—আদিনাথ যাবেন?
একটা ছোট পাহাড় সমুদ্রগর্ভ থেকে খাড়া উঠেছে—তার মাথায় আদিনাথ শিবের মন্দির। এ অঞ্চলের এটি একটি প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান, অনেক দূর থেকে লোকে আসে আদিনাথ দর্শন করতে, শিবরাত্রির সময় বড় মেলা হয়।
কাউখালি নদী যেখানে এসে সমুদ্রে পড়ল, তার ডাইনে প্রায় মাইল দুই দূরে আদিনাথ পাহাড় সমুদ্র থেকে উঠেচে, আর ঠিক সামনে অদূরেই একটা বড় চড়ার মতো কি দেখা যাচ্চে। মাঝিকে বললুম—ওটা কি চড়া পড়েছে?
মাঝি বললে—না বাবু, ওটা সোনাদিয়া দ্বীপ। ভাঁটার পরে ওখানে অনেক কড়ি, শাঁক, ঝিনুক পড়ে থাকে।
শুনে আমার লোভ হল।
মাঝিকে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে বললুম। মাঝি একবার কি একটা আপত্তি করলে, আমি ভালো বুঝলুম না ওর কথা…
সোনাদিয়া দ্বীপে যখন সাম্পান ভিড়ালো তখন জ্যোৎস্না উঠেছে… গাছপালা নেই, বাড়িঘর তো নেই-ই… কিন্তু সে কি সুন্দর জায়গা! অতটুকু বালির চড়া বেষ্টন করে চারিধারে অকূল জলরাশি, জ্যোৎস্নালোকে দূরের তটরেখা মিলিয়ে গিয়েছে।… সুতরাং আমার অনুভূতির কাছে প্রশান্ত মহাসমুদ্রের বুকে যে-কোনো জনহীন দ্বীপই বা কি, আর কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল থেকে মাত্র দু মাইল দূরের সোনাদিয়া দ্বীপই বা কি, আমাদের গ্রামের মাঠে বসে বৈকালে আকাশের দিকে চেয়ে মেঘস্তূপের মায়ায় রচিত তুষারমৌলী হিমালয়ের গৌরীশঙ্কর শৃঙ্গ কি ত্রিশূল কতদিন প্রত্যক্ষ করিনি কি!
ঝিনুক ও কড়ি যথেষ্ট পরিমাণে ছড়িয়ে আছে সারা চড়ার ওপরে। আর আছে এক ধরনের লাল কাঁকড়া। বালির মধ্যে এরা ছোট ছোট গর্ত করে গর্তের মুখে চুপ করে বসে আছে, মানুষের পায়ের শব্দ পেলে তাড়াতাড়ি গর্তের মধ্যে ঢুকে পড়ে।
বোধ হয় ঘণ্টাখানেক কেটে থাকবে—এমন সময় সাম্পানের মাঝি বললে-বাবু, শিগগির নৌকোয় উঠে বসুন জোয়ার আসচে...!
ওর গলায় ভয়ের সুর। বিস্মিত হয়ে বললুম—কেন, কি হয়েছে? মাঝি বললে—সোনাদিয়া দ্বীপ জোয়ারের সময় ডুবে যায় সাঁতার জানলেও অনেকে ডুবে মরেছে।
বলে কি। শেষকালে বেঘোরে ডুবে মরতে রাজি নই! একটু বেশি তাড়াতাড়ি করেই সাম্পানে উঠলুম। বড় বড় ঢেউ সোনাদিয়া চড়ায় আছাড় খেয়ে পড়তে লাগলো—তার আগেই আমরা চড়া থেকে দূরে চলে এসেচি।
খানিক দূর এসে সমুদ্রের মধ্যে কুয়াশা নামলো… কুয়াশা এমন ঘন যে অত বড় আদিনাথ পাহাড়টা বেমালুম অদৃশ্য হয়ে পড়েছে।
ঘণ্টাখানেক সাম্পান চলেছে কূলের দেখা নেই।
মাঝি কখনো বলে, ওই সামনে ভাঙা দেখা যাচ্ছে— কখনো বলে, আদিনাথ পাহাড়ের দিকে গিয়ে পড়ছি। আমার ভয় হল সে দিক ভুলে আদিনাথ পাহাড়ের দিকেই যাচ্চে আদিনাথের নীচে সমুদ্রের মধ্যে দু\'চারটি মাশেল থাকা অসম্ভব নয়, তাতে ধাক্কা মারলে সাম্পান চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতে বেশি দেরি লাগবে না…মাঝিও যেন একটু বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সে বললে-বাবু, আপনার কাছে দেশলাই আছে।
সাম্পানে মশাল আছে, একটা ধরিয়ে নিই। তাকে বললুম, মশাল কি হবে?
