উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ১৩, সিদ্ধান্ত মানেননি ১৬ জন

প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্তত ১৩ জন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিন চেয়ারম্যান, তিন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৭ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান।
অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ভোটের মাঠে রয়েছেন সরকারের মন্ত্রী ও এমপিদের ১৬ আত্মীয়-স্বজন। সোমবার প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলা নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার শেষে এসব তথ্য জানা যায়।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় তিন পদে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ১৯৮ জন প্রার্থী। ১ হাজার ৬৯৩ জন প্রার্থী আগামী ৮ মে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে তিন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বাগেরহাট সদর, মুন্সীগঞ্জ সদর ও নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এদিকে সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয় প্রার্থী যারা তাদের মধ্যে ১৬ জন দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেছেন বলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাচনে নিজ ছেলেকে ভোট না দিলে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী।
জেলার সুবর্ণচর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন এমপিপুত্র আতাহার ইশরাক শাবাব চৌধুরী। তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। ওই উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনাম সেলিম।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী অমি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে সরে দাঁড়ান আয়েশা ফেরদাউস। এতে ছেলে আশিক আলী অমি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল রাজ্জাকের দুই ভাই প্রার্থী হয়েছেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায়। খালাতো ভাই হারুনার রশীদ হীরা ও মামাতো ভাই খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম তপন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি।
দলের আরেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাহজাহান খানের ছেলে আসিবুর রহমান খান মাদারীপুর সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী। তিনিও প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। যদিও শাহজাহান খান রাজৈর উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য।
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলামের দুই চাচা চেয়ারম্যান প্রার্থী। মোহাম্মদ আলী ও সফিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি।
বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নানের আত্মীয় দুই উপজেলায়। সারিয়াকান্দিতে ছেলে শাখাওয়াত হোসেন আর সোনাতলায় ভাই মিনহাদুজ্জামান। পাবনার বেড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর ছোট ভাই আব্দুল বাতেন ও ভাতিজা আব্দুল কাদের সবুজ।
পিরোজপুরের নাজিরপুরে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি এস এম নূরে আলম সিদ্দিকী। তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের ছোট ভাই। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় রাশেদ ইউসুফ জুয়েল প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়ের চাচাতো ভাই।
নরসিংদীর পলাশে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলিপের স্ত্রীর বড় ভাই শরীফুল হক প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় ভোটের মাঠে রয়ে গেছেন সংসদ সদস্য আলী আজগর টগরের ভাই আলী মুনসুর।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় সাবেক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের ভাগনে সোয়েব আহমদ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। এদিকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক ও মাগুরার সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারের ভাই।