top ad image
top ad image
home iconarrow iconফিচার

পাখি

সিঁদুররঙা লাল মুনিয়া

সিঁদুররঙা লাল মুনিয়া
লাল মুনিয়ার এই ছবিটি এঁকেছে চ্যাটজিপিটি

সিঁদুর রাঙা লাল মুনিয়া

ঘাসের জঙ্গল- কাঁশফুলের ঘাস। মাঝে মাঝে মটমটিয়ার ঝোপ, দুয়েকটা কড়ইগাছ মাথা উঁচু করে আছে। এ যেন এক টুকরো আফ্রিকা— যেন সাভান্না ঘাসের ত্ররীণভূমি। এক দল ঘুঘু চরছে ঘাস জমিতে। মাঝে মাঝে বাংলা বুলবুলির ঝাঁক দোল খাচ্ছে, বড় বড় কাঁশঝোপের ডাঁটায় বসে। পাকড়া শালিক আছে, চড়ুই আছে। বিদ্যুতের তারে ল্যাঞ্জা লাটোরা আছে ঝিম মেরে—সুযোগ পেলেই ছোট পাখিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। সুযোগের সন্ধানে আছে তামাপিঠ লাটোরাও। হিংস্রতার কারণেই লাটোরাদের আরেক নাম কসাই পাখি। হঠাৎ সূর্য মুখ লুকাল মেঘের আড়ালে। ঘাস। মাঝে মাঝে মটমটিয়ার ঝোপ, দুয়েকটা কড়ইগাছ মাথা উঁচু করে আছে। এ যেন এক টুকরো আফ্রিকা— যেন সাভান্না ঘাসের ত্ররীণভূমি। এক দল ঘুঘু চরছে ঘাস জমিতে। মাঝে মাঝে বাংলা বুলবুলির ঝাঁক দোল খাচ্ছে, বড় বড় কাঁশঝোপের ডাঁটায় বসে। পাকড়া শালিক আছে, চড়ুই আছে। বিদ্যুতের তারে ল্যাঞ্জা লাটোরা আছে ঝিম মেরে—সুযোগ পেলেই ছোট পাখিদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। সুযোগের সন্ধানে আছে তামাপিঠ লাটোরাও। হিংস্রতার কারণেই লাটোরাদের আরেক নাম কসাই পাখি। হঠাৎ সূর্য মুখ লুকাল মেঘের আড়ালে।

কাঁশফুলের ঘাস এখানে আরও ঘন হয়েছে। দূরে, আরও দূরে কি তবে ছোট পাখিরা আছে?

হঠাৎ একটা ল্যাঞ্জা লাটোরাকে দেখা গেল শাঁ করে ডাইভ দিতে। বহুদূরে! কার দিকে তেড়ে গেল? ল্যাঞ্জা লাটোরার মতো দেখতে কিন্তু আকারে ছোট আরেকটা পাখি। দুপ্রজাতির লাটোরা একই জায়গায় যখন, নিশ্চয়ই ওখানে ওদের খাদ্যের জোগান আছে। ছোটছোট পাখি লাটোরাদের প্রিয় খাবার। খুঁজে-পেতে একঝাঁক খুদে পাখির দেকজ। এদেরকে বিরক্ত করছে ছোট্ট লাটোরাটা।

দূর থেকে দেখে মনে হয়েছিল ঝাঁকটা তিলা মুনিয়ার। কিন্তু সূর্য তখন আবার মুখ বের করেছে, সেই নরম আলোয় এক ঝলক লালচে আভা দেখে হৃদয়টা নড়ে উঠল। লাল মুনিয়াই ওটা।

লাল মুনিয়া এদেশের আবাসিক পাখি। তবে এখন অনেকটাই বিরল। দেশের মাত্র তিনটি অঞ্চলে দেখা মেলে—ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেট। ঢাকার আফতাবনগর, কেরাণীগঞ্জ, পূর্বাচল, দিয়াবাড়ী ও বসুন্ধরা আবাসিল এলাকার ঘাসের জঙ্গলে এদের দেখা যায়।

আকারে চড়ুইয়ের চেয়ে ছোট। চড়ুইয়ের মতো শক্ত-খাটো-মোটা ঠোঁট। সাধারণত শস্যভোজী পাখিদেরই এমন ঠোঁট দেখা যায়। এরা ঘাসের বীজ ও শস্য দানা খায়। নদী বা জলাশয়ের পাশে ঘাসজমিতে বিচরণ করে। প্রজননকাল মে থেকে ফেব্রুয়ারি মাস। বড় বড় ঘাসের গোড়ার দিকে বাসা বানায়। একবারে ৫-৬টি ডিম পাড়ে। ১২ থেকে ১৬ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে ছানা জন্ম নেয়। ২০ থেকে ২৪ দিন বয়স হলে ছানারা উড়তে শেখে।

পুরষ আর স্ত্রী পাখির মধ্যে রঙের পার্থক্য আছে। অবশ্য প্রজনন মৌসুমেই পার্থক্যটা বেশি দেখা যায়। অন্য সময় রঙ প্রায় কাছাকাছি। অর্থাৎ অন্য মৌসুমে গাঢ় লাল রঙটা থাকে না পুরুষ পাখির দেহে।

প্রজনন মৌসুমে পুরুষের গায়ের রঙ গাঢ় লাল। তবে ডানা গাঢ় বা বাদামি রঙের। চোখের চারপাশ, তলপেট ও লেজ কালো রঙের। বুক, ডানা ও দেহের দুপাশে সাদা রঙের ফোঁটা থাকে। এ সময় ঠোঁট সিঁদুর লাল, পা ও পাতা গোলাপি রঙের হয়।

প্রজনন মৌসুম ছাড়া অন্য সময় পুরুষ ও স্ত্রী পাখির রঙ মোটামুটি একই। তখন শরীরের ওপরের অংশ হালকা ধূসর-বাদামি, লেজ কালেচে, লেজের নিচের দিকটা লাল। পেটের নিচের অংশ সাদাটে। ঠোঁট কালো রঙের।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাতেই এদের দেখা যায়। এদের ইংরজি নাম Red munia, Strawberry finch ও Red avadavat। বৈজ্ঞানিক নাম : Amandava amandava।

r1 ad
r1 ad