বাংলাদেশে মেন্সট্রুয়াল কাপ কতটা সহজলভ্য?
বছর দেড়েক আগে মাসিকের সময় মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার শুরু করেন রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শান্তা শারমিন। প্রথমে কিছুটা সংশয় কাজ করলেও মাসের ওই সময়টায় এখন মেন্সট্রুয়াল কাপ ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করেন না তিনি। বলছেন, এটির তার জন্যে ‘জীবন বদলে দেয়া’ এক অভিজ্ঞতা।
শুধু শান্তাই নন, মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করা নারীদের মধ্যে বড় অংশের অভিজ্ঞতা এটি। ২০১৯ সালে মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেটে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মেন্সট্রুয়াল কাপ কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা একবার জানার পর থেকে ৭০ শতাংশ নারী এটি নিয়মিত ব্যবহার করছেন।
কিন্তু মেন্সট্রুয়াল কাপ আসলে কী? এটি কীভাবে ব্যবহার করতে হয়? আর বাংলাদেশের বাজারেই বা এই কাপ কতটা সহজলভ্য?
মেন্সট্রুয়াল কাপ কী?
নারীদের মাসিকের সময় ব্যবহারের একটি পদ্ধতি মেন্সট্রুয়াল কাপ। রাবার বা সিলিকনের মতো নরম এবং নমনীয় উপাদান দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। সাধারণত দেখতে ফানেলের মতো এই কাপের ওপরের অংশ খোলা এবং নিচের অংশ সরু থাকে।
এটি ব্যবহারের জন্য দেহের অভ্যন্তরীণ অংশ অর্থাৎ যোনিতে প্রবেশ করাতে হয়। মাসিকের সময় এতে রক্ত জমা হয়। নির্দিষ্ট সময় পরপর কাপ বের করে জমে থাকা রক্ত ফেলে দিতে হয়। ভালো করে পরিষ্কারের পর এই কাপ আবার ব্যবহার করা যায়।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের চেয়ে মেন্সট্রুয়াল কাপে বেশি পরিমাণে রক্ত জমা হয়। আর রক্ত ধুয়ে এই কাপ বারবার ব্যবহার করা যায় বলে অর্থনৈতিকভাবেও এটি লাভজনক।
মেন্সট্রুয়াল কাপের ইতিহাস
মেন্সট্রুয়াল কাপকে নতুন উদ্ভাবন মনে হলেও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ওয়েবএমডি’র তথ্যমতে, ১৮০০ সাল থেকেই এই কাপ রয়েছে। ১৮৬৭ সালে সর্বপ্রথম পেটেন্ট করা কাপটি ছিল রাবারের তৈরি।
তবে বাণিজ্যিকভাবে এটি প্রথম পেটেন্ট করা হয় ১৯৩৭ সালে। লিওনা চালমারস নামে একজন অ্যামেরিকান অভিনেত্রী সেই কাপের পেটেন্ট নিয়েছিলেন। সিনেমা জগতের রুটিনের সঙ্গে সামঞ্জস্যতার কথা চিন্তা করে নিজের জন্য তিনি এই কাপ বানান।
তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রাবারের সংকটের কারণে এটি উৎপাদন কঠিন হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে ১৯৬০ সালে নারীদের মাসিক-পণ্য উৎপাদনকারী বড় একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিলে আবারও ওই কাপ বানানোর চেষ্টা করেন মিজ লিওনা।
কিন্তু ভেতরে প্রবেশ করাতে হবে বলে সেসময়কার নারীরা এটি নিয়ে বিব্রতবোধ করেন এবং ব্যবহারে অনীহা দেখান। ফলে সেবারও এই কাপ আলোর মুখ দেখেনি।
নতুন শতাব্দীতে এসে আবারও মেন্সট্রুয়াল কাপ তৈরি শুরু হয়। তবে এবার রাবারের পরিবর্তে আরও নরম উপাদান সিলিকন দিয়ে বানানো হয় কাপ। ফলে ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয় এটি।
যোনির ভেতরে প্রবেশ করাতে হয় বলে ভেতরে ঢোকানোর সময় কতটা ব্যথা লাগবে, ঠিকমতো ঢোকানো যাবে কি না কিংবা কীভাবে বের করতে হবে- এসব নিয়ে শঙ্কা থাকে অনেকেরই। ফলে শুরুতেই এই কাপ ব্যবহারে এক ধরনের অনীহা কাজ করে।