- মশাল জ্বালা দেখে অন্য নৌকো কি স্টিমার আমাদের দেখতে পাবে। একটা বিপদ আছে বাবু, এই পথ দিয়ে বড় জাহাজ রেঙ্গুন কি মংডু থেকে চাটগাঁ যায় কুয়াশার মধ্যে যদি থাকা লাগে তবে তো সাম্পান ডুবে যাবে—আর একটা বিপদ বাবু, মাঝে মাঝে বয়া আছে সমুদ্রের মধ্যে, তাদের মাথায় আলো জ্বলে - যদি কুনাশার মধ্যে আলো টের না পাই তবে বয়ার গায়েও থাকা লাগতে পারে
-ঠিক সেই কারণে তো আমাদের মশালও না দেখা যেতে পারে অন্য নৌকো বা স্টিমার থেকে? মাঝি সে কথার কোনো উত্তর দিলে না। আমি দেশলাই বার করে মাঝির হাতে দিতে যাব, এমন সময় কি একটা শব্দে চমকিত হয়ে বলে উঠলুম – কিসের শব্দ মাঝি?
মাঝির গলার সুর ভয়ে বিকৃত হয়ে উঠেছে—সে বলে উঠলো, বাবু, সাম্পানের কাঠ আঁকড়ে ধরুন জোর করে—সামনে পাহাড়—
একমুহূর্তে বুঝে ফেললুম আমাদের সংকটের গুরুত্ব। সামনে আদিনাথ পাহাড় দিক ভুল করে মাঝি সাম্পান নিয়ে এসেচে উত্তর-পূর্ব দিকে কিছুই চোখে দেখা যায় না।
ব্যাপার কি মাঝিও কিছু বলতে পারে না।
হঠাৎ আমার মনে হল ঠিক সামনেই কাউখালি নদী সমুদ্রে পড়ছে; কুয়াশা তখনও খুব ঘন, এসব কুয়াশা ক্রমে ক্রমে পাতলা হয় না, অতর্কিতে এক মুহূর্তে চলে যাবে। আমি মাঝিকে বললুম—মাঝি, নদীর মোহানা সামনে।
মাঝি বললে—বাবু, ও কাউখালি নয়, আদিনাথের ঝরনা, কুয়াশার মধ্যে ওই রকম দেখাচ্ছে, আমরা উত্তর দিকে যাচ্ছি ভেসে। এ জায়গাটা আরও ভয়ানক।
মাঝি আমাকে যাই বলুক, ভয়ের চেয়ে একধরনের অদ্ভূত আনন্দ বেশি করে দেখা দিয়েছে মনে। সমুদ্রে দিকহারা হয়ে সংকটাপন্ন হয়ে পড়বো এ তো বাল্যকালের স্বপ্ন ছিল। নাই বা হল খুব বেশি দূর… কিন্তু আমার অদৃষ্টে বেশি ঘটলো না। আদিনাথের নীচে কয়েকখানা জেলেডিঙি বাধা, আমাদের সাপানের আলো দেখতে পেয়েছিল। তাদের লোক মাঝিকে ডাক দিয়ে কি বললে, সেখানে অতি সহজেই আমাদের নৌকো ভিড়লো।
আরও আধ ঘন্টা পরে কুয়াশা কেটে গেল। সেই জ্যোৎস্নালোকিত সমুদ্রবক্ষে সাম্পান ছেড়ে আমরা এসে পৌঁছলুম কাউখালি মোহানায়। দূরের সমুদ্র স্থির নিস্তরঙ্গ, তটভূমির ঝাউয়ের সারির মধ্যে নৈশ বাতাসের মর্মরধ্বনি; বড় বড় ঢেউ যখন এসে ডাঙায় আছড়ে পড়ছে, তখন তাদের মাথায় যেন অসংখ্য জোনাকি জ্বলচে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বিভূতিভূষণের বানানরীতি অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে
