বিজ্ঞান
মহাকাশে রেস্তোরাঁ

মহাশূন্যে তৈরি হচ্ছে আস্ত এক রেস্তোরা। বানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন সংস্থা 'স্পেসভিআইপি'। পৃথিবীর স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ভাসমান রেস্তরাঁ খুলতে যাচ্ছে তারা। সেই রেস্তোরাঁয় একজন অতিথি ছয় ঘণ্টার মহাকাশ সফর উপভোগ করতে পারবেন। তবে এ অভিজ্ঞতা সস্তা নয়, মাথাপিছু খরচ পড়বে প্রায় ৫ লক্ষ ডলার।
‘স্পেসভিআইপি’ ইতিমধ্যে তাদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে রেস্তরাঁর কিছু ছবি শেয়ার করেছে। রেস্তরাঁটি দেখতে অনেকটা বেলুনের মতো হবে এবং ছ’জন অতিথি একসঙ্গে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১ লক্ষ ফুট উচ্চতায় ভাসমান অবস্থায় সূর্যোদয় দেখতে দেখতে খাবার উপভোগ করতে পারবেন। চারপাশে বিশাল জানালা দিয়ে দেখা যাবে দূরের দিগন্ত। অতিথিরা মহাকাশ থেকেই লাইভস্ট্রিম করতে পারবেন, বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ড্যানিশ রেস্তরাঁ ‘অ্যালকেমিস্ট’-এর শেফ রাসমুস মাঙ্ক রেস্তরাঁর মেনু তৈরি করছেন। মেনু এখনও চূড়ান্ত হয়নি, তবে শেফ জানিয়েছেন, মেনুতে থাকবে উদ্ভাবনী ও চমকপ্রদ খাবার, যা এই মহাকাশ সফরের মতোই বিস্ময়কর হবে। উদাহরণস্বরূপ, থাকবে ‘এরোসল-ইনস্পায়ারড’ খাবার ও ‘এনক্যাপসুলেটেড অ্যারোমা’। মাঙ্ক নিজেও প্রথম সফরে অংশ নেবেন এবং জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে আরও অনেক সফর হবে এবং টিকিটের দাম ধীরে ধীরে কমবে যাতে আরও বেশি মানুষ এই অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন।
মহাকাশে ভাসমান বেলুন-রেস্তরাঁটি নির্মাণ করেছে ‘স্পেস পারসপেকটিভস’। অতিথিদের কোনও বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হবে না। রকেট নয়, একটি স্পেস বেলুনের সাহায্যে এক ধরনের ক্যাপসুলে বসিয়ে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হবে। প্রযুক্তিটির পিছনে রয়েছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আগামী মাস থেকে পরীক্ষামূলক উড়ান শুরু হবে।
‘স্পেসভিআইপি’ ছাড়াও ২০২৫ সালের পর্যটন-বাজারে তাদের প্রতিযোগীরাও হাজির হবে। ফ্রান্সের একটি সংস্থা ‘জ়েফাল্টো’ গত বছরই ঘোষণা করেছিল, তারা মহাকাশ-রেস্তরাঁ খুলতে যাচ্ছে এবং তাদের টিকিটের দাম তুলনায় অনেকটাই কম— ১ লক্ষ ৩২ হাজার ডলার।
মহাকাশে ভাসমান রেস্তরাঁ শুধুমাত্র ধনী পর্যটকদের জন্য নয়, এটি একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর বাস্তব রূপ। 'স্পেসভিআইপি' এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো মহাকাশ পর্যটনকে সহজলভ্য করতে উদ্যোগ নিচ্ছে। এই উদ্যোগগুলি ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষের জন্য মহাকাশ ভ্রমণকে আরও সুলভ এবং সহজলভ্য করে তুলবে।
সূত্র: স্পেস ডট কম