উন্নতির অবকাশ থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হওয়ার সুযোগ থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিকে সন্তোষজনক বলেই মনে করছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এখনো যে পরিস্থিতি, আগের মতোই অবস্থা। আমি বলব, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক (স্যাটিসফ্যাকটরি)। তবে এটার উন্নতি করার অবকাশ রয়ে গেছে।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই গণমাধ্যমে একই ধরনের খবর লেখা হয় উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপারে কোনো মিডিয়ায় এমন লেখে নাই যে এ বছর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো। আমি নিজের একসময় সাংবাদিকতা করেছি, মর্নিং নিউজে ছিলাম। আমরাও কোনো দিন এমন নিউজ করি নাই।
আগের সময়ের সঙ্গে এখনকার সময়ের পার্থক্য তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, গতকাল বনশ্রীতে যে ঘটনাটা ঘটল, এটা হয়তো আগে আমাদের জানতে দুই দিন সময় লেগে যেত। এখন সঙ্গে সঙ্গে জানা যায়। এ জন্য আমরা ভাবছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বুঝি খুব বড় ধরনের কোনো রকম... হয়ে গেছে। এই ছোটখাটো ঘটনা আগেও ঘটেছে, দুয়েকদিন আগেও ঘটেছে। ভবিষ্যতে যেন না ঘটে, এ জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া সে ব্যাপারে আমাদের আলোচনা হয়েছে। আমরা চাই না, এ ধরনের একটা ঘটনাও ঘটুক।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, তাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) নির্দেশনা দিয়েছি। আপনারা আজ রাতে দেখবেন, আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা (অ্যাক্টিভিটিজ) অনেক বেড়ে গেছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ডেভিল হান্ট অপারেশনটা করা হয়েছে, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে যেন তাড়াতাড়ি অ্যাকশন নেওয়া যায় সে কারণে। রাজশাহীতে যে ঘটনা (বাসে ডাকাতি ও যৌন নিপীড়ন) ঘটেছে, সঙ্গে সঙ্গে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যে ওসিরা মামলা নিতে বিলম্ব করেছে, তাদের কিন্তু আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।
উপদেষ্টা বলেন, তাদের আমরা সাসপেন্ড করে দিয়েছি। অন্য সময় হলে কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হতো না। একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে অনেক সিনিয়র অফিসারকেও ক্লোজ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন— এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আমার কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে। আমার দাফনও তো হয়ে গেছে। পদত্যাগ তো কম হইছে!
গভীর রাতে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আগের সিস্টেমে হলে রাত আড়াইটায় আপনাদের (গণমাধ্যম কর্মী) কাউকে খুঁজে পেতাম না। আমি আধা ঘণ্টা আগে বলেছি, আপনারা সবাই হাজির হয়েছেন। আমরা জানি, দিনরাত আপনারা কাজ করে যাচ্ছেন। আমি এটাও আপনাদের বোঝাতে চেয়েছি, আমরাও দিনরাত সবসময় কাজ করে যাচ্ছি। এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শুধু দিনে ব্রিফ করে না, দরকার হলে সে রাতেও ব্রিফ করে।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে আশ্বস্ত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা কমিটি নিয়ে এই মিটিংটা করলাম। তাদের আমি দিকনির্দেশনা দিয়েছি, তারা যেন সন্ধ্যার পর থেকেই কাজ শুরু করে। আপনারা সন্ধ্যার পর থেকেই টের পাবেন।