উত্তাল সাগরে ঝড়ের কবলে
পথের পাঁচালী লেখার আগে বিভূতিভুষণ বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা পূর্ববঙ্গে ঘুরেছিলেন একবার। গোরক্ষণী সমিতির প্রচারকাজে তাঁকে নিয়োগ করেছিলেন এক মাড়োয়াড়ি ব্যবসায়ী। সেই সময় নানা বিচিত্র অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন। সেই সব কাহিনি লিপিবদ্ধ করেছিলেন তাঁর আত্মজৈবনিক উপন্যাস ‘অভিযাত্রিক’-এ। কক্সবাজারে গিয়ে সমুদ্রভ্রমণে বেরিয়ে পড়েছিলেন মৃত্যুর মুখে। সেই অভিজ্ঞতার কাহিনি হুবহু তুলে দেওয়া হলো পাঠকের জন্য।
কক্সবাজারে একদিন একটি ঘটনা ঘটেছিল। জীবনের সে এক বিপদজনক অভিজ্ঞতা—প্রাণ সংশয়ও ঘটতে পারত সেদিন। কক্সবাজারে সমুদ্রের ধারে সাগরবেলায় জোয়ার নেমে গেলে কড়ি, শঙ্খ, ঝিনুক ইত্যাদি কত পড়ে থাকে; বড় বড় সমুদ্রের ঢেউ এসে কূলে তুলে দেয়। জ্যোৎস্নাপক্ষের রাত্রি, কত রাত পর্যন্ত সেখানে একা চুপ করে বসে থাকি, যশোর জেলার একটি ক্ষুদ্র পল্লীগ্রাম থেকে কত দূর যেন চলে এসেছি, সেখানকার ক্ষুদ্র নদী ইছামতীর দুই পাড়ের বাঁশবনের কথা ভুলতে পারিনে, এত দূরে বসে দেশের স্বপ্ন দেখতে কী ভালোই যে লাগে!
কাউখালি বলে ছোট্ট একটি নদী বা খাল কক্সবাজারের পাশ দিয়ে এসে সমুদ্রে পড়েছে।
একদিন একখানা সাম্পান ভাড়া করে কাউখালি থেকে বার হয়ে সমুদ্রে বেড়াতে গেলুম।
মাঝি মাত্র একজন, চাটগাঁয়ের বুলিতে বললে, কতদূর যাবেন বাবু?—অনেক দূর, চলো সমুদ্রের মধ্যে। সন্ধের পর ফিরব—
—আদিনাথ যাবেন?
একটা ছোট পাহাড় সমুদ্রগর্ভ থেকে খাড়া উঠেছে—তার মাথায় আদিনাথ শিবের মন্দির। এ অঞ্চলের এটি একটি প্রসিদ্ধ তীর্থস্থান, অনেক দূর থেকে লোকে আসে আদিনাথ দর্শন করতে, শিবরাত্রির সময় বড় মেলা হয়।
কাউখালি নদী যেখানে এসে সমুদ্রে পড়ল, তার ডাইনে প্রায় মাইল দুই দূরে আদিনাথ পাহাড় সমুদ্র থেকে উঠেচে, আর ঠিক সামনে অদূরেই একটা বড় চড়ার মতো কি দেখা যাচ্চে। মাঝিকে বললুম—ওটা কি চড়া পড়েছে?