তবে অনভ্যস্ততার কারণেই এমন সংশয় কাজ করে বলে মনে করেন স্বাস্থ্যবিদরা। মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো শরীরকে একেবারে শিথিল এবং চাপমুক্ত করা। এতে করে যোনিপথের পেশিগুলো আলগা হয়, ফলে কাপ ঢোকাতে বেগ পেতে হয় না।
মেন্সট্রুয়াল কাপ নমনীয় হওয়ায় এটি চাপ দিয়ে চ্যাপ্টা করা যায়। অন্যদিকে স্থিতিস্থাপক টিস্যু দিয়ে তৈরি হওয়ায় যোনি প্রসারিত হয়। ফলে মেন্সট্রুয়াল কাপ সহজেই যোনিতে প্রবেশ করানো যায়।
এই কাপ যোনিমুখ দিয়ে চ্যাপ্টা করে ঢোকানো হলেও ভেতরে প্রবেশের পর খুলে যায় এবং জরায়ু মুখে আটকে যায়। ফলে রক্ত সচরাচর লিক করে না। মেন্সট্রুয়াল কাপ ঢোকানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। যেমন, কাপটি চাপ দিয়ে একটি ভাঁজ করে ভেতরে ঢোকানো যায়।
মেন্সট্রুয়াল কাপ ঢোকানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়
এছাড়াও এক হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল ও মধ্যাঙ্গুল দিয়ে কাপটি ধরে অন্য হাতের বৃদ্ধাঙ্গুল কিংবা মধ্যাঙ্গুল দিয়ে মাঝ বরাবর চাপ দিলে কাপটি ভাঁজ হয়ে আরও সরু হয়ে যায়। এভাবেও কাপ যোনিতে প্রবেশ করানো যায়। এ নিয়ে ফেসবুক এবং ইউটিউবে বেশ কিছু ভিডিও আছে। কোনো সংশয় থাকলে সেগুলোও দেখে নেয়া যেতে পারে।
তবে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিচ্ছন্নতা বিধি মেনে চলা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে কাপ ব্যবহারের আগে গরম পানিতে সেদ্ধ করে ভালোমতো জীবাণুমুক্ত করা প্রয়োজন।
‘পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী, নরম, স্বাস্থ্যকর’
তিন বছর ধরে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করছেন জ্যোতি তনচংগ্যা। স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবহারের ফলে ইনফেকশন দেখা দেয়ায় বিকল্প কিছুর খোঁজ করছিলেন তিনি। এসময় অন্যান্য মাসিক-পণ্যের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে পড়ার পর কাপ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন।
“একটু সচেতন থাকলে জিনিসটা ব্যবহার করা সহজ। আর টেম্পন প্যাডের মতো। খরচও প্রায় একই। সেখানে একটা কাপ পাঁচ থেকে সাত বছর ব্যবহার করা যায়। ফলে আমি এটাই অর্ডার করে ব্যবহার শুরু করি,” বলেন মিজ তনচংগ্যা।
খরচের দিক থেকে মেন্সট্রুয়াল কাপের সাশ্রয়ী হবার বিষয়টি নিয়ে বলছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসক রেহেনা আক্তার।
“প্রতি মাসে মেয়েদের ছয় থেকে সাত দিন মাসিক হলে প্যাডের পেছনে অনেক টাকা খরচ পড়ে। কিন্তু একটি কাপ পাঁচ থেকে ১০ বছর ব্যবহার সম্ভব। ফলে এটা অনেক বেশি অর্থসাশ্রয়ী,” বলেন তিনি।
ইউরোপিয়ান কমিশনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, সমুদ্রে পাওয়া সর্বোচ্চ প্লাস্টিক পণ্যের মধ্যে মাসিক-পণ্যের অবস্থান পঞ্চম। অন্যান্য পণ্যগুলো যেখানে একবার ব্যবহারের পর ফেলে দিতে হয়, সেখানে মেন্সট্রুয়াল কাপ অনেক বার ব্যবহার করা যায়।
“মেন্সট্রুয়াল কাপ পরিবেশবান্ধব, সাশ্রয়ী, নরম এবং স্বাস্থ্যকর,” বলেন ডা. রেহেনা আক্তার। একইসঙ্গে মাসিকের সময় এই কাপের ব্যবহার আরামদায়ক এবং সুবিধাজনক। “প্যাড নিয়ে পানিতে নামা যায় না, কিন্তু কাপের ক্ষেত্রে তেমনটা হয় না,” বলছিলেন ব্যবহারকারী শান্তা শারমিন।
