top ad image
top ad image
home iconarrow iconঅর্থের রাজনীতি

তৃতীয় প্রান্তিকে শাহজিবাজার পাওয়ারের আয়ে উল্লম্ফন

তৃতীয় প্রান্তিকে শাহজিবাজার পাওয়ারের আয়ে উল্লম্ফন

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (এসপিসিএল) আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের ঘাটতি কাটিয়ে তৃতীয় প্রান্তিকে ভালো আয় করেছে। শাহজিবাজার পাওয়ারের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি লিমিটেড পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়ায় মূলত এ আয় এসেছে। যদিও কোম্পানির পক্ষ থেকে এ আয়কে স্বাভাবিক আয়ই বলা হচ্ছে।

শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি চলতি (২০২৩-২৪) হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ২২ পয়সা। এ আয় আগের হিসাব বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৩ পয়সা বা ৫৯ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৩৯ পয়সা।

তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি হিসাব বছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ৯ মাস বা তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৮ পয়সা।

আলোচিত তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ৩২ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা। চলতি বছরের ৩১ মার্চ কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৩৮ পয়সা। যা গত বছরের ৩০ জুন ছিল ৩৬ টাকা ৭১ পয়সা।

এ ছাড়া ২০২১-২২ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫ টাকা ৪৮ পয়সা। যা আগের ২০২০-২১ হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৪ টাকা ৫৩ পয়সা।

চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৩৩ পয়সা। কোম্পানিটির চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২৪ পয়সা। যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪২ পয়সা। এর থেকে দেখা যাচ্ছে কোম্পানিটি আগের সময়ের চেয়ে ধারাবাহিক মুনাফায় ফিরছে। ফলে এই কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আলাদা নজর রয়েছে।

এ ব্যাপারে শাহজীবাজার পাওয়ারের কোম্পানি সচিব ইয়াসিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে সাবসিডিয়ারি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান আছে এটা তার স্বাভাবিক ইনকামে ফিরেছে। গত প্রান্তিকে আয় যেটা কমে গিয়েছিল এ প্রান্তিকে সেখানেই আবার ফিরেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এটা তো ফিক্সড ক্যাপাসিটি বিজনেস। তাই খুব বেশি এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ থাকে না। মাঝেমধ্যে যখন পুরো ক্ষমতা দিয়ে পরিচালিত করা যায় না তখন এর প্রভাব আয়ের মধ্যে পড়ে। আয় ও মুনাফা কমে যায়। আবার যখন পুরো ক্ষমতা দিয়ে পরিচালিত হয় তখন আবার বাড়ে। তাই বলা যায় আগে যেটা কমে গিয়েছিল এখন সেখানেই আবার ফিরেছে।’

তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের পর্ষদ। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ৫২ পয়সা। বছরটি শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ৭১ পয়সা।

২০২২ হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের মোট ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এরমধ্যে বিনিয়োগকারীদের ১৬ শতাংশ দেয়া হয় নগদ লভ্যাংশ আর ৪ শতাংশ বোনাস। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৪ টাকা ৩০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৮ টাকা ১৯ পয়সায়।

২০২১ হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মোট ৩৪ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার। এরমধ্যে ২৮ শতাংশই ছিল নগদ লভ্যাংশ আর ৪ শতাংশ বোনাস। এসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৮ টাকা ৫ পয়সা। এর আগের ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটি তার বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এরমধ্যে ২৮ শতাংশ ছিল নগদ লভ্যাংশ আর ২ শতাংশ বোনাস। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৪ টাকা ৯৪ পয়সায়।

শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৮৬ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৪০৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ৩১ হাজার ৬২৯টি শেয়ার রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর অবস্থান করছে ৬৫ টাকা ৫০ পয়সায়।

শাহজিবাজার পাওয়ারের মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৫৯ দশমিক ২১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৬ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

r1 ad
top ad image