top ad image
top ad image
home iconarrow iconখবরাখবর

ওয়ানডেকে বিদায় মুশফিকের

ওয়ানডেকে বিদায় মুশফিকের
মুশফিকুর রহিম। ফাইল ছবি

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ব্যর্থতার পর ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের মিডল অর্ডারের দায়িত্ব সামলে আসা মুশফিকুর রহিম।

বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১১টা ১২ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ২৭৪ ম্যাচ ও ৭ হাজার ৭৯৫ রানে থামল মুশফিকের ওয়ানডে ক্যারিয়ার।

ওয়ানডেকে বিদায় ঘোষণা করা স্ট্যাটাসে সবাইকে সালাম জানিয়ে মুশফিক লিখেছেন, আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে আমি অবসর ঘোষণা করছি। সবকিছুর জন্য স্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ। আমাদের অর্জনগুলো বৈশ্বিক পাল্লায় সীমিত হতে পারে, কিন্তু একটি বিষয় নিশ্চিত: যখনই দেশের জন্য মাঠে নেমেছি, আমার নিবেদন ও নিষ্ঠার শতভাগেরও বেশি দিয়েছি।

মুশফিক লিখেছেন, গত কয়েকদিন আমার জন্য ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এবং আমি এ উপলব্ধিতে উপনীত হয়েছি যে এটিই আমার নিয়তি।

কোরআন শরিফের সুরা আল-ইমরানের ২৬ নম্বর আয়াতের একাংশে বলা হয়েছে, ‘আপনি (আল্লাহ) যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন এবং যাকে ইচ্ছা লাঞ্ছিত করেন।’ মুশফিক এই অংশটুকু উদ্ধৃত করে লিখেছেন, মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন এবং সবাইকে সঠিক বিশ্বাসের পথে পরিচালিত করুন।

সবশেষে পরিবার, বন্ধু ও ভক্তদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুশফিক। লিখেছেন, তাদের জন্যই তিনি ১৯ বছর ধরে ক্রিকেট খেলে আসছেন।

Musjhfiqur-Rahim-File-Photo-05-03-2025

ওয়ানডেতে অনেক রঙিন মুহূর্তের জন্ম দেওয়া মুশফিকের বিদায় অনেকটাই বিবর্ণ। ফাইল ছবি

ওয়ানডেতে ২৭৪ ম্যাচে ২৫৬ ইনিংস খেলে মুশফিকুর রহিমের সংগ্রহ ৩৬ দশমিক ৪২ গড়ে ৭ হাজার ৭৯৫ রান। ওয়ানডেতে ৯টি শতকের পাশাপাশি ৪৯টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন তিনি। ম্যাচে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ১৪৪ রান। স্ট্রাইক রেট ৭৯ দশমিক ৭০। উইকেটরক্ষক ও ফিল্ডার হিসেবে নিয়েছেন ২৪৩টি ক্যাচ। উইকেটরক্ষক হিসেবে স্টাম্পিং করেছেন ৫৬টি।

দেশের পক্ষে ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান মুশফিকের। এই তালিকায় তার সামনে রয়েছেন কেবল তামিম ইকবাল। তার সংগ্রহ ৮ হাজার ৩৫৭ রান।

কেবল সর্বোচ্চ রান নয়, ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ শতক আর অর্ধশতকের তালিকাতেও মুশফিক রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। তামিমের সর্বোচ্চ ১৪টি শতকের পরই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯টি শতক মুশফিকের। তার সমানসংখ্যক শতক অবশ্য রয়েছে সাকিব আল হাসানেরও।

ওয়ানডেতে মুশফিকের অর্ধশত রানের ইনিংস ৪৯টি। দেশের পক্ষে তার চেয়ে বেশি অর্ধশত রানের ইনিংস কেবল রয়েছে তামিম ও সাকিবের, দুজনেরই ৫৬টি করে। ফলে তারা দুজন যৌথভাবে শীর্ষে থাকায় মুশফিক রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে।

২০০৬ সালের ৬ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে অভিষেক মুশফিকের, জিম্বাবুয়ের হারারেতে। দ্বিতীয় ম্যাচও ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে, একই বছরের ৮ ডিসেম্বর মিরপুরে। প্রথম দুই ম্যাচের একটিতেও ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি তাকে।

একই বছরের ৯ ডিসেম্বর তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমে প্রথম ব্যাটিংয়ের সুযোগ পান মুশফিক। সে দিন ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯ বলে ১৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। নবম ম্যাচে দেখা পান প্রথম অর্ধশত রানের ইনিংসের, প্রতিপক্ষ সেই জিম্বাবুয়ে। শতকের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৯৬ ম্যাচ, এবারও প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে।

উইকেটরক্ষক হিসেবে দলে ঢুকলেও একপর্যায়ে দেশের মিডল অর্ডারের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন মুশফিক। ক্রিকেট ভক্তদের কাছে জিতে নেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডেবল’ খেতাব। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে তার ফর্ম ছিল অনেকটাই পড়তির দিকে। শেষ ১৫ ম্যাচে অর্ধশত রানের ইনিংস মাত্র একটি।

সবশেষ এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শেষ যে দুটি ইনিংস খেলার সুযোগ পেয়েছেন, তার একটিতে ২ রান করলেও আরেক ইনিংসে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নিতে হয়েছে। তাকে ওয়ানডে ক্যারিয়ারেই তার শেষ তিনটি ইনিংস দাঁড়াল— ১, ০, ২। ওয়ানডেতে অনেক রঙিন মুহূর্তের জন্ম দেওয়া মুশফিকের বিদায় তাই অনেকটাই বিবর্ণ।

r1 ad
r1 ad
top ad image