গবেষণা বলছে, জরায়ু মুখে লেগে থাকার কারণে অন্যান্য মাসিক-পণ্যের চেয়ে মেন্সট্রুয়াল কাপ থেকে রক্ত লিক করা বা গড়িয়ে পড়ার প্রবণতাও তুলনামূলক কম। আর প্যাড ব্যবহার করলে র্যাশ হওয়াসহ অন্যান্য যে ধরনের সমস্যা হয়, কাপের ক্ষেত্রে সে ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না।
এছাড়া মেন্সট্রুয়াল কাপ যোনির পিএইচ বা স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে এটি ব্যবহারে ইনফেকশন বা অন্য জটিলতার সুযোগ কম থাকে বলে জানান ডা. আক্তার।
মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সতর্কতা অনুসরণ প্রয়োজন
অসুবিধা ও সতর্কতা
অনভ্যস্ততার কারণে কাপ ভেতরে ঢোকানো এবং বের করার ক্ষেত্রে শুরুর দিকে অস্বস্তি বোধ হতে পারে। এজন্য সঠিক মাপমতো কাপ ব্যবহার জরুরি। বাজারে ছোটো, মাঝারি এবং বড়– এই তিন মাপের মেন্সট্রুয়াল কাপ পাওয়া যায় বলে জানান ডা. আক্তার।
এরমধ্যে ছোটো সাইজের মেন্সট্রুয়াল কাপে ১৬ মিলি লিটার পর্যন্ত রক্ত জমা হয়। ১৮ বছরের কমবয়সী কিশোরী এবং যারা কখনো যৌন সম্পর্কে জাড়াননি তাদের জন্য উপযোগী এই কাপ।
যৌন সম্পর্কে অভ্যস্ত কিন্তু এখনো সন্তান জন্ম দেননি কিংবা দিলেও তা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে হয়েছে, অর্থাৎ যোনিপথে সন্তান জন্ম দেননি এবং বয়স ৩০’র নিচে - এমন নারীদের জন্য মাঝারি সাইজের কাপ উপযুক্ত।
আর যোনিপথে সন্তান জন্ম দিয়েছে বা বয়স ৩০’র বেশি কিংবা মাসিকের সময় অনেক বেশি রক্ত যায় এমন নারীরা বড় মাপের মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে পারেন।
একটি বড় আকৃতির কাপে সর্বোচ্চ ২৬ মিলি লিটার পর্যন্ত রক্ত জমা হয় বলে জানান ডা. আক্তার। এছাড়াও নির্দিষ্ট সময় পরপর কাপ পরিষ্কার করতে হয় বলে অনেক সময় এটি ব্যবহার করা জটিল হতে পারে।
“লম্বা সময়ের জন্য দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে যদি পরিষ্কার টয়লেট না পাওয়া যায় তবে কাপ ব্যবহার করা কঠিন হয়ে যায়,” বলছিলেন একজন ব্যবহারকারী মিজ তনচংগ্যা।
মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। যেমন, ভালোভাবে কাপ পরিষ্কার করা। একই কাপ বারবার ব্যবহার করা হয় বলে খুব ভালোভাবে তা পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি।
সেক্ষেত্রে প্রতিবার ব্যবহারের আগে কাপটি গরম পানিতে পাঁচ থেকে সাত মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানোর পর এটি শুকিয়ে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। আর তা না করা হলে স্বাস্থ্য সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে।
“কাপ ঠিকভাবে পরিচ্ছন্ন করা না হলে টক্সিক শক সিনড্রম হতে পারে। এতে করে যোনির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতি হয়ে ইনফেকশন হবার শঙ্কা থাকে,” বলেন ডা. আক্তার।
এছাড়াও কাপ যদি যথাযথভাবে ব্যবহার না করা যায় তাহলে পেলভিক অঙ্গ প্রল্যাপস করার অর্থাৎ শ্রোণিতে থাকা ইউটেরাস, ব্লাডার ও রেকটামের মতো অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থান থেকে যোনিতে নেমে আসার সম্ভাবনা থাকে।
তবে “সঠিক মাপ এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে যথাযথভাবে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করা গেলে এটি ভালো একটি পদ্ধতি,” বলছিলেন এই চিকিৎসক।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মেন্সট্রুয়াল কাপ
