বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, একে অপরকে বলছে ‘আ.লীগের দোসর’
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে কমপক্ষে আট জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে খলিফা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় তুমুল উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের দোসর বলে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে।
জানা গেছে, গঙ্গাচড়া উপজেলার মর্নেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু ও সদস্য সচিব আব্দুল মাবুদের নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটি ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনকে বেআইনি উল্লেখ করে কমিটি বাতিলের দাবিতে খলিফা বাজার এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক ও আব্দুস সোবহান ওরফে খোকা মেম্বারসহ পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- মর্নেয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তোজাম্মেল হক ও আব্দুস সোবহান ওরফে খোকা মেম্বার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি সাহাজুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রদল সভাপতি তোফাজ্জল হক ও আবু তাহের, সাবেক যুবদল সভাপতি আফসারুল ইসলাম, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক বাবুল মিয়া, যুবদল সদস্য রিয়াজুল, সাবেক সহ-সভাপতি সাহাজুল ইসলামসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাবেক নেতাকর্মীরা।
মানববন্ধনের আয়োজক পক্ষের নেতা তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি মর্নেয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের দুইবারের সভাপতি, উপজেলা ছাত্রদলের দুইবারের সহ-সভাপতি ছিলাম। কিন্তু বর্তমান মর্নেয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মিঠু ও সদস্য সচিব মাবুদ তারা আওয়ামী লীগের দোসর। গত ১৬ বছরে তারা বিএনপির নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ওপেনে নৌকা এবং লাঙলের ভোট করেছে। প্রকাশ্যই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পক্ষে ভোট চেয়েছে ও বক্তব্য দিয়েছে। যার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। কিন্তু তাদেরকেই আবার আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব করা হয়েছে। এই কমিটি স্থগিত করে প্রকৃত জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাসীদের ভেতরে যারা ত্যাগী, জুলুম নির্যাতনের শিকার এবং সাংগঠনিক দক্ষতা আছে তাদেরকে নিয়ে আমরা নতুন করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠনের জন্য দাবি জানাচ্ছি।
তিনি দাবি করেন, মানববন্ধন চলাকালে বিএনপি নেতা মিঠু ও মাবুদের অনুসারী নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পণ্ড করে দেয়। হামলায় আট নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে মর্নেয়া ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মীর কাশেম মিঠু হামলার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন। তার দাবি, যারা মানববন্ধন করেছে তারাই আওয়ামী লীগের দোসর, সে কারণেই তাদের বাধা দেওয়া হয়েছে। তারা বিএনপির মধ্যে একটা বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই মানববন্ধন করেছে।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি আল এমরান জানান, দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি আর ধাক্কাধাক্কির ঘটনা তিনি শুনেছেন। তবে কোনও পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু বলেন, মর্নেয়া ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি গঠনে অনিয়ম নিয়ে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করছি। মানববন্ধন নিয়ে যে ঘটনা ঘটেছে, সেটাও আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো।