সাহিত্য
স্বপ্ন নয়, যেন রূপকথা!
লক্ষ্য অটুট থাকলে, সেই মতো পরিশ্রম করলে সাফল্য ধরা দেবেই। কখনো কখেনা ব্যতিক্রম ঘটতে পারে। অবিচল লক্ষের পথে ছুটে নিজের ছেলাবেলার প্রতিজ্ঞা বাস্তবায়নের উদাহরণ ইতিহাসে কম নেই। তবুও এর মধ্যে কিছু কিছু ব্যতিক্রম তো আছেই। সেগুলোই মোটা দাগে ইতিহাস তৈরি করে। এক বস্তির ছেলের এক প্রতিজ্ঞার আর সেটার বাস্তবায়ন য়েন রূপকথাকেও হার মানায়।
দর্শনীয় একটা পার্ক। ভারী সুন্দর করে সাজনো পার্কটা। বিচিত্র গাছপালা- ফুল-ফলের। পাার্কটাতে কত মানুষ আসে—সময় কাটায়, শরীরচর্চা করে।
ছেলেরা-বুড়োরা সবাই। ছেলেরা খেলাধুলা করে। ছেড়া পোশাকের ওই ছেলেটারও সখ হয় পার্কের ভেতর ঢোকার। কিন্তু ধনী লোকের ছেলেমেয়েরা সেখানে খেলে।
সে নিজে বস্তির ছেলে। পোশাক-আশাক মলিন, চেহারায় দারিদ্রের ছাপ। কিন্তু ধনী-গরিবের পার্থক্য বোঝার মতো বয়স ছেলেটার তখনো হয়নি। তাই নিঃসংকোচে পার্কে ঢোকার চেষ্টা করে।
ছেলেটা পার্কে ঢুকতে পারেনি সেদিন। পার্কের দ্বাররক্ষী সেদিন তাকে ঢুকতে দেয়নি। বস্তির ছেলেদের নাকি এই পার্কে ঢোকা নিষেধ!
ছেলেটা মনে কষ্ট পায়। তবে ভেঙে পড়ে না। মুহূর্তে কষ্টটাকে রূপ দেয় প্রতিজ্ঞায়।
পার্কের দ্বাররক্ষীকে শুনিয়ে বলে আসে, একদিন তার অনেক পয়সা হবে। সেদিন পার্কটা কিনে নেবে সে। সে কথা শুনে হয়তো দ্বাররক্ষী তাচ্ছিল্যের হাসি হেসেছিল। অন্যদিকে ভাগ্যদেবতা ওপরে বসে মুচকি হেসেছিলেন।
ছেলেটার নাম অ্যান্ড্রু কার্নোগি। সেই বস্তির ছেলে বড় হয়ে প্রচুর টাকা-পয়সার মালিক হয়েছিলেন। বনে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্টের সবচেয়ে বড় ধনকুবেরের একজন।
ছেলেবেলার সেই প্রতীজ্ঞা রেখেছিলেন কার্নোগি—পার্কটা কিনেছিলেন। তারপর সাইনবোর্ড লাগিয়ে বড় বড় হরফে লিখেছিলেন—
‘আজ থেকে দিনে বা রাতে যে কোনো সময়ে যেকোন মানুষ যেকোন পোশাকে এই পার্কে প্রবেশ করতে পারবে।’