মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষার্থীর পরনে ছিল কাফনের কাপড়। বাকিরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে মিছিলে অংশ নেন। ‘মামা থেকে মাস্টার, মামাবাড়ির আবদার’, ‘এক হও এক হও, পলিটেকনিক এক হও’, ‘ষড়যন্ত্রের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’— মিছিল থেকে এ রকম নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ছয় দফা দাবিতে সড়ক-মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। পরে তারা বৃহস্পতিবার সারা দেশে রেলপথ অবরোধের ঘোষণা দেন। পরে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক রয়েছে উল্লেখ করে তারা বৈঠকের আগ পর্যন্ত সে অবরোধ কর্মসূচি শিথিল ঘোষণা করেন।
পরে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের কারণে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী সি আর আবরার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেননি। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিবও ছিলেন ঢাকার বাইরে। এ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত সচিব (কারিগরি অনুবিভাগ) রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
\nবৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বৈঠকের পর শিক্ষার্থীরা জানান, আলোচনায় তারা সন্তুষ্ট নন। ফলে তারা আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। সন্ধ্যায় দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে মশাল মিছিল করেন তারা। রাতে ঘোষণা দেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারা দেশের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একযোগে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ মিছিল করবেন।
যেসব দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে নিয়োগের বিধান পরিবর্তন, উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করা, সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা ও কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে বৈষম্য দূর করা এবং পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ বাড়ানোসহ ছয় দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো—

শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ কাফনের কাপড় পরে মিছিল করেন। বাকিরা মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে মিছিলে অংশ নেন। ছবি: রাজনীতি ডটকম
- জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্টের মাধ্যমে বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টর পদবি পরিবর্তন ও মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল ও সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে;
- ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিলসহ উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম নিশ্চিত করে একাডেমিক কার্যক্রম পরবর্তী প্রবিধান থেকে পর্যায়ক্রমিকভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে;
- উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমানের (১০ম গ্রেড) পদ চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং ও মনোটেকনোলজি (সার্ভেয়িং) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্নস্থ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে;
- কারিগরি খাত পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনিভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এ পদগুলোতে অবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ এবং সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে;
- কারিগরি শিক্ষায় বৈষম্য ও দুরাবস্থা দূর করার পাশাপাশি দক্ষ জনসম্পদ তৈরিতে ‘কারিগরি ও উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয়’ নামে স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে; এবং
- পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চার ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের অধীন একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
',tags:[{name:"শিক্ষা",slug:"education",id:88,tagtitle:"",tagdescriptions:"",image:null,meta_title:"",meta_descriptions:""}],news_slug:"prox8ycjxt",story_type:"Story",watermark:null}}},video:{},photo:{},home:{loading:"IDLE",collections:[],error:null},section:{},tag:{},author:{}}