top ad image
top ad image
home iconarrow iconমাঠের রাজনীতি

রামেক হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতকের অস্ত্রোপচার

রামেক হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতকের অস্ত্রোপচার

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে তরুণ-তরুণীর ফেলে যাওয়া নবজাতকের জন্মগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। ফলে সোমবার রাতে শিশুটির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে। শিশুটিকে বর্তমানে সমাজসেবার অধীনে হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তির কাগজ আনার কথা বলে গত শনিবার বিকেলে রামেক হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে এক নবজাতককে ফেলে পালিয়ে গেছেন তরুণ-তরুণী। মঙ্গলবার পর্যন্ত আর ফিরে আসেননি বাবা-মা পরিচয় দেওয়া ওই দুই তরুণ-তরুণী। সেই নবজাতকের ঠাঁই হচ্ছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন ‘রাজশাহী ছোটমনি নিবাসে’। ইতোমধ্যেই রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে ছোটমনি নিবাস কর্তৃপক্ষের নিকট শিশুটিকে হস্তান্তর করেছে। তবে শিশুটির শারীরিক অবস্থা ভালো না থাকায় তাকে ছোটমনি নিবাসের এক মাদারের তত্ত্বাবধানে হাসপাতালের ৯নং ওয়ার্ডে (শিশু ওয়ার্ড) চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে ৯নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়ার্ডের ৩২ নম্বর বেডে নবজাতকটিকে স্যালাইন লাগিয়ে শুইয়ে রাখা হয়েছে। বেডের একপাশে সুমাইয়া খাতুন নামে ছোটমনি নিবাসের এক ‘কটেজ মাদার’ বসে আছেন। মূলত তিনি শিশুটিকে দেখভাল করছেন।

কটেজ মাদার সুমাইয়া বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে শিশুটিকে আমাদের (ছোটমনি নিবাস) নিকট হস্তান্তর করেছে। জন্মগতভাবেই শিশুটির গুহ্যদ্বার বন্ধ ছিল। সার্জারির মাধ্যমে গুহ্যদ্বারের লাইন বের করা হয়েছে। এজন্য শিশুটি বেশ অসুস্থ। নবজাতকটি আপাতত মুখে কিছু খাচ্ছে না। তাকে স্যালাইন লাগিয়ে রাখা হয়েছে। পরিপূর্ণ সুস্থ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে ছোটমনি নিবাসে নিয়ে যাওয়া হবে।’

রাজশাহী জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. হাছিনা মমতাজ বলেন, ‘শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমাদের হেফাজতে দেয়া হয়েছে। আমরা শিশুটিকে দেখভাল করছি। শিশুটিকে বাঁচানোই আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ। কারা শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গেছে সেটি পরে সম্ভব হলে পরে খুঁজে দেখবো। আপাতত আমরা শিশুটিকে কীভাবে বাঁচানো যায় সেই চেষ্টা করছি।’

রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএমএ শামীম আহাম্মদ বলেন, ‘শিশুটির জন্মগত (গুহ্যদ্বার ছিল না) ত্রুটি ছিল। এজন্য সোমবার অপারেশন করা হয়েছে। তাকে অফিসিয়ালি ছোটমনি নিবাসে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে সে ফিজিক্যালি রামেক হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ৩০ বছর বয়সী দুজন যুবক-যুবতি গত শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সদ্য ভূমিষ্ঠ ছেলে বাচ্চাকে শ্বাসকষ্টের কথা বলে হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে নিয়ে আসে। চিকিৎসা চলা অবস্থায় জরুরি বিভাগ থেকে ভর্তির কাগজ নিয়ে আসার নাম করে তারা চলে যায়। এরপর তারা আর (মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত) ফিরে আসেনি।’

হাসপাতাল পরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা হাসপাতালে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করেও দেখেছি। কিন্তু শিশুটিকে যারা রেখে গেছেন তাদের শনাক্ত করতে পারিনি। কেননা, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। এই ঘটনায় রাজপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।’

রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাহুল হক বলেন, ‘নবজাতক রেখে পালিয়ে গেছে এই মর্মে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একটি জিডি আমরা পেয়েছি। আমরা এটি কোর্টের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদপ্তরকে জানালে অধিদপ্তর শিশুটিকে দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছে। কারা শিশুটিকে রেখে গেছে তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।’

r1 ad
r1 ad