একইসঙ্গে স্বাস্থ্যকর এবং অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হওয়ায় ‘পিরিয়ড পোভার্টি’ বা ‘মাসিক দারিদ্র্যতার সম্মুখীন হওয়া দরিদ্র দেশগুলোতে মেন্সট্রুয়াল কাপ একটি টেকসই সমাধান হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এই চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
দেশটির শহরের বস্তিতে থাকা নারীদের মাসিকের স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনা নিয়ে এ বছর এপ্রিলে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই জরিপে অংশ নেয়া নারীদের কেউই মেন্সট্রুয়াল কাপ কিংবা ট্যাম্পন সম্পর্কে আগে কখনো শোনেননি।
কেবল নিম্নবিত্ত না, সার্বিকভাবেই মাসিক নিয়ে বাংলাদেশে সচেতনতা খুবই কম। ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’ অনুযায়ী মাত্র ৪৩ শতাংশ কিশোরী প্যাড ব্যবহার করে। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই হার ২৯ শতাংশ।
সেই তুলনায় কাপের ব্যবহার অনেকটাই নতুন, আর এ নিয়ে সচেতনতাও সীমিত। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর অভিজাত এলাকার নির্দিষ্ট কিছু জায়গা বাদে স্থানীয় ফার্মেসিগুলোর মেন্সট্রুয়াল কাপ রাখা হয় না। অনেক দোকানি এই কাপ সম্পর্কে সচেতনও না। একই অভিজ্ঞতা ব্যবহারকারীদেরও।
“লোকাল মার্কেট, গুলশান আর পান্থপথের বড় ফার্মেসিতে আমি মেন্সট্রুয়াল কাপ খুঁজেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি। পরে ফেসবুকের একটি পেইজ থেকে এটা কিনেছি,” বলছিলেন মিজ শারমিন। বেশ কিছু অনলাইন পেইজে মেন্সট্রুয়াল কাপ বিক্রি করা হয়।
বাংলাদেশে শুরুর দিকে অনলাইনে মেন্সট্রুয়াল কাপ বিক্রেতাদের একজন নাহিদ দীপা। ২০১৮ সাল থেকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ‘মাম্বল’ নামের একটি পেইজে তিনি এই কাপ বিক্রি করছেন।
ভারত ও ডেনমার্ক থেকে এগুলো সংগ্রহ করেন তিনি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বিবিসি বাংলাকে তিনি জানান, আগের তুলনায় মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। “আগে ঢাকার বাইরে বিক্রি কম হলেও এখন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে প্রায় সমান তালে বিক্রি হচ্ছে,” বলেন তিনি।
একই রকম প্রতিক্রিয়ার কথা জানান ‘রূপের রহস্য’ নামের আরেটি অনলাইন পেইজের কর্ণধার শফিউল ইসলাম। তাদের পেইজে বিক্রি করা মেন্সট্রুয়াল কাপ আমদানি করা হয় চীন থেকে।
বাংলাদেশে ‘অতটা পরিচিত না হওয়ায়’ মাসে দেড়শ থেকে ২০০টি কাপ বিক্রি হয় বলে জানান তিনি। সিলিকন, মোটা-পাতলা এবং ব্যবহারের মেয়াদের ওপর নির্ভর করে এই দাম সাড়ে ৫৫০ থেকে ৯৫০ টাকা পর্যন্ত হয়, বলেন মি. ইসলাম।
আসল পণ্য চেনার উপায় কী?
অনলাইনে বিক্রি করা এসব মেন্সট্রুয়াল কাপের মধ্যে অনেক সময় সিলিকন ছাড়া প্লাস্টিক পণ্যও বিক্রি করা হয়। সেক্ষেত্রে আসল পণ্য চেনার উপায় কী? প্রায় ২০০টি প্রতিষ্ঠান মেন্সট্রুয়াল কাপ উৎপাদন করে বলে জানান মিজ দীপা।
“বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পাঁচটি ব্র্যান্ডের একটি – ‘ডিভা’। কিন্তু ‘ভিভা’ নামে একই রকম প্যাকেজের নকল প্রোডাক্ট বাজারে অনলাইনে বিক্রি হয়। এতে মানুষের বিভ্রান্ত হবার সুযোগ থাকে,” বলেন তিনি।
এসব ক্ষেত্রে কেনার আগে মেন্সট্রুয়াল কাপটি মেডিক্যাল গ্রেডের কি না তা বুঝতে এফডিএ’র ওয়েবসাইটে খোঁজ নেয়া যেতে পারে বলে জানান তিনি।