দুপক্ষের সংঘর্ষ, বৈবিছাআ-এনসিপির ১২ নেতাকর্মী আহত

কুষ্টিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের (বৈবিছাআ) দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা কমিটির আহ্বায়ক হাসিবুর রহমান ও সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি কুষ্টিয়া জেলার নেতা সুলতান মারুফ।
রোববার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাটাইখানা মোড়ের সমবায় মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, আহত ১২ জন তাদের কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে ইব্রাহিম নামে একজনের জখম গুরুতর। বাকিদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল।
আহত অন্যরা হলেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আলভী, জুবায়ের, আফ্রিদি, নয়ন, আলী আহসান, সোহান ও রেজোয়ান এবং এনসিপির মুজাহিদ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী আবরার ফাহাদের নামে সমবায় মার্কেটে স্থাপিত লাইব্রেরির সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে কয়েকটি অটোরিকশায় করে বেশ কয়েকজন হাজির হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুষ্টিয়ার যুগ্ম আহ্বায়ক সায়াদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আবরার ফাহাদের নামে ওই পাঠাগারে নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা বসেন। উগ্রপন্থি কিছু মানুষ লাইব্রেরিটাকে ধ্বংস করতে বৈষমবিরোধী কমিটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। তারাই লাইব্রেরির সামনে স্লোগান দিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে।
সুনির্দিষ্ট করে কারও নাম বলতে না পারলেও সায়াদ ইসলাম বলেন, স্লোগান দেওয়ার সময় যারা ছিলেন তারা সবাই তাদেরই ছোট ভাই। তবে তাদের সঙ্গে কথা বলার একপর্যায়ে আট-দশটি অটোরিকশায় করে আরও অনেকে হাজির হয়ে হামলা চালায়।
আরও কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটির পদবঞ্চিতদের সঙ্গেই মূলত কমিটির সদস্যদের দ্বন্দ্ব রয়েছে। তাদের একজন আনভীর আলিফ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগারদের পুনর্বাসনের অভিযোগে সমবায় মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি শেষে সবাই চলে আসার যাওয়ার সময় পেছন থেকে হামলা করা হয়।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ও পদবঞ্চিতদের মধ্যে উত্তেজনার জেরে সংঘর্ষের কথা শুনেছি। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান বলেন, ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।