মাঝি বললে—না বাবু, ওটা সোনাদিয়া দ্বীপ। ভাঁটার পরে ওখানে অনেক কড়ি, শাঁক, ঝিনুক পড়ে থাকে।
শুনে আমার লোভ হল।
মাঝিকে সোনাদিয়া দ্বীপে যেতে বললুম। মাঝি একবার কি একটা আপত্তি করলে, আমি ভালো বুঝলুম না ওর কথা…
সোনাদিয়া দ্বীপে যখন সাম্পান ভিড়ালো তখন জ্যোৎস্না উঠেছে… গাছপালা নেই, বাড়িঘর তো নেই-ই… কিন্তু সে কি সুন্দর জায়গা! অতটুকু বালির চড়া বেষ্টন করে চারিধারে অকূল জলরাশি, জ্যোৎস্নালোকে দূরের তটরেখা মিলিয়ে গিয়েছে।… সুতরাং আমার অনুভূতির কাছে প্রশান্ত মহাসমুদ্রের বুকে যে-কোনো জনহীন দ্বীপই বা কি, আর কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূল থেকে মাত্র দু মাইল দূরের সোনাদিয়া দ্বীপই বা কি, আমাদের গ্রামের মাঠে বসে বৈকালে আকাশের দিকে চেয়ে মেঘস্তূপের মায়ায় রচিত তুষারমৌলী হিমালয়ের গৌরীশঙ্কর শৃঙ্গ কি ত্রিশূল কতদিন প্রত্যক্ষ করিনি কি!
ঝিনুক ও কড়ি যথেষ্ট পরিমাণে ছড়িয়ে আছে সারা চড়ার ওপরে। আর আছে এক ধরনের লাল কাঁকড়া। বালির মধ্যে এরা ছোট ছোট গর্ত করে গর্তের মুখে চুপ করে বসে আছে, মানুষের পায়ের শব্দ পেলে তাড়াতাড়ি গর্তের মধ্যে ঢুকে পড়ে।
বোধ হয় ঘণ্টাখানেক কেটে থাকবে—এমন সময় সাম্পানের মাঝি বললে-বাবু, শিগগির নৌকোয় উঠে বসুন জোয়ার আসচে...!
ওর গলায় ভয়ের সুর। বিস্মিত হয়ে বললুম—কেন, কি হয়েছে? মাঝি বললে—সোনাদিয়া দ্বীপ জোয়ারের সময় ডুবে যায় সাঁতার জানলেও অনেকে ডুবে মরেছে।
বলে কি। শেষকালে বেঘোরে ডুবে মরতে রাজি নই! একটু বেশি তাড়াতাড়ি করেই সাম্পানে উঠলুম। বড় বড় ঢেউ সোনাদিয়া চড়ায় আছাড় খেয়ে পড়তে লাগলো—তার আগেই আমরা চড়া থেকে দূরে চলে এসেচি।
খানিক দূর এসে সমুদ্রের মধ্যে কুয়াশা নামলো… কুয়াশা এমন ঘন যে অত বড় আদিনাথ পাহাড়টা বেমালুম অদৃশ্য হয়ে পড়েছে।
ঘণ্টাখানেক সাম্পান চলেছে কূলের দেখা নেই।
মাঝি কখনো বলে, ওই সামনে ভাঙা দেখা যাচ্ছে— কখনো বলে, আদিনাথ পাহাড়ের দিকে গিয়ে পড়ছি। আমার ভয় হল সে দিক ভুলে আদিনাথ পাহাড়ের দিকেই যাচ্চে আদিনাথের নীচে সমুদ্রের মধ্যে দু\'চারটি মাশেল থাকা অসম্ভব নয়, তাতে ধাক্কা মারলে সাম্পান চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতে বেশি দেরি লাগবে না…মাঝিও যেন একটু বিপন্ন হয়ে পড়েছে। সে বললে-বাবু, আপনার কাছে দেশলাই আছে।
সাম্পানে মশাল আছে, একটা ধরিয়ে নিই। তাকে বললুম, মশাল কি হবে?
