top ad image
top ad image
home iconarrow iconঅর্থের রাজনীতি

সিদ্ধান্ত পাল্টে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন

সিদ্ধান্ত পাল্টে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে দেশটিতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। কিন্তু দেড় মাসের মাথায় সেই অবস্থান থেকে সরে এসে নরম হয়েছে সরকার। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

আজ শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব সুলতানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। চিঠিতে বলা হয়, দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিভিন্ন রপ্তানিকারকের আবেদের ভিত্তিতে নির্ধারিত শর্তাবলি পালন সাপেক্ষে ৩ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হলো।

আগামী মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রপ্তানী-২ কক্ষ নম্বর ১২৭-এ আবেদন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর আবেদন করা হলে তা গ্রহণ করা হবে না। যাঁরা আগে আবেদন করেছেন, তাঁদের নতুন করে আবেদনের দরকার নেই বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবেশী ভারতে ইলিশ রপ্তানি বন্ধের কথা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বলে আসছিলেন নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। বাংলাদেশের মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তুলতেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

কয়েক দিন আগে এই উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেক মাছ এখনো বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাচ্ছে। এবার আমরা ইলিশকে সীমান্ত পার হতে দেব না।’

প্রতিবছরই বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পূজা উৎসবে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হতো। কিন্তু এবার দুর্গাপূজা ঘিরে পাতে ইলিশ না পাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিখ্যাত ‘ইলিশ কূটনীতির’ প্রসঙ্গটি টেনে অন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপের বিষয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আগের সরকার দুর্গাপূজার সময় নিষেধাজ্ঞা তুলে নিত। তারা এটাকে উপহার বলত। এবার আমি মনে করি না, আমাদের উপহার দেওয়ার দরকার আছে। কারণ, ভারতে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানির অনুমতি দিলে আমাদের লোকেরা মাছ খেতে পারবে না।’

হাসিনা সরকারের আমলে উৎসবের মৌসুমগুলোতে ভারতে বিপুল পরিমাণ মাছের চালান পাঠানো হয়েছে। সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কাছেও ইলিশ উপহার পাঠিয়েছেন তিনি। ২০১৭ সালে ভারতের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জিকেও ৩০ কেজি ইলিশ উপহার দেন শেখা হাসিনা।

কিন্তু, নজিরবিহীন ছাত্রবিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর ইলিশ নিয়ে বাংলাদেশের কূটনীতির সুর পাল্টে যায়। যদিও ভারতে ইলিশ না পাঠানোর কারণ হিসেবে বেশি ধরা না পড়া, খারাপ আবহাওয়া এবং স্থানীয় বাজারগুলোতে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলেছে নতুন সরকার।

বাংলাদেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশই ইলিশ। দেশের জিডিপিতে এটি প্রায় ১ শতাংশ অবদান রাখে। বাংলাদেশের জেলেরা বছরে ৬ লাখ টন ইলিশ ধরেন এবং এই মাছের বেশির ভাগই আসে সমুদ্র থেকে।

বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গজুড়ে বাঙালি সংস্কৃতি ও রন্ধনপ্রণালিতে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে ইলিশ মাছ। স্বাদ ও নানা ব্যবহারের জন্য এই মাছ প্রশংসিত। তাই ইলিশের অভাব হলে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উভয় অঞ্চলের মানুষের জন্যই এটি একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে।

বিগত বছরগুলোতে সরকার ভারতে দুর্গাপূজার সময় বছরে ৩ থেকে ৫ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।

r1 ad
r1 ad
top ad image