরা বলেন, জ্বর আসলে কোনো রোগ নয়, বরং এটি রোগের একটি লক্ষণ বা উপসর্গ। ফলে জ্বর হওয়াকে শরীরের ভেতরের কোনো রোগের সতর্কবার্তা বলা যেতে পারে। অনেক সেময় সেটা সর্দি-কাশির মতো সাধারণ সংক্রমণের কারণে হতে পারে, আবার অনেক সময় গুরুতর কোনো রোগের উপসর্গও হতে পারে।
জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়
১. প্রচুর পানি পান করুন
জ্বর হলে বেশি বেশি পানি খেতে হবে। শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তাই রিহাইড্রেট থাকতে পানি পান করুন বেশি বেশি। চাইলে জুস বা স্যুপও পান করা যায়। এমনকি খাবার স্যালাইনও ভালো।
২. বিশ্রাম নিন
জ্বর হলে এদিক-সেদিক না ঘুরে একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন। শিশুদের ক্ষেত্রে এটিতে জোর দিতে হবে। এতে শরীর থেকে শক্তি কমে যায়। কারণ, ইমিউনিটি তখন সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার জন্য নিরন্তর কাজ করে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্রাম নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। তাহলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবেন।
৩. জলপট্টি দিন
জ্বর কমানোর অন্যতম সেরা উপায় হলো মাথায় জলপট্টি দেওয়া। বাড়িতে কাউকে ঠাণ্ডা পানিতে কাপড় ভিজিয়ে মাথায় দিতে বলুন। জ্বর এলে এই পন্থা অবলম্বন করতে হয়। একটানা ১০ মিনিট জলপট্টি দিলে জ্বর কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
৪. গোসল করুন
জ্বর এলে অনেক ঠাণ্ডা লাগে। তাই গোসল করতে ইচ্ছে করে না। জ্বর হলে কুসুম গরম পানিতে গোসল করুন। তবে এই গোসল খুব দ্রুত করতে হবে, বেশি সময় নিয়ে করা যাবে না। আর জ্বর হলে ঠাণ্ডা পানিতে একদমই গোসল করবেন না। তবে গোসল করতে না চাইলে স্পঞ্জ বাথ নিতে পারেন। এক্ষেত্রে সারা শরীরে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে।
৫. তরল খাবার খান
প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে এ সময়। জ্বর শরীরে যত বেশি হবে ততই ডিহাইড্রেশন বাড়ে। তাই সেই সময় প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া উচিত। সেই সঙ্গে সম্ভব হলে ফলের রস, হার্বাল চাও খেতে পারেন।
৬. গার্গেল করুন
ঠাণ্ডা লেগে গলায় ব্যথা হলে এবং জ্বর এলে বারবার গার্গেল করুন। তাতে গলায় আরাম পাওয়া যাবে। এক গ্লাস গরম পানিতে আদা, লবণ দিয়ে গার্গেল করুন।
৭. আরামদায়ক পোশাক পরুন
জ্বরের সময় সুতি কাপড়ের জামা পরা দরকার, যাতে ভেতর দিয়ে বাতাস প্রবাহিত হয়। দরজা-জানালা খুলে দেবেন, পাখা ছেড়ে দেবেন, যাতে বাতাস চলাচল করে।
৮. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খান
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত হয়। হালকা গরম পানিতে লেবুর রস পান করলে জ্বরের পাশাপাশি সর্দি, ফ্লু এবং অন্যান্য রোগ কমাতে সহায়তা করে।
৯. খেতে হবে সুষম খাবার
জ্বর থেকে দ্রুত সুস্থ হতে মৌসুমি ফল, শাকসবজি, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, ওটস ও রুটির মতো সুষম খাবার খেতে হবে। সেই সঙ্গে চিকেন বা ফিশ স্যুপ করেও খেতে পারেন।
১০. শান্ত থাকুন
স্ট্রেস এবং উদ্বেগ জ্বরের লক্ষণগুলোকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। ধৈর্য ধরে জ্বর মোকাবিলা করুন। মন শান্ত রাখতে গান শুনতে পারেন। করতে পারেন ধ্যান।
যদিও ঘরোয়া সমাধানগুলো হালকা থেকে মাঝারি জ্বরকে কার্যকরভাবে দূর করতে পারে, তবে আপনার জ্বর যদি বেশি থাকে (103°F বা 39.4°C এর উপরে) বা তিন দিনের বেশি সময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।