২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব : গণতন্ত্র মঞ্চে
কাজের গতি থাকলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ২০২৫ এর মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন গণতন্ত্র মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু কল্যাণ ভবনে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়।
মঞ্চের নেতারা বলেন, সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হলে জাতীয় নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। বাতিল হওয়া স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদের পুনর্বাসনের কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন গণতন্ত্র মঞ্চ। সরকারি পদ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হককে প্রতিহিংসামূলক মামলায় জড়িয়ে জেলে পোরা হয়েছে বলে অবিযোগ করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের কেন্দ্রীয় নেতারা অন্তবর্তী সরকার সরকার প্রধান কর্তৃক জাতীয় নির্বাচন ও জাতীয় ঐক্যমত সংক্রান্ত কমিশন গঠনের ধারণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, সরকারের কাজের গতি ও দক্ষতা থাকলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ২০২৫ সালের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব। তারা গত বুধবার উচ্চ আদালত কর্তৃক সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কয়েকটি ধারা বাতিল সংক্রান্ত রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন এই রায়ের মধ্য দিয়ে সংবিধানে জাতীয় নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হলো।
আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ার উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং বলেন বাস্তবে প্রশাসনে স্থবিরতা চলছে। একশ্রেণীর আমলারা ব্যক্তিগত এজেন্ডা ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই ব্যস্ত রয়েছে বলেও মনে করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
নেতৃবৃন্দ, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মহিবুল হককে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গ্রেফতারের ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন।
তারা বলেন, চার বছর আগে অবসরে যাওয়া মহিবুল হককে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিরোধী দলসমূহের মহাসমাবেশে এক হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বাদি আদালতে উপস্থিত হয়ে তার মামলার সাথে মহিবুল হকের কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা না থাকার কথা জানিয়ে হলফনামা দিলেও গত একমাসে তার জামিন হয়নি। তিনি যাতে জামিনে ছাড়া না পান তার জন্য ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে এক নিহতের মামলায়ও তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
তারা আরো বলেন, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই সরকারি পদ ও ক্ষমতা ব্যবহার করে মহিবুল হককে অন্যায়ভাবে জেলে পুরে রাখা হয়েছে।তারা বলেন এই ধরনের হয়রানিমূলক প্রতিশোধাত্বক মামলা চলতে থাকলে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যেতে পারে। নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আইনানুগভাবে মহিবুল হকের মুক্তি দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাইফুল হক বলেন, অন্তবর্তী সরকারের উপর মানুষের বিপুল প্রত্যাশা। তারা যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে তাদের দলনিরপেক্ষতা হারান তাহলে তাদের অধীনে জাতীয় নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তিনি রাজনৈতিক দলসমূহসহ সবাইকে আস্থায় নিয়ে সরকারকে সংস্কার,জাতীয় নির্বাচনসহ দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা নিশ্চিত করার আহবান জানান।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বিশেষ কোন দিকে ঝুঁকে না পড়ে সরকারকে দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করার আহবান জানান। তিনি বাতিল হওয়া স্থানীয় পরিষদের কাউন্সিলরদেরকে পুনর্বহাল করার তৎপরতায় তীব্র প্রতিবাদ জানান এবং বলেন, এইভাবে পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির দোসরেরা আবার পুনর্বাসিত হবে।তিনি এসব তৎপরতা বন্ধের দাবি জানান।
ভাষানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তির গোটা প্রশাসন অক্ষুন্ন রেখে গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় দেশ এগিয়ে নেয়া যাবেনা। তিনি বলেন, আমলাদের শোধ প্রতিশোধের তৎপরতা সরকারকে বিপদে ফেলে দিতে পারে।
জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, সংস্কার ছাড়া গতানুগতিক নির্বাচন দিয়ে দেশ এগুতে পারবেনা।তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন।
গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল বলেন, গণঅভ্যুত্থানের সংগঠকেরা গুপ্ত হত্যার শিকার হচ্ছেন। তিনি গণঅভ্যুত্থানের সংগঠকদের নিরাপত্তা সহ জনগণের জান মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।