- মশাল জ্বালা দেখে অন্য নৌকো কি স্টিমার আমাদের দেখতে পাবে। একটা বিপদ আছে বাবু, এই পথ দিয়ে বড় জাহাজ রেঙ্গুন কি মংডু থেকে চাটগাঁ যায় কুয়াশার মধ্যে যদি থাকা লাগে তবে তো সাম্পান ডুবে যাবে—আর একটা বিপদ বাবু, মাঝে মাঝে বয়া আছে সমুদ্রের মধ্যে, তাদের মাথায় আলো জ্বলে - যদি কুনাশার মধ্যে আলো টের না পাই তবে বয়ার গায়েও থাকা লাগতে পারে
-ঠিক সেই কারণে তো আমাদের মশালও না দেখা যেতে পারে অন্য নৌকো বা স্টিমার থেকে? মাঝি সে কথার কোনো উত্তর দিলে না। আমি দেশলাই বার করে মাঝির হাতে দিতে যাব, এমন সময় কি একটা শব্দে চমকিত হয়ে বলে উঠলুম – কিসের শব্দ মাঝি?
মাঝির গলার সুর ভয়ে বিকৃত হয়ে উঠেছে—সে বলে উঠলো, বাবু, সাম্পানের কাঠ আঁকড়ে ধরুন জোর করে—সামনে পাহাড়—
একমুহূর্তে বুঝে ফেললুম আমাদের সংকটের গুরুত্ব। সামনে আদিনাথ পাহাড় দিক ভুল করে মাঝি সাম্পান নিয়ে এসেচে উত্তর-পূর্ব দিকে কিছুই চোখে দেখা যায় না।
ব্যাপার কি মাঝিও কিছু বলতে পারে না।
হঠাৎ আমার মনে হল ঠিক সামনেই কাউখালি নদী সমুদ্রে পড়ছে; কুয়াশা তখনও খুব ঘন, এসব কুয়াশা ক্রমে ক্রমে পাতলা হয় না, অতর্কিতে এক মুহূর্তে চলে যাবে। আমি মাঝিকে বললুম—মাঝি, নদীর মোহানা সামনে।
মাঝি বললে—বাবু, ও কাউখালি নয়, আদিনাথের ঝরনা, কুয়াশার মধ্যে ওই রকম দেখাচ্ছে, আমরা উত্তর দিকে যাচ্ছি ভেসে। এ জায়গাটা আরও ভয়ানক।
মাঝি আমাকে যাই বলুক, ভয়ের চেয়ে একধরনের অদ্ভূত আনন্দ বেশি করে দেখা দিয়েছে মনে। সমুদ্রে দিকহারা হয়ে সংকটাপন্ন হয়ে পড়বো এ তো বাল্যকালের স্বপ্ন ছিল। নাই বা হল খুব বেশি দূর… কিন্তু আমার অদৃষ্টে বেশি ঘটলো না। আদিনাথের নীচে কয়েকখানা জেলেডিঙি বাধা, আমাদের সাপানের আলো দেখতে পেয়েছিল। তাদের লোক মাঝিকে ডাক দিয়ে কি বললে, সেখানে অতি সহজেই আমাদের নৌকো ভিড়লো।
আরও আধ ঘন্টা পরে কুয়াশা কেটে গেল। সেই জ্যোৎস্নালোকিত সমুদ্রবক্ষে সাম্পান ছেড়ে আমরা এসে পৌঁছলুম কাউখালি মোহানায়। দূরের সমুদ্র স্থির নিস্তরঙ্গ, তটভূমির ঝাউয়ের সারির মধ্যে নৈশ বাতাসের মর্মরধ্বনি; বড় বড় ঢেউ যখন এসে ডাঙায় আছড়ে পড়ছে, তখন তাদের মাথায় যেন অসংখ্য জোনাকি জ্বলচে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য: বিভূতিভূষণের বানানরীতি অক্ষুণ্ণ রাখা হয়েছে
',tags:[{name:"সাহিত্য",slug:"sahitya",id:102,tagtitle:"",tagdescriptions:"",image:null,meta_title:"",meta_descriptions:""},{name:"সাহিত্যের ইতিহাস",slug:"literature-history",id:181,tagtitle:"",tagdescriptions:"",image:null,meta_title:"",meta_descriptions:""}],news_slug:"ueetkpovyb",story_type:"Story",watermark:null}}},video:{},photo:{},home:{loading:"IDLE",collections:[],error:null},section:{},tag:{},author:{}}