top ad image
top ad image
home iconarrow iconমাঠের রাজনীতি

শুধু ফিঙ্গারপ্রিন্টে এনআইডি চান পর্দানশীন নারীরা

ছবি না তোলায় নাগরিকত্ব আটকে রাখা ইসি কর্মকর্তাদের বিচার দাবি

ছবি না তোলায় নাগরিকত্ব আটকে রাখা ইসি কর্মকর্তাদের বিচার দাবি

‘বেপর্দা হওয়ার গুনাহ থেকে বাঁচতে’ কেবল ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে ছবিমুক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি দেওয়ার দাবিতে রাজশাহীতে সমাবেশ করেছেন পর্দানশীন নারীরা। এ ছাড়া গত ১৬ বছরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যেসব কর্মকর্তা ছবি তোলায় এনআই না দিয়ে পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখেছেন, তাদের বিচারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।

পর্দানশীন নারীরা বলেন, একজন নারী ছবি তুললে দুটি গুনাহ হয়। একটি ছবি তোলার গুনাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুনাহ। আবার ওই ছবিটি পরে যতজন বেগানা পুরুষ দেখবে, বেপর্দা হওয়ার গুনাহ তত বাড়তেই থাকবে। এমনকি মৃত্যুর পরও ওই ছবির কারণে বেপর্দার গুনাহ জারি থাকবে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট ব্যবহার করে ছবিমুক্ত এনআইডি করলে নারীরা সেই গুনাহ থেকে বাঁচতে পারবেন।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মহিলা আনজুমানের রাজশাহী জেলা ও মহানগর মজলিসের ব্যানারে নগরীর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে কয়েক শ নারী অংশ নেন।

সমাবেশে নারীরা বলেন, কেবল পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার। গত ১৬ বছর ধরে অসংখ্য পর্দানশীন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বঞ্চিত। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। পর্দানশীন নারীরা এসব হেনস্তার অবসান চান। চেহারার বদলে তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবি তোলেন।

তারা আরও বলেন, রাষ্ট্রে মৌলিক অধিকার আটকে রেখে পর্দানশীন নারীদের গুনাহ করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তার ধর্মীয় বা দিনি অধিকার লঙ্ঘন। আবার একজন পর্দানশীন নারী তার চেহারা কাউকে দেখাতে চান না, এটা তার গোপনীয়তার অধিকার। ফলে জোর করে চেহারা দেখাতে বাধ্য করা তার গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন। তারা এর অবসান চান।

সমাবেশে নারীরা বলেন, মানুষের মুখের ছবি পরিবর্তনশীল। সময়ের ও অবস্থার সঙ্গে মানুষের চেহারা পরিবর্তন হয়। এ থেকে প্রমাণিত হয়, মুখচ্ছবি পরিচয় যাচাইয়ের নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নয়। অথচ সেই মুখচ্ছবির অজুহাতেই পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব বঞ্চিত করা হচ্ছে, শিক্ষা ক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বেপর্দা। এ ছাড়া ছবি ও চেহারা মিলিয়ে শনাক্তকরণ একটি দুর্নীতিবান্ধব পদ্ধতি। অন্যদিকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে শনাক্তকরণ দুর্নীতিরোধক পদ্ধতি। আধুনিক বিশ্ব চেহারা ও ছবি মিলিয়ে পরিচয় যাচাইয়ে সেকেলে পদ্ধতি বর্জন করে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশেও তা চালু করতে হবে।

সমাবেশে পর্দানশীন নারীরা তিনটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো—

  • গত ১৬ বছর যেসব সাবেক ইসি কর্মকর্তা পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে;
  • পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও গোপনীয়তার অধিকার অখুণ্ন রেখে অবিলম্বে এনআইডি ও শিক্ষা অধিকার দিতে হবে। সব ক্ষেত্রে পরিচয় শনাক্তে চেহারা ও ছবি মেলানোর পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করতে হবে; এবং
  • পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় কোনো পুরুষ নয়, বাধ্যতামূলকভাবে নারী সহকারী রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন পর্দানশীন নারীরা। পরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং জেলা ও বিভাগীয় শিক্ষা কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেন।

r1 ad
r1 ad
top ad image