top ad image
top ad image
home iconarrow iconমাঠের রাজনীতি

নড়াইলে বোরোর ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, একর প্রতি লাভ ১৫ হাজার

নড়াইলে বোরোর ফলনে কৃষকের মুখে হাসি, একর প্রতি লাভ ১৫ হাজার
বোরো ধান তোলা শেষ নড়াইলের মাঠে মাঠে। এখন শেষের দিকে কিছু কৃষকের বাড়িতে চলছে মাড়াইয়ের কাজ। ছবি: রাজনীতি ডটকম

নড়াইলে বোরো মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ শেষের দিকে। উৎসবমুখর পরিবেশে গোলায় ধান ভরছেন কৃষকরা। হাটবাজারে বিক্রির পাশাপাশি বাড়ি থেকেও অনেকে বিক্রি করছেন কষ্টের ফসল। এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

গত কয়েকদিন নড়াইলের তিনটি উপজেলার ১০টি হাটসহ এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। কৃষকের ঘরে ঘরে দেখা গেছে আনন্দের ছোয়া।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল জেলায় এ বছর ৫০ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। সিংহভাগ জমিতে আবাদ হয়েছে ব্রি-২৮, ২৯, ৫০, ৫৫, ৫৮, ৬১, ৬৩, ৬৪, ৬৯, ৭৪, ৮১। এ ছাড়া হাবুবালাম, মিনিকেট, সুবর্ণলতা, হাইব্রিড হীরা, সাথী, তেজগোল্ড ইত্যাদি জাতের ধানও আবাদ হয়েছে জেলায়।

কৃষকরা বলছেন, হাইব্রিড, উফশি (উচ্চ ফলনশীল) ও স্থানীয় জাতের ধানে গড়ে প্রতি একরে ফলন হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ মণ। বর্তমান বাজারে এ জাতের ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৯৫০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত দরে। ধানের এমন দাম পেয়ে কৃষকরা বেজায় খুশি।

সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার জমির ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অনেক এলাকার কৃষক-কিষাণী তাদের ধান সেদ্ধ করতে দিয়েছেন। কেউ রোদে শুকাতে দিয়েছেন ধান। অনেকেই তাদের উৎপাদিত ফসল রোদে শুকিয়ে হাটে কিংবা গোলায় তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে প্রখর রোদ আর বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে ধান ঘরে তোলা ও বাজারজাত করার কাজ।

Narail Boro Paddy Production News Photo 23-04-2025 (1)

নড়াইলে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে দাম ভালো হওয়ায় কৃষক লাভের মুখ দেখেছেন বোরো আবাদ থেকে। ছবি: রাজনীতি ডটকম

অন্যদিকে হাটগুলোতে চলছে ক্রেতা-বিক্রেতাদের দর কষাকষি ও বেচাকেনা। যেসব কৃষকের ভাগ্যে সরকারি কার্ড জোটেনি, তারা তাদের ধান ভটভটি, নসিমন-করিমন, মিনিট্রাক ও ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছেন হাটে। আশানুরূপ দাম বললেই বিক্রি করে দিচ্ছেন. তা ক্রেতা পাইকারিই হোক আর খুচরাই হোক। ধানের চাহিদা বেশি হওয়ায় পাইকারি-খুচরা ক্রেতাদের মধ্যেও ভালো ধান পেলে দাম বেশি দিয়ে হলেও কিনে নেওয়ার প্রবণতা দেখা গেছে।

নড়াইল সদর উপজেলার শেখহাটি ইউনিয়নের হাতিয়ারা গ্রামের কৃষাণী কানন বালা ও সরস্বতী বিশ্বাস বলেন, আমরা কৃষক কার্ড পাইনি। সে জন্যি তুলারারমপুর হাটে ধান বেচতি (বিক্রি করতে) নিয়ে আইছি। দাম ভালো পাচ্ছি।

একই উপজেলার সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের খলিশাখালি গ্রামের গোরাচাদ বিশ্বাস, সীতারামপুর গ্রামের গনেশ বিশ্বাস, তুষার রায় ও অশোক রায়, কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের পেড়লী গ্রামের মোশের্দ মোল্লা, লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের আমিনুর রহমান প্রিন্সসহ কৃষকরা জানান, হাড়ভাঙা প্ররিশ্রম আর পরিচর্যায় এ বছর বোরো মৌসুমে তাদের উৎপাদিত ফসলের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। বতর্মানে ধানের দামও ভালো হ্ওয়ায় তারা বেজায় খুশি। কেননা খরচ বাদ দিয়ে তাদের একর প্রতি লাভ হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. জসিম উদ্দীন বলেন, চলতি মৌসুমে এ জেলায় বোরোর বেশ ভালো ফলন হয়েছে। বিগত যেকোনো সময়ের চেয়ে দামও ভালো পেয়ে লাভবান হচ্ছেন ধান চাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বোরোর চলতি মৌসুমে ধান আবাদ হয়েছে ৫০ হাজার ৮০ হেক্টর। ধান উৎপাদন হয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার ১৭ মেট্রিক টন। গত বছর আবাদ ছিল ৫০ হাজার ১৭০ হেক্টর। ধান উৎপাদন হয়েছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ৮২৬ মেট্রিক টন।

r1 ad
top ad image