এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র সচিবকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে উঠেছে।
ভূঞাপুর ফাজিল মাদরাসায় এসএসসি (দাখিল) পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে এসি ল্যান্ড তাকে লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই কেন্দ্র সচিব। বলেছেন, এর আগে পিঠের চামড়া তুলে নেওয়ার হুমকিও দেন এসি ল্যান্ড।
এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে রোববার (২০ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের ছেলে আব্দুল ওয়ারেছ।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জমিয়াতুল মোদারেছিন উপজেলা শাখার সভাপতি আফছার উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুলসহ সংগঠনের অন্যরা সহায়ক পাঠ্য বইয়ের একটি কোম্পানি থেকে নেওয়া অর্থ আত্মসাত করলে অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহান এর প্রতিবাদ করেন। এই ক্ষোভে গত ১৬ মার্চ জামিয়াতুল সংগঠনের নেতারা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি অভিযোগ এনে চলমান এসএসসি দাখিল পরীক্ষার ভূঞাপুর ফাজিল মাদ্রাসার কেন্দ্র সচিব দায়িত্বের জন্য জমিয়াতুল সংগঠনের সভাপতি আফছার উদ্দিনকে মনোনয়ন করে।
এজাহারে বলা হয়েছে, গত ২৪ মার্চ এই মনোনয়নের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করলে পুনরায় গত ৮ এপ্রিল কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব বহালের রায় পান অধ্যক্ষ আব্দুছ ছোবহান। পরে ৯ এপ্রিল রায়ের কপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দিলে তারা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য এসি ল্যান্ডকে নির্দেশ দেন।
মাদরাসার সংশ্লিষ্টরা জানান, ওই রাতে সহকারী কমিশনার মাদরাসায় গিয়ে জানান, আফছার উদ্দিন-ই কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন এবং পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। অধ্যক্ষের পিঠের চামড়া তুলে নেওয়ার হুমকি দেন এসি ল্যান্ড।
পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব অবহেলা ও প্রশ্নপত্র কম থাকার অভিযোগে অধ্যক্ষসহ মোট ছয়জনকে আটক করেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অভিযোগ আরও বলা হয়, ঘটনার দিন কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের ওপর দায় চাপিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতত করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তারিকুল ইসলাম। এ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও সহকারী কমিশনারের বিচার দাবি করা হয়।
অধ্যক্ষ আব্দুস ছোবহানের ছেলে আব্দুল ওয়ারেছ বলেন, বাবার সঙ্গে কথা বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। এসি ল্যান্ড শুধু তাকে শারীরিক নির্যাতনই করেননি বরং তাকে অপমানও করেছেন। এ ছাড়া প্রশ্নপত্র বিতরণকারী নূরুল হুদার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে এসি ল্যান্ড তারিকুল ইসলাম বলেন, যেহেতু ডিসি স্যারের কাছে অভিযোগ করেছে, কতটুকু সত্য তদন্ত করে তারা দেখুক।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সঞ্চয় কুমার মহন্ত বলেন, এসি ল্যান্ডের বিরুদ্ধে এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। এটা নিয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।