top ad image
top ad image
home iconarrow iconঘরের রাজনীতি

নারীদের অধিকার লঙ্ঘনে জড়িত হলে ব্যবস্থা নেবে সরকার

নারীদের অধিকার লঙ্ঘনে জড়িত হলে ব্যবস্থা নেবে সরকার
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সরকারি লোগো

সাম্প্রতিক সময়ে দেশের নারীদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ার কয়েকটি ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধের সঙ্গে বা নারীদের অধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে কেউ জড়িত হলে সরকার তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সরকার জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে সম্প্রতি মেয়েদের দুটি ফুটবল ম্যাচ পরিচালনার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে সরকার।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নারীরা বাংলাদেশের নাগরিক এবং পুরুষদের মতোই সমানভাবে মানবিক ও নাগরিক অধিকার ভোগ করে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশি নাগরিকদের পূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। কেউ নারীদের অধিকার লঙ্ঘন করার মতো ঘটনায় সম্পৃক্ত হলে বা এ ধরনের বেআইনি বিধিনিষেধ আরোপের সঙ্গে যুক্ত হলে তিনি বা তারা দেশের প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থার মধ্যে পড়বেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেকোনো গোষ্ঠীর নাগরিকদের প্রতি বৈষম্য বা নিপীড়নের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এরই মধ্যে দিনাজপুর ও জয়পুরহাট জেলা প্রশাসনকে স্থগিত ফুটবল ম্যাচ পুনরায় চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। জেলা প্রশাসকরা জানিয়েছেন, তারা সম্প্রতি তাদের জেলায় নারী ফুটবল, ক্রিকেট ও কাবাডি ম্যাচ আয়োজন করেছেন। শত শত মানুষ ম্যাচগুলো উপভোগ করেছেন এবং তাদের জেলার সব শ্রেণির মানুষ এসব আয়োজনের প্রশংসা করেছেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নারী অধিকারের পক্ষের একজন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের ৯০ শতাংশেরও বেশি মালিকানা ছিল নারীদের। গত সপ্তাহে তিনি ফিফা প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে দেখা করে বাংলাদেশে নারী ফুটবলারদের জন্য অবকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা তৈরিতে তার সহায়তাও চেয়েছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, গত এক মাসে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দেশে বড় পরিসরে যুব উৎসব আয়োজন করেছে। এর আওতায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় নারী খেলোয়াড়দের জন্য নানা ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত ছিল। অনেক প্রত্যন্ত গ্রামীণ জেলাতেও হাজার হাজার মেয়ে ফুটবল, ক্রিকেট ও কাবাডি ম্যাচে অংশ নেয়।

এর আগে গতকাল বুধবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার তিলকপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মেয়েদের একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল। তবে এর আগের দিন মঙ্গলবার বিকেলে ওই মাঠের চারপাশে দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এলাকার ‘বিক্ষুব্ধ মুসল্লিরা’ জড়ো হয়ে এই ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এর আগে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল ও কালিহাতী শাখার আপত্তির মুখে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের টিন মার্কেট শোরুমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি চিত্রনায়িকা পরীমনি। গত ২৫ জানুয়ারি পরীমনির ওই শোরুম উদ্বোধন করার কথা ছিল।

এ ছাড়া গত ২ নভেম্বর চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে একটি শোরুম উদ্বোধনে অংশ নেওয়ার কথা ছিল আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর। তবে মেহজাবিন উপস্থিত হলে ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও তাওহীদি জনতা’ প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দিলে শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে আর মেহজাবিনের যোগ দেওয়া হয়নি।

সাম্প্রতিক সময়ের এসব ঘটনা অনলাইন-অফলাইনে বহুল আলোচিত-সমালোচিত হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা নারী অধিকারের অন্তরায় এবং এর মাধ্যমে নারীদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলে বিবৃতি দিয়েছে নারী অধিকার ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এ ধরনের বাধা-প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছে সংগঠনগুলো।

r1 ad
r1 ad
top ad image