ঐতিহ্য
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা
ভাঙা ঘরের ভাঙা বেড়া, ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে যে অবাক জোছনা ঘরে ঢুকে পড়ে, তা যেমন হুমায়ূন আহমেদকে ব্যাকুল করেছে, যুগে যুগে বাংলার অজস্র কিশোরের শৈশবে রং লাগিয়েছে। সেই ভাঙা বেড়া, ভাঙা ঘর আসলে দারিদ্র্যের প্রতীক।
পাকা ঘর করার সামর্থ্য যেমন বেশির ভাগ মানুষের ছিল না, তেমনি সুন্দর একটা মাটির ঘর করার সামর্থ্যও সবার হতো না। মাথা তো গুঁজতে হবে, তাই হতদরিদ্ররা গৃহস্থের কাছ থেকে বাঁশ কঞ্চি চেয়ে এনে বানাত শোবার ঘর। বাঁশের চটা বা ছেঁচা তল্লাবাঁশ কিংবা কঞ্চি অথবা পাটখড়ি দিয়ে তৈরি হতো ঘরের বেড়া। তালপাতা বা গোলপাতা ব্যবহার হত কদাচিৎ। ঘরে জানালা থাকত, ঘুলঘুলির মতো। চাটাই বুনে বানানো নেট জানালায়, যেন বাতাসটা ঢুকতে পারে। বর্ষা বা শীতের সময় কাপড় দিয়ে বন্ধ করা হতো পানি বা শীতের হাওয়া ঢোকার রাস্তা।
এর ওপরে একটাই মাত্র চাল। ধানের খড় বা পাটখড়ি বা তার ওপরে হয়তো এক পরত পলিথিন শিট। এভাবে যে ঘর তৈরি হতো, তা গৃহস্থের গোয়াল বা খটির ঘরের থেকেও নিম্নমানের। যেটিকে গ্রাম বাংলায় ছাবড়া বা ছাপরা ঘর বলে। এ ধরনের ঘর এখনো আছে গোটা দেশেই। যত দিন দেশে দারিদ্র্য থাকবে তত দিন এসব ঘর টিকে থাকবে।