ম্যুরাল ভাঙার হুমকি, সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা জোরদার

দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের সামনের ম্যুরাল ভাঙার হুমকির খবরে আদালত এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে রেখেছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, সুপ্রিম কোর্টের সামনে ম্যুরাল ভাঙা হতে পারে— এমন তথ্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালতের প্রতিটি প্রবেশ মুখে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এপিসিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম। ভেতরে প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর তল্লাশি চালানো হচ্ছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আইনজীবীদেরও পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করে তবেই ঢুকতে দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এর আগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ছয় মাসের মাথায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথমবারের মতো ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেন শেথ হাসিনা। তার ওই বক্তব্য ঘিরে ছাত্র-জনতা উত্তাল হয়ে ওঠে। ওই রাতেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন দেয় ছাত্র-জনতা। এরপর এক্সক্যাভেটর, বুলডোজার, ক্রেন দিয়ে বাড়িটি সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
ওই রাত থেকে শুরু করে পরদিন রাত পর্যন্ত দেশের অন্তত ২৫টি জেলায় সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ নেতা আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। বেশির ভাগ বাড়িই বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া হামলা চালানো হয়েছে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও স্মৃতিস্তম্ভ ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে শেখ মুজিবুর রহমানের একটি স্মৃতিস্তম্ভ রয়েছে, যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি ১৯৭২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের উদ্বোধন করেছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর স্মৃতিস্তম্ভে থাকা শেখ মুজিবের ছবি বিকৃত করে দেওয়া হয়। পরে স্মৃতিস্তম্ভটি কাপড়ে মুড়িয়ে রাখা হয়।
৫ ফেব্রুয়ারির পর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত শেখ মুজিবের এই স্মৃতিস্তম্ভটিও ভেঙে দেওয়া হবে— এমন হুমকি রয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সে কারণেই শনিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।