দমনপীড়নে অংশ না নিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিলাম\n
ভলকার তুর্ক জানান, এমন বার্তাও দেওয়া হয় যে ছাত্র-জনতার ওপর দমনপীড়ন চালালে হয়তো জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সেনা পাঠানোর তালিকা থেকে বাংলাদেশকে বাদও দেওয়া হতে পারে।
আইএসপিআর বলছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মানবাধিকারের তাৎপর্য যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে এবং যেকোনো গঠনমূলক সমালোচনা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। তবে অধিকতর সঠিকতা ও স্বচ্ছতার উদ্দেশ্যে ভলকার তুর্কের মন্তব্যের কিছু বিষয়ে স্পষ্টিকরণ প্রয়োজন বলে মনে করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভলকার তুর্ক জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে সতর্ক করে দেওয়া নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, বিষয়ক কোনো ইঙ্গিত কিংবা বার্তা সম্পর্কে সেনাবাহিনী অবগত নয়। যদি এ সংক্রান্ত কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়ে থাকে, তবে তা তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারকে জানানো হয়ে থাকতে পারে, সেনাবাহিনীকে নয়।
আইএসপিআর বলছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা অনুযায়ী কাজ করে এবং সবসময় আইনের শাসন ও মানবাধিকার নীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে ভলকার তুর্কের মন্তব্য কিছু মহলের মাধ্যমে ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, যা সেনাবাহিনীর ভূমিকা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি এবং এর পেশাদারিত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।
সেনাবাহিনী জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কখনো কাজ করেনি দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিরপেক্ষতা ও সততার মহান ঐতিহ্য ধারণ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবসময় জনগণের পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অতীতের ঘটনাপ্রবাহ, বিশেষত ১৯৯১ সালের গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রমাণ করে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করেনি।
‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময়ও সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং কোনো পক্ষপাত বা বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই জননিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে,’— বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অর্জিত আয়ের একটি ক্ষুদ্র অংশ শান্তিরক্ষীরা পেয়ে থাকেন এবং এর সিংহভাগ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে, যার পরিমাণ গত ২৩ বছরে প্রায় ২৭ হাজার কোটি টাকা।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সুসম্পর্কের কথা তুলে ধরে আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই সম্পর্ককে গুরুত্বের সঙ্গে মূল্যায়ন করে এবং দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ। সেনাবাহিনীর ভূমিকা সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে উদ্বেগ বা বিভ্রান্তি ছড়ালে তা গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে ফলপ্রসূভাবে সমাধান করা সম্ভব বলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মনে করে।