৬ দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ, তীব্র যানজট

ছয় দফা দাবিতে রাজশাহী নগরের রেলগেট এলাকা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা ধরে তাদের এই অবরোধে নগরজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নগরবাসী।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো—
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধভাবে দেওয়া পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট থেকে বাতিল করা;
‘ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টর’ পদবি পরিবর্তন করে মামলার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুতসহ ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরের নিয়োগ সম্পূর্ণ বাতিল করা;
বিতর্কিত নিয়োগবিধি দ্রুত সংশোধন করা;
ডিপ্লোমা নেই ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করা ও এর পরিবর্তে উন্নত বিশ্বের মতো চার বছর মেয়াদি, মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করে একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে পরিচালনার ব্যবস্থা নেওয়া;
উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (দশম গ্রেড) পদে ডিপ্লোমা নেই ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও অনেক সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে তাদের নিচু পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা; এবং
কারিগরি খাত পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পদে কারিগরি শিক্ষা বহির্ভূত জনবল নিয়োগ অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে, কারিগরি শিক্ষায় চলমান বৈষম্য দূর করে দক্ষ জনসম্পদ গড়তে ‘কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।
পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বাড়াতে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁওয়ে নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ডুয়েটের অধীনে একাডেমিক কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে আগামী সেশন থেকেই শতভাগ আসনে ভর্তি নিশ্চিত করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম, বৈষম্য ও অদূরদর্শী নীতির কারণে এ খাতে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে এবং দেশের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবল তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। তাই তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিতে হবে। অন্যথায় আন্দোলন চলবে।
আরএমপির বোয়লিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধ থাকায় জনসাধারণের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। প্রথমে পুলিশ ও সেনাবাহিনী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সড়কের এক দিক খুলে দিতে বলে। এরপর সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ একটু কমে।
ওসি আরও বলেন, পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল ডিসি অফিসে গিয়ে আলোচনা করে। ডিসি মহোদয় তাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন স্থগিত করে